আবু আলী, ঢাকা ।।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভিত রচিত হয়েছিল ১৯৭১ সালে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সরকার ও জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থনের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের জনগণ সেসময়ে দেওয়া ভারতের সমর্থন ও সাহায্যের কথা আজও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। সেই সঙ্গে এ কথাও ঠিক যে মুক্তিযুদ্ধের মহান দিনগুলোতে বাংলাদেশের আপামর জনগণ যে চেতনা ও দৃঢ়তা নিয়ে পাকিস্তানের সামরিক অভিযানকে পরাস্ত করে এবং অপরিসীম আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল, তার মধ্য দিয়ে জাতি হিসেবে আমাদের মধ্যে তৈরি হয়েছিল এক কঠিন আত্মপ্রত্যয় ও আত্মপরিচয়। তৎকালীন বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ এবং সেই সঙ্গে ভারতের সরকার ও জনগণের মধ্যে চিন্তা ও কর্মের যে গভীর সাযুজ্য তৈরি হয়েছিল, সেই নিরিখে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কয়েকটি বিষয় দৃশ্যমান ছিল। অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও সম্পদ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও স্বাধীনতা-উত্তরকালে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও দৃষ্টিভঙ্গিগত ভিন্নতা একই সঙ্গে পরিলক্ষিত হয়। দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরে এ সম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে।
কোভিড-১৯ এর প্রভাবে পুরো বিশ্ব যখন স্থবির। ঠিক সেই সময় ভারত এগিয়ে এসেছে বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশের কাছে। দিয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জমাদিও। এতে উভয় দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের উন্নয়ন ঘটেছে। বাংলাদেশ অনেক পণ্যেই ভারতের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলোও ভারত থেকে আসে।
করোনাভাইরাসের প্রভাব প্রতিরোধ করতে বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে পার্সেল ট্রেন সেবা চালু করেছে। যার প্রথম চালানে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে শুকনো মরিচ বহনকারী একটি ট্রেন বাংলাদেশের বেনাপোলে এসে পৌঁছেছে। সোমবার ঢাকার ভারতীয় মিশন থেকে এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়, ‘ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে শুকনো মরিচ বহনকারী প্রথম পার্সেল ট্রেনটি বাংলাদেশের বেনাপোলে এসে পৌঁছেছে। ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩৮৪ টন বিশেষ পার্সেল ট্রেন পাঠিয়েছে।’
‘রেলপথে পরিবহণ ব্যয় সড়ক পরিবহণের তুলনায় সাশ্রয়ী’ উল্লেখ করে বার্তায় বলা হয়, ‘বিশেষ পার্সেল এক্সপ্রেসটি (এসপিই) ভারতের গুন্টুরের রেড্ডিপালেম থেকে বাংলাদেশের বেনাপোল পর্যন্ত ১ হাজার ৩৭২ কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করে।’
বার্তায় আরও বলা হয়, ‘২০২০ সালের মার্চ থেকে কোভিড-১৯ সম্পর্কিত বিধি নিষেধের কারণে দু'দেশের মধ্যে পরিবহণ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে তার প্রভাব পড়ে। এ কারণে ভারতীয় হাই কমিশন সরবরাহ শৃঙ্খলার এই বিঘ্ন হ্রাস করতে বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষকে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পার্সেল ট্রেন পরিষেবা সহজতর করার প্রস্তাব দিয়েছিল। বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষ তাতে সম্মতি জানানোর পরে প্রথম পার্সেল ট্রেন সেবার জন্য পণ্য একত্রিত করা হয়।’
১৩ই জুলাই ২০২০
১৩ই জুলাই ২০২০