পাশ্চাত্যের কাছে শেখা ৩৬৫ দিনেই আমাদেরকে নানা দিবসে আদৃত করে রাখে। লক্ষণীয় কোনোটিই খুব অপ্রয়োজন তা নয়, মূল কথা, কোনোটিকেই ঝেড়ে ফেলানোর মতো নয়। তারপর এই বাঙালির আছে বার মাসে তের পার্বণ।
নিজস্ব সাংকৃতির দিবস, মানুষ কেন্দ্রিক শত দিবস। যা লিখলে কাগজ ফুরিয়ে যাবে। আর এরি মধ্যে ব্যাঙ দিবসটির(২৫ এপ্রিল) কথা আমাদের মনে থাকবার কথাই নয়।
অথচ জীববৈচিত্র্যের একটি প্রাণ হচ্ছে ব্যাঙ। এই ব্যাঙ নিয়ে আছে কত কথা, আছে রম্য রচনা, ব্যাঙ রম্য উপমাতে বহু প্রচলিত একটি উভচর প্রাণীর নাম। সবসময় আশপাশে অবস্থান নিয়ে থাকে। ঘরের কোণে, চালে, গাছে, ঘটিবাটিতে। বসতভিটার চতুরদিকে ঝোঁপে গর্তে সবখানে আছে অবস্থান। আর বর্ষায় এদের বৈচিত্র্য উপস্থিতি সবারই নজর কাড়ে। ধানের ক্ষেত, জলডোবা, পুকুর কিংবা ছোট নালায় ব্যাঙের ডাক এক নান্দনিক জীবন বোধের সঙ্গী হয়ে চলে।
এত এত দিবস আসে যায়, যা মানুষকে ডেকে যায়। কিন্তু জীবনের পরম সঙ্গী কিছু জীববৈচিত্র্য ব্যাঙের কথা, বা প্রকৃতি সৌন্দর্যে পশু পাখিদের নিয়ে কেবা ভাবে, কার বা এনিয়ে কিছু লেখার সময় আছে! প্রতি বছরই ব্যাঙ দিবস আসে, আবার লোক স্মৃতি চক্ষু আঁড়ালেই চলে যায়। আজ এমনি চলে যাওয়া এবারের ব্যাঙ দিবসকে একটি বিশদ আলোচনার অনুলিখনিতে আসছি। আশা করছি প্রিয় পাঠক এবং বাংলা ভাষাবাসির সকলের কাছে এটি পড়তে প্রিয় হয়ে উঠবে। ব্যাঙেদের ভাষা বুঝতে পেরেছিল প্রাচীন জ্যোতিষী খনা। ব্যাঙ যে বৃষ্টি আসার বার্তা ছড়িয়ে দেয় সকলের মাঝে তা তিনি বলে গিয়েছিলেন তার বচনে। ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘাঙ, শিগগিরই হবে বৃষ্টি জান।’ প্রাচীনকাল থেকে ব্যাঙের অনুসরণ করে বৃষ্টির আগাম বার্তা গ্রহণ করে আসছেন কৃষকরাও। শুধু তাই নয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ব্যাঙ। বিভিন্ন কীট পতঙ্গ খেয়ে তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে কৃষি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে এই ব্যাঙ। ব্যাঙ তার শরীরের কয়েকগুণ পোকা এক রাতে খেতে পারে। যার ফলে কৃষকদের বন্ধু হিসাবে সেই অনন্তকাল থেকে সহযোগিতা করে আসছে ব্যাঙ। মশা দমনেও ব্যাঙের জুড়ি নেই। খাদ্যশৃঙ্খল বাস্তুতন্ত্রে তার অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে ব্যাঙের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাদের বাসস্থান, প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ দূষণের ফলে। অপরিকল্পিত শিল্পায়ন নগরায়নের ফলে দিন দিন কমছে ব্যাঙের সংখ্যা। এর ফলে পরিবেশ আর বাস্তুতন্ত্র তার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে বলে মনে করছেন প্রাণীবিদরা। শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ব ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে আয়োজিত কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন প্রাণীবীদরা। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাচার কনজারভেশন ক্লাবের আয়োজনে এবার অনলাইনের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে অনলাইনে সচেতনতামূলক পোস্টার প্রকাশ, ব্যাঙ নিয়ে রচনা লিখা, ডকুমেন্টারি তৈরিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। একটি ব্যাঙ তার পুরো জীবনে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ফসল রক্ষা করে কৃষি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে