১১ অক্টোবর শুক্রবার বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘর প্রধান মিলনায়তন ঢাকায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে প্রকাশিত বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেন এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাকের সভাপতিত্বে স্মারক উন্মোচন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। এ সময় আগরতলা থেকে আগত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থ সম্পাদক ড. দেবব্রত দেবরায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ড. কামাল আবু নাসের চৌধুরী, সম্মানিত অতিথি হিসেবে কবি অসীম সাহা, ঢাকা বাংলাদেশ, ড. আশীষ কুমার বৈদ্য,ভারত, নিয়তি রায় বর্মণ প্রাবন্ধিক, ভারত, রবীন্দ্র পরিষদের সম্পাদক, কবি কল্যাণ গুপ্ত, ভারত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্মরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ত্রিপুরাবাসী ছিল পরম আশ্রয়স্থল। এক সময় স্মরণার্থী আর ত্রিপুরার জনগণ সমান হয়ে গিয়েছিল। তখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সেক্ষেত্রে ত্রিপুরার সরকার স্মরণার্থীদের কল্যাণে ত্রিপুরাবাসীর ওপর কর আরোপ করেছিলেন। অনেকে তাদের বাড়ীর এক অংশ ছেড়ে দিয়েছিলেন। এভাবে গড়ে ওঠেছিল বাংলাদেশ ত্রিপুরার সম্পর্ক। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে ত্রিপুরাবাসী। স্বাধীনতার এতোদিন পরেও ভালোবাসার বন্ধন অটুট রেখেছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে। আসলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যাতে চিরস্থায়ী হয় সেটিই আমার কামনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে আন্তর্জাতিক স্মারকগ্রন্থের সম্পাদক ড. দেবব্রত দেবরায় বলেন, ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের ভাষা ও সংস্কৃতি একই। রাজনৈতিক কারণে দুটি দেশ আলাদা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ হাসলে আমরা হাসি, বাংলাদেশ কাঁদলে আমরা কাঁদি। তিনি আরও বলেন, আগামী দুই বছর সামগ্র বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন করবে। আমরা ভারবাসীও আগামী দুইবছর বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে আমারা আগরতলার একটি কর্মসূচি পালন করেছি। আর বাংলাদেশে আজ দ্বিতীয় কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। আগামী ২২ ডিসেম্বর ভারতের যাবদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের তৃতীয় কর্মসূচি পালিত হবে। এছাড়া ১৪ মার্চ দিল্লীতে চত’র্থ কর্মসূচি পালিত হবে। এছাড়া আসাম, শিলচর, ছত্রিশগড়েও এ কর্মসূচি পালিত হবে। রাজনৈতিক কারণে ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিভক্তি। দেশ স্বাধীনের আগে দুই ত্রিপুরা একই ছিল। পাহাড়ী অঞ্চল বর্তমান ত্রিপুরা আর সমতল অঞ্চল বাংলাদেশের কুমিল্লা, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মধ্যে পরেছে। কিন্তু এখনও আমাদের ভাষা, সংষ্কৃতি এবং সাহিত্য একই রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সময় ত্রিপুরা রয়েছে অসামান্য অবদান। সেই অবদানের কথা এখন স্মরণ করে বাংলাদেশ। একইভাবে ত্রিপুরা রাজ্যও সেই সম্পর্ক ধরে রেখেছে। দেশ স্বাধীনের দীর্ঘ সময় পর স্বাধীনতার মহান নায়ক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনে বিরাট উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরাবাসী। এ উপলক্ষ্যে প্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ স্মারকগ্রন্থ।
১২ই অক্টোবর ২০১৯