Type Here to Get Search Results !

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আগরতলায় পালিত রথযাত্রা উৎসব


তন্ময় বনিক,আগরতলাঃ
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অগণিত ভক্তপ্রাণ মানুষ সামিল হলেন রথযাত্রা উৎসবে। প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও দেবী সুভদ্রা রথে উপবিষ্ট হয়ে গেলেন মাসীর বাড়ি অর্থাৎ গুন্ডিচা মন্দিরে। 
আগরতলায় জগন্নাথ মন্দিরের রথের পাশাপাশি ইসকন মন্দিরের রথ ঘিরেও ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায়। 
স্নানযাত্রার এক পক্ষকাল পর শনিবার(১৪জুলাই) আসে সেই বিশেষ দিন জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। এদিন সকাল থেকেই জগন্নাথ মন্দিরে ভক্তদের আগমন শুরু হয়। মন্দিরে চলে বিশেষ পূজার্চনা। বেলা যত বাড়তে থাকে পুণ্যার্থীদের ভীড়ও ততোই বাড়তে থাকে। বেলা ১টা থেকে উপস্থিত ভক্তবৃন্দের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। প্রায় দশ হাজার লোক প্রসাদ গ্রহণ করেন বলে জানান মঠাধ্যক্ষ ভক্তিকমল বৈষ্ণব। প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার দ্বিপ্রহরে নিদ্রার পর বিকেলে বিগ্রহ রথে তোলা হয়। 

তখন তিল ধরার জায়গা ছিলোনা জগন্নাথ মন্দিরের সামনে। বিকেল প্রায় ৫টা নাগাদ রথের দড়িতে টান পড়ে। 
আরক্ষা প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রথ ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়। মিছিলে সামিল হন অগণিত ভক্তপ্রাণ মানুষ। শিশু থেকে প্রবীণ সব বয়েসীরাই রথের উৎসবে গা ভাসান। রাজপথ পরিক্রমা করে জগন্নাথ বাড়ির রথ পুনরায় মন্দিরের সামনেই ফিরে আসে। প্রভু জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে রাখা হয় গুন্ডিচা মন্দির নামে অন্য একটি কক্ষে। এদিকে জগন্নাথ মন্দিরে চলতে থাকে বিভিন্ন ধর্মীয় গান ও সংকীর্তন। রাত ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মীয় উপাচার চলে। রথযাত্রাকে ঘিরে জগন্নাথ মন্দিরের সামনে রাস্তায় মেলাও বসে। মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়ের মধ্যে ছিঁচকে চুরি ছিনতাই এর ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তবে আইনী ঝামেলা এড়াতে অনেকেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি। এদিকে মঠ চৌমুহনীস্থিত ইসকন মন্দিরের রথ ঘিরেও ব্যাপক সাড়া পরিলক্ষিত হয়। দুপুরে ইসকন মন্দিরের সামনে রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। 
এছাড়া অনুষ্ঠানে ছিলেন বিধানসভার মুখ্যসচেতক কল্যাণী রায়। ছিলেন ইসকনের আগরতলা শাখার যুগ্ম অধ্যক্ষ শ্রীপাদ শ্রীদাস গোবিন্দ দাস ব্রহ্মচারী। 
ইসকন মন্দির থেকে ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার তিনটি পৃথক পৃথক সুদৃশ্য রথ আগরতলা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে ওরিয়েন্ট চৌমুহনী সংলগ্ন গুরুজি কনফারেন্স হলের সামনে আসে। 
সেখানে অস্থায়ীভাবে নির্মিত গুন্ডিচা মন্দিরে বিগ্রহ রাখা হয়। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় নানারকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ইসকন মন্দিরের এই অনুষ্ঠান ঘিরে ভক্তবৃন্দের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গিয়েছে। এছাড়াও রাজন্য আমল থেকে চলে আসা রাজবাড়ির রথও রীতি রেওয়াজ মেনে বের হয়। তবে কালের বিবর্তনে এই রথের জৌলুস অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছে। ঐতিহ্য ও পরম্পরা মেনে বেশকিছু ছোটখাটো মন্দির থেকেও জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করা হয়। সব মিলিয়ে বলা যায় আগরতলা রথযাত্রা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। বিভিন্ন মহকুমা শহরগুলিতেও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রথযাত্রা উৎসবের আয়োজন করা হয়। 

ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ
১৪ই জুলাই ২০১৮ইং     





           


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.