জানিয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. মাহাবুব আলম বলেন, যদি একটি Indian Bull Frog এর ওজন ২০০ গ্রাম হয় এবং জীবনকাল ৭ বছর, যদি সে দৈনিক তার দেহের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খায় তাহলে তার পুরো জীবনে সে (২০০/২/৭)= ২ কেজি ৮০০ গ্রাম পোকামাকড় খায়। যদি ২ কেজি ৮০০ গ্রামে ২৮০০ পোকামাকড় হয় এবং প্রত্যেকে ৫ কেজি ফসল নষ্ট করে, তাহলে, ২৮০০/৫ = ১৪ হাজার কেজি ফসল নষ্ট করে। গড়ে ১ কেজি ফসলের দাম ৩০ টাকা করে হলে, ১৪০০০/৩০= ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ফসল রক্ষা করে একটি ব্যাঙ তার পুরো জীবন দশায়। ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খেয়ে থাকে ব্যাঙ। যা কিনা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতিতে ব্যাঙ কমে যাওয়ায় ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত নানা রোগ বাড়ছে জানিয়ে প্রাণীবিদ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফিরোজ জামান বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, শিল্পায়ন, নগরায়নের ফলে পৃথিবীতে ব্যাঙের আবাসস্থল দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে। যার ফলে এই প্রাণীরা আজ সংকটাপন্ন। মশাসহ ক্ষতিকর পতঙ্গ দমনে ব্যাঙের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শহর অঞ্চলে দিন দিন ব্যাঙের সংখ্যা কমছে। যার ফলে বাড়ছে মশা বাহিত রোগ। আবাসস্থল সংরক্ষণ ও পরিবেশ দূষণের পরিমাণ কমাতে পারলে সংরক্ষণ করা যাবে ব্যাঙ দের তথা তার সাথে জড়িত সকল জীবকুলকে। রক্ষা হবে পরিবেশের ভারসাম্য। এজন্য মানুষকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য, সর্বোপরি নিজের জন্য হলেও এগিয়ে আসতে হবে। বন্যপ্রাণী গবেষক প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ব্যাঙ পরিবেশের অন্যতম একটি নির্দেশক। তাদের সঠিক বিস্তৃতি ও উপস্থিতি পরিবেশের সুস্থতা নির্দেশ করে এবং একটি এলাকার জীববৈচিত্র্যের সুস্থতা নির্দেশ করে। ব্যাঙ সংরক্ষণ করার মাধ্যমে, পরিবেশ সংরক্ষিত হবে এবং পৃথিবীর সকল ধরনের জীব নিরাপদে থাকবে। তাই মানুষের প্রয়োজনে ব্যাঙ সংরক্ষণ প্রয়োজন। মানুষের অসচেতনতার জন্য ব্যাঙ আজ হুমকির মুখে। আর ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে ব্যাঙ সংরক্ষণের গুরুত্ব কতটা। পৃথিবীতে প্রত্যেক জীবের বাঁচার অধিকার সমান। প্রকৃতি নিজেই করে দিয়েছে এক সাম্য অবস্থা, আর এই সাম্য অবস্থা যখনই বিঘ্নিত হয় তখনই পরিবেশে বিপর্যয় নেমে আসে। সৃষ্টিকর্তা সকল উদ্ভিদ প্রাণী মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই মানুষের উচিত এই সমস্ত কিছু নিয়ে ভালো থাকা। বলছিলেন, বন্যপ্রাণী গবেষক প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর হুমায়ুন রেজা খান বলেন, ব্যাঙ পোকামাকড় খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। পরিবেশকে সুস্থ রাখছে। ব্যাঙ এর পরিমাণ ঠিক থাকলে এই ভারসাম্য ঠিক থাকবে আর এতে করে পরিবেশের অনন্য উপাদান ভালো থাকবে। তাই আমাদের ব্যাঙ সংরক্ষণ করা অতি জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাঙ আহরণ, বিদেশে পাচার বন্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী ব্যাঙ সংরক্ষণ ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এপ্রিলের শেষ শনিবার(২৫ এপ্রিল) সারা পৃথিবীতে একসাথে পালিত হয় ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে ৫ম বারের মতো পালিত হলো দিবসটি।
