প্রভাষ চৌধুরী, ঢাকা ব্যুরো এডিটর:
একদিনের ব্যবধানে ফরিদপুরের সদরপুরে আলুর কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কেজিপ্রতি ১০/১৫ টাকা দাম বাড়ানোর পায়তারা রুখে দিয়েছেন ইউএনও পূরবী গোলদার। এ সময় আলুভর্তি একটি ট্রাক আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার(২৬ নভেম্বর) দিনগত রাতে উপজেলার সাড়ে সাতরশি তেলের পাম্পের সামনে থেকে ট্রাকটি আটক করা হয়।
প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানান, সকাল থেকে সাড়ে সাতরশি তেলের পাম্পের সামনে দুটি আলুর ট্রাক দেখা যায়। তখন আমাদের মনে সন্দেহ হলো। বাজারে গিয়ে দেখি ৩০ টাকার আলু হঠাৎ করে ৪০ টাকা।তখন আমরা মনে করলাম ব্যাপারটা ইউএনও স্যারকে জানানো দরকার।স্যারকে ফোন করার তিন মিনিটের মাথায় স্যার চলে আসলেন।স্যার এসে ট্রাকের সামনে গাড়িটা দাঁড় করালেন। তখন আমরা সবাই আসলাম। স্যার এসে ড্রাইভারকে পাননি, হেলপারকে পেয়েছে। হেলপারকে স্যার রিকয়েস্ট করছে, তুমি গাড়িটা থানায় দিয়ে আসো। তোমাকে আমি কিছু বলবো না।ও(হেলপার)গড়িমসি করছে, বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।স্যারের স্টাফকে থ্রেট দিছে। এরপর পেট্রলপাম্পের অফিস থেকে চাবি নিয়ে এসে দিয়েছে।
তারা আরো জানান, স্বাভাবিকভাবে বাজারে আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা। আজকে(২৬ নভেম্বর) বাজারে ৪০ টাকার নিচে কোনো আলু নাই। সব দোকানে ৪০ টাকা।
ইউএনও’র প্রশ্নের উত্তরে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বলছে, আলু নাই। আলু আসে নাই।এখানে একটি বড় ট্রাক ও একটি ছোট ট্রাক ছিল। বিকেল ৪/৫টার দিকে যখন ওখানে ক্রাইসেস হইছে, তখন এখান থেকে একটি ট্রাক নিয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূরবী গোলদার জানান, হঠাৎ করে একটা ফোন পাই। ভদ্রলোক বললেন সাতরশি-সাড়ে সাতরশি পাম্পের এখানে দুটি আলুর ট্রাক দাঁড়ানো আছে। ওনাদের ধারণা, এখানে আলুর মজুদ রেখে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চৌদ্দরশি বাজারে আজকে আলুর দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। একদিনের ব্যবধানে তারা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে আলুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা এখানে একটি ট্রাক পেয়েছি। ট্রাকের চালক পাইনি, হেলপার পেয়েছি।হেলপার প্রথমে স্বীকার করেনি তিনি হেলপার। পরে তাকে বিভিন্নভাবে জোরাজুরি করলে তিনি স্বীকার করেছে তিনিই ট্রাকের ড্রাইভার।আমরা এখন দেখব ট্রাকের মালিক কারা, কোন আলু ব্যবসায়ী আলু এনেছে, কোন সিন্ডিকেট এর সঙ্গে জড়িত। তাদেরকে খুঁজে আমরা আইনের আওতায় আনব।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে আমরা সবাই দেখেছি যে, পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। কিছু মুনাফাখোর ব্যবসায়ীর জন্য এই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।সবচেয়ে আশ্চর্যজনক, একদিন বিকেল ৩টা থেকে শোনা গেলে লবণের দাম কেজিতে ১০০/২০০ টাকা হয়ে যাচ্ছে। তো আমরা কিন্তু সবাই সচেতন থেকে সেটা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছি। তার মধ্যেই কয়েক ঘণ্টায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকার বিজনেস করেছে। এ জন্য আমরা সচেতন, সাধারণ মানুষও সচেতন।এ জন্য তারা এরকম ঘটনা দেখেছে বলে আমাকে জানিয়েছে।
ছবিঋণঃ সংগৃহীত
২৭শে নভেম্বর ২০১৯
ছবিঋণঃ সংগৃহীত
২৭শে নভেম্বর ২০১৯