Type Here to Get Search Results !

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন - দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত একটি স্বপ্ন পূরণ হলো বাংলাদেশের: রীতা আক্তার, বাংলাদেশ

 ২৫ শে জুন  বাংলাদেশের তথা দেশবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত একটি স্বপ্ন পূরণ হলো পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মাধ্যমে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে দেশের দক্ষিনাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ হলো আরো সহজ।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর একটি অংশ দৃশ্যমান হয়। পরে একের পর এক ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১টি স্প্যান। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে হয়ে উঠে বহুমুখী ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ কাঠামো দৃশ্যমান।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, মূল সেতু নির্মাণের কাজটি করেছে চীনের ঠিকাদার কোম্পানি চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) এবং নদী শাসন করেছে চীনের সিনো হাইড্রো করপোরেশন। মোট ৩০, ১৯৩.৭ কোটি টাকা ব্যয়ে স্ব-অর্থায়নে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।

তথ্য মতে, পদ্মা সেতু ও এ সংশ্লিষ্ট সব অবকাঠামো নির্মাণে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। পুরো প্রকল্পের ব্যয় এই অংকের হলেও মূল সেতু নির্মাণে এর তিন ভাগের এক ভাগ খরচ হয়েছে। অনেক টাকা খরচ হয়েছে নদীশাসন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, পুনর্বাসন প্রকল্পসহ অন্যান্য খাতে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুসারে, পদ্মা সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে জলভাগ পদ্মা নদীতে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার, স্থলভাগে অর্থাৎ মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে পড়েছে ৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটার। প্রকল্পে মূল সেতু নির্মাণে খরচ হচ্ছে ১১ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা।

সেতুর পাশ দিয়ে ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ লাইন আছে, সেখানে খরচ এক হাজার কোটি টাকা। মূল সেতুর রেললাইনের পাশ দিয়ে গ্যাস লাইন টানা হয়েছে। এই গ্যাস লাইন নির্মাণে খরচ হচ্ছে আরও ৩০০ কোটি টাকা।


২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পয়েন্টে প্রথম এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী প্রশিক্ষণের কাজ এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা জাপান সফর করেন। জাপান সফরকালে তিনি পদ্মা ও রূপসা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করেন। জাপান সরকার দুটি নদীর ওপর সেতু নির্মাণে সম্মত হয়। যেহেতু পদ্মা নদী একটি শক্তিশালী নদী, যার প্রবল স্রোত, জাপান পদ্মা নদী জরিপ শুরু করে। অপরদিকে তারা তার অনুরোধে রূপসা নদীতে নির্মাণ কাজ শুরু করে।

জাপান ২০০১ সালে পদ্মা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সমীক্ষা প্রতিবেদন বাংলাদেশের কাছে জমা দেয়। জাপানি জরিপে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টকে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্থান হিসেবে নির্বাচিত করে।

২৫ জুন বহুকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করতে মাওয়া প্রান্তে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তব্যের শুরুতে তিনি দেশবাসীকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানান।
শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত জানানোর পর বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, সে কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমি বাংলাদেশের মানুষকে স্যালুট জানাই।"
দেশের বৃহত্তম স্ব-অর্থায়নকৃত মেগা প্রকল্পের জমকালো উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী রীমাওয়া পয়েন্টে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শীট, উদ্বোধনী খাম এবং বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে আরোও বলেছেন,  এ সেতু কেবল সেতু নয়। এর ৪২টি স্তম্ভ স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।


রীতা আক্তার, বাংলাদেশ


আরশিকথা হাইলাইটস

ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট 

২৫শে জুন, ২০২২
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
  1. পদ্মাসেতুর উদ্বোধন -- রীতা আক্তার, বাংলাদেশ। সুন্দর উপস্