বোরহান মেহেদী
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
৯ই মে ২০২০
অথচ জীববৈচিত্র্যের একটি প্রাণ হচ্ছে ব্যাঙ। এই ব্যাঙ নিয়ে আছে কত কথা, আছে রম্য রচনা, ব্যাঙ রম্য উপমাতে বহু প্রচলিত একটি উভচর প্রাণীর নাম। সবসময় আশপাশে অবস্থান নিয়ে থাকে। ঘরের কোণে, চালে, গাছে, ঘটিবাটিতে। বসতভিটার চতুরদিকে ঝোঁপে গর্তে সবখানে আছে অবস্থান। আর বর্ষায় এদের বৈচিত্র্য উপস্থিতি সবারই নজর কাড়ে। ধানের ক্ষেত, জলডোবা, পুকুর কিংবা ছোট নালায় ব্যাঙের ডাক এক নান্দনিক জীবন বোধের সঙ্গী হয়ে চলে।
এত এত দিবস আসে যায়, যা মানুষকে ডেকে যায়। কিন্তু জীবনের পরম সঙ্গী কিছু জীববৈচিত্র্য ব্যাঙের কথা, বা প্রকৃতি সৌন্দর্যে পশু পাখিদের নিয়ে কেবা ভাবে, কার বা এনিয়ে কিছু লেখার সময় আছে! প্রতি বছরই ব্যাঙ দিবস আসে, আবার লোক স্মৃতি চক্ষু আঁড়ালেই চলে যায়। আজ এমনি চলে যাওয়া এবারের ব্যাঙ দিবসকে একটি বিশদ আলোচনার অনুলিখনিতে আসছি। আশা করছি প্রিয় পাঠক এবং বাংলা ভাষাবাসির সকলের কাছে এটি পড়তে প্রিয় হয়ে উঠবে। ব্যাঙেদের ভাষা বুঝতে পেরেছিল প্রাচীন জ্যোতিষী খনা। ব্যাঙ যে বৃষ্টি আসার বার্তা ছড়িয়ে দেয় সকলের মাঝে তা তিনি বলে গিয়েছিলেন তার বচনে। ‘ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘাঙ, শিগগিরই হবে বৃষ্টি জান।’ প্রাচীনকাল থেকে ব্যাঙের অনুসরণ করে বৃষ্টির আগাম বার্তা গ্রহণ করে আসছেন কৃষকরাও। শুধু তাই নয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ব্যাঙ। বিভিন্ন কীট পতঙ্গ খেয়ে তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে কৃষি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে এই ব্যাঙ। ব্যাঙ তার শরীরের কয়েকগুণ পোকা এক রাতে খেতে পারে। যার ফলে কৃষকদের বন্ধু হিসাবে সেই অনন্তকাল থেকে সহযোগিতা করে আসছে ব্যাঙ। মশা দমনেও ব্যাঙের জুড়ি নেই। খাদ্যশৃঙ্খল বাস্তুতন্ত্রে তার অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে ব্যাঙের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। তাদের বাসস্থান, প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ দূষণের ফলে। অপরিকল্পিত শিল্পায়ন নগরায়নের ফলে দিন দিন কমছে ব্যাঙের সংখ্যা। এর ফলে পরিবেশ আর বাস্তুতন্ত্র তার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে বলে মনে করছেন প্রাণীবিদরা। শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ব ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে আয়োজিত কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন প্রাণীবীদরা। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাচার কনজারভেশন ক্লাবের আয়োজনে এবার অনলাইনের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে অনলাইনে সচেতনতামূলক পোস্টার প্রকাশ, ব্যাঙ নিয়ে রচনা লিখা, ডকুমেন্টারি তৈরিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। একটি ব্যাঙ তার পুরো জীবনে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ফসল রক্ষা করে কৃষি অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে জানিয়ে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. মাহাবুব আলম বলেন, যদি একটি Indian Bull Frog এর ওজন ২০০ গ্রাম হয় এবং জীবনকাল ৭ বছর, যদি সে দৈনিক তার দেহের ওজনের দ্বিগুণ পোকামাকড় খায় তাহলে তার পুরো জীবনে সে (২০০/২/৭)= ২ কেজি ৮০০ গ্রাম পোকামাকড় খায়। যদি ২ কেজি ৮০০ গ্রামে ২৮০০ পোকামাকড় হয় এবং প্রত্যেকে ৫ কেজি ফসল নষ্ট করে, তাহলে, ২৮০০/৫ = ১৪ হাজার কেজি ফসল নষ্ট করে। গড়ে ১ কেজি ফসলের দাম ৩০ টাকা করে হলে, ১৪০০০/৩০= ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ফসল রক্ষা করে একটি ব্যাঙ তার পুরো জীবন দশায়। ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়াসহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগের বাহক মশার লার্ভা ব্যাঙাচি অবস্থায় খেয়ে থাকে ব্যাঙ। যা কিনা মশা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতিতে ব্যাঙ কমে যাওয়ায় ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত নানা রোগ বাড়ছে জানিয়ে প্রাণীবিদ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফিরোজ জামান বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, শিল্পায়ন, নগরায়নের ফলে পৃথিবীতে ব্যাঙের আবাসস্থল দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে। যার ফলে এই প্রাণীরা আজ সংকটাপন্ন। মশাসহ ক্ষতিকর পতঙ্গ দমনে ব্যাঙের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শহর অঞ্চলে দিন দিন ব্যাঙের সংখ্যা কমছে। যার ফলে বাড়ছে মশা বাহিত রোগ। আবাসস্থল সংরক্ষণ ও পরিবেশ দূষণের পরিমাণ কমাতে পারলে সংরক্ষণ করা যাবে ব্যাঙ দের তথা তার সাথে জড়িত সকল জীবকুলকে। রক্ষা হবে পরিবেশের ভারসাম্য। এজন্য মানুষকে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য, সর্বোপরি নিজের জন্য হলেও এগিয়ে আসতে হবে। বন্যপ্রাণী গবেষক প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ব্যাঙ পরিবেশের অন্যতম একটি নির্দেশক। তাদের সঠিক বিস্তৃতি ও উপস্থিতি পরিবেশের সুস্থতা নির্দেশ করে এবং একটি এলাকার জীববৈচিত্র্যের সুস্থতা নির্দেশ করে। ব্যাঙ সংরক্ষণ করার মাধ্যমে, পরিবেশ সংরক্ষিত হবে এবং পৃথিবীর সকল ধরনের জীব নিরাপদে থাকবে। তাই মানুষের প্রয়োজনে ব্যাঙ সংরক্ষণ প্রয়োজন। মানুষের অসচেতনতার জন্য ব্যাঙ আজ হুমকির মুখে। আর ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে ব্যাঙ সংরক্ষণের গুরুত্ব কতটা। পৃথিবীতে প্রত্যেক জীবের বাঁচার অধিকার সমান। প্রকৃতি নিজেই করে দিয়েছে এক সাম্য অবস্থা, আর এই সাম্য অবস্থা যখনই বিঘ্নিত হয় তখনই পরিবেশে বিপর্যয় নেমে আসে। সৃষ্টিকর্তা সকল উদ্ভিদ প্রাণী মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই মানুষের উচিত এই সমস্ত কিছু নিয়ে ভালো থাকা। বলছিলেন, বন্যপ্রাণী গবেষক প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর হুমায়ুন রেজা খান বলেন, ব্যাঙ পোকামাকড় খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। পরিবেশকে সুস্থ রাখছে। ব্যাঙ এর পরিমাণ ঠিক থাকলে এই ভারসাম্য ঠিক থাকবে আর এতে করে পরিবেশের অনন্য উপাদান ভালো থাকবে। তাই আমাদের ব্যাঙ সংরক্ষণ করা অতি জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাঙ আহরণ, বিদেশে পাচার বন্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী ব্যাঙ সংরক্ষণ ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এপ্রিলের শেষ শনিবার(২৫ এপ্রিল) সারা পৃথিবীতে একসাথে পালিত হয় ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে ৫ম বারের মতো পালিত হলো দিবসটি।
বোরহান মেহেদী
ঢাকা, বাংলাদেশ
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
৯ই মে ২০২০