করবোই জয়:দৃঢ় প্রত্যয়
বলো কেমন আছো তুমি ,কাটছে কেমন?
সদাই ব্যস্ত আমরা সবাই গৃহবন্দী আজ,
অগত্যা দিন কাটাচ্ছি কি হয় কি হয় উদ্বেগে!
ভরা চাপের মার্চ মাসে কিছুটা আচমকা ছুটিতে
তুমিও নিশ্চয়ই বোর হয়েছ বুঝছি!
ভীষন চিন্তায় মরছি এটা ভেবে যে,
একদিন দেশে বনধে কি পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি!
কতটা বাধ্য হয়েছে বলেই না ট্রেন,বাস,উড়ান,
স্কুল-কলেজ,প্রতিষ্ঠান কারখানা সর্বত্র লকডাউন
রাখতে বাধ্য হয়েছে দায়িত্বশীল সরকার।
কতখানি চাপে চিন্তামগ্ন বিশ্ব দুনিয়ার তাবড়
শক্তিধর দেশের রাষ্ট্র নায়কেরা,
মাথা নত করতে না চাওয়া বিজ্ঞান আপ্রাণ
চেষ্টায় মগ্ন মারণ রোগের প্রকোপ কমাতে।
একের পর এক স্কুল-অফিস নার্সিংহোম এমনকি
ট্রেনের কামরা ব্যবহৃত হচ্ছে রোগীদের শুশ্রূষায়!
ভেঙে পড়া মনোবল চাঙ্গা করতে নানা পদক্ষেপ
সমালোচিত হলেও আতঙ্ক না ছড়ায়
জনগণের মধ্যে এটাও দেখা সত্যি দরকার।
এই দেখেছো কতখানি প্রভাবিত হয়ে গেছি,
ফোনে কথার মাঝে খেই হারিয়ে উদাস হচ্ছি।
তোমার ফেসবুক স্ট্যাটাসেও নতুন রান্না-রেসিপি!
সে তো কি করবে গৃহবন্দি সকলেই কিছুনা কিছু
কাজে মেতে নিজেদের উজ্জীবিত রাখছে।
বাড়িতে রকমারি নানা রান্না সবারই কমবেশি হচ্ছে আমাদেরও কিন্তু দেশের দুর্দিনে এভাবে
রান্না স্ট্যাটাস দেখানো মনে হয় শোভনীয় নয়।
আমাদের বাড়ির সামনে যে টোটো স্ট্যান্ড আছে
এতগুলো দিন সামান্য উপার্জন টুকু বন্ধেও যেটুকু
পুঁজি তা দিয়ে ও বাড়ি বাড়ি চালু-ডাল সংগ্রহে
ফুটপাথের অসহায়,ঝুপড়ির ভিখারি পরিবার সহ
অভুক্ত সারমেয়দেরও পাত পেরে ওরা খাওয়াচ্ছে,
এই উদ্যোগে সামিল হয়ে এক দারুন চিত্তশুদ্ধি।
কাল তোমার সহধর্মিণীর স্পেশাল ডিস-সেলফি
দেখে খুব মনে পড়ছিল আচ্ছা তোমাদের দশ তলা
আবাসনের বারান্দা থেকে দেখতে পাওয়া নিচে
ঠিকাদার কর্মীদের অধীন যে পরিযায়ী শ্রমিকদের
ঝুপড়ি,অস্বাস্থ্যকর মহল্লা,সেগুলো কেমন আছে?
মনে পড়ে হাড় জিরজিরে ঘুরে বেড়ানো ল্যংটা
বাচ্চাগুলো সব মহল্লা জুড়ে কেঁদে খেলে বেড়ায়!
দূর থেকে ভারী কয়েন,খাবার প্যাকেট রুটি ছুঁড়লে
ওরা যদি জানতে পারে খুব খুশি হবে জানি, কিন্তু
কেউ ছুঁড়বেই না কারণ এসব কাজের ভিডিও,ছবি না পেয়ে প্রচার করা তো হবে না!
ভারতের সব শহরের মত পাল্লা দিয়ে এখানেও
মানুষ ,ভয়-আতঙ্ক কাটিয়ে মেতে উঠেছিল
অন্ধকার আলোর লুকোচুরিতে কিন্তু তা বলে
এত তুবড়ি-পটকা ফাটবে কেউই ভাবি নি!
কিছু বললেও জুটবে বিরোধী রাজনীতি তকমা!
এটা কিন্তু বাস্তব যতই ঐক্যের বার্তা বলি না কেন
অন্য অসুস্থতায় বাড়িতে কেউ মারা গেলে
শ্মশানে মৃতদেহ নিয়ে যাবার লোকের আকাল!
তবে কিসের বড়াই,মানুষের একতা বলো?
এ যেন অনেকটা ঠান্ডা শরবতে চুমুক দিয়ে
সর্বহারাদের কষ্ট উপলব্ধি করে ভাষণের নমুনা!
এখনো লক ডাউনের বেশ কিছুদিন বাকি !
আদৌ কবে যে সব স্বাভাবিক হবে কেউ জানিনা!
পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু হার বৃদ্ধি পাচ্ছে!
সবাই তোমরা নিজেদের খেয়াল রেখো,
হিংসা-শোনাবার উদ্দেশ্য নিয়ে বললাম ভেবো না।
এমন অনেক কিছু নজির দেখতে পাব সে নিয়ে
বিচলিত হয় না মন মোটেও।সাবধানে থেকো।
সামান্য ক্ষুদ্র প্রয়াসে আমাদের জিততে হবেই।
রাণা চ্যাটার্জী, বর্ধমান
১০ই এপ্রিল ২০২০
আমরা জিতবই
উত্তরমুছুন