Type Here to Get Search Results !

বসুধৈব কুটুম্বকম্ " ......... উত্তর চব্বিশ পরগণা থেকে দেবাশীষ মজুমদার


 ধরা যাক আগামীকাল পৃথিবীর সব দেশের প্রধানরা একসাথে একটা আলোচনাতে বসবেন।সেখানে তারা বর্তমান বিষয়ে একটি যুগান্তকারী নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন।যার মূল বিষয় হিসাবে থাকবে সব দেশের নাগরিকদের আত্মমর্যাদা ও জীবনযাএার মান পরিবর্তন।যার যোগ্যতার মাপকাঠি হবে একমাত্র ব্যক্তিত্ব।

সেই হিসাবে পরিবর্তন ঘটবে সমস্ত নিয়মকানুন ও কার্যকলাপ এর মত গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের।তারই সূএ ধরে পরিবর্তন দেখা দেবে পেশাদারী জায়গাগুলোতে।তারই কিছু নমুনা নীচে আলোচনা করা হলঃ

যে মানুষটা সারাদিন রোদ্র মাখা পরিবেশ মাঠে চাষ করা,ঘর্মক্লান্ত শরীরে ভেজা জামা পড়া সেই কৃষক এবার মাঠ বাদ দিয়ে অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসা পরিষেবা দেবে।জটিল সব অপারেশন করবে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে।

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষকে লজ্জা নিবারনের জন্য যে মানুষটি সামান্য হিসাব বুঝে পোশাক পরিচ্ছদ বানিয়ে দিচ্ছে সহজে অল্প কিছু মজুরীতে সেই সমাজের দৃষ্টিতে তাতি হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়া মানুষটি এবার তার পুরানো পেশা ভুলে এবার নিজেকে ব্যস্ত রাখবেন শিশুদের শিক্ষা প্রদানের কাজে।

যে মানুষটা সকল মানুষের জন্য,নিত্য প্রয়োজনীয় ও জীবনের ব্যবহার্য বিক্রি করে।অন্যের মুখে ও জীবনে তার পেশাকে ঝা চকচকে বিল্ডিং এ নিয়োজিত করেন ।শিক্ষিত মানুষের ভাষাতে যাকে শপিং মল বলা হয়।সেই ছেলেটি শপিং মলের ডিউটি বাদ দিয়ে,এবার থেকে সরকারী নির্দেশিকা অনুযায়ী মানুষের জন্য কাজ করবে।তবে পেশাটা সরকারী উচ্চপদস্থ অফিসার হিসাবে কিন্তু।

ট্রেনে-বাসে, রাস্তাতে সমাজে হকারি তকমা পাওয়া মানুষটাও চায় মাথা উচু করে চলতে।তাই সে এবার থেকে গবেষণা করতে চায়।কী আবিষ্কার করলে সকল মানুষের কাজ করতে সহজলভ্য হয় সেইসব বিষয়ের খোঁজে।

এই ভাবনাচিন্তা গুলো তো সব কল্পনার বিষয়মাএ।আমরা যদি সবাই একটু মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ভাববার চেষ্টা করি।তাহলে আমরা বিবেকের কাছে হেরে যাবো নিশ্চয়ই।

কারণ যে মানুষটা চাষাবাদ করে আমাদের মুখে অন্ন তুলে দেন।তাদের জীবনযাএা ও পরিবার এর অর্থনৈতিক অবস্থা ভীষনভাবে অসহায়।তারা তাদের প্রাপ্য মজুরী থেকে অনেক কম টাকা রোজগার করেন।ন্যায্য মূল্য অর্জনে ব্যর্থ।আবার যে মানুষটা লজ্জা নিবারনের কাজটি করে থাকেন।তারা কোন এক সংকটজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে বেচে আছেন।মে দিবস আসলেই আমাদের মনে পড়ে শ্রমিক দিবসের কথা।কত স্লোগান,কত প্রতিবাদ,কত মিছিল দেখি শ্রমিক স্বার্থে।কিন্তু আমার দেশের বেশিরভাগ বেসরকারী সংস্থাগুলিতে কর্মচারীদের আট ঘণ্টার বেশি কাজ করানো হয়।তার সাথে ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়।সেই সমস্ত সংস্থার কর্মচারীরা কোম্পানীর নিদের্শিকা মেনে নিতে বাধ্য হন।তারা নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ভুলে অন্যের সেবাতে নিয়োজিত থাকেন দিবারাত্রি।আমরা কর্মসংস্থানে যাবার পথে কিংবা ঘুরতে যাওয়ার সময় রাস্তাঘাটে-ট্রেনে-বাসে এক শ্রেনীর মানুষকে দেখি।তারা আমাদের মুখের স্বাদ কিংবা শরীরের ক্লান্তি দূর করে দেন। তারা ফেরী করেন আমাদের কাছে এসে,আর আমরা হাসিমুখে কিংবা দর কষাকষিতে কিনে ফেলি নিজের প্রয়োজনে।

তবে আশ্চর্যের নয় বাস্তবের বিষয় হল সবার একটা আত্মসম্মান,সামাজিক স্টাট্যাস আছে। তাই কোন পেশাকে ও যোগ্যতাকে ছোট করা উচিত নয়।এই করোনা ভাইরাসের সংকটজনক সময়ে একটি দেশ অপর দেশের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব শুধুমাত্র নয় সহমর্মী হতে হবে ।ভ্যাকসিন যে রাষ্ট্রই আবিষ্কার করুক না কেন।সব মতামত,সব হিসাব,সব পুরানো সমস্যা ভুলে যথাযথ ও সঠিক ভাবে পরীক্ষা করে সারা বিশ্বের সকল মানুষের কাছে সহজলভ্য ও স্বচ্ছভাবে প্রয়োগ করতে পারলেই মানবতার নবজাগরন ঘটবে বিশ্বজুড়ে এটাই বিশ্বাস করি।


দেবাশীষ মজুমদার

উত্তর চব্বিশ পরগণা

৬ই সেপ্টেম্বর ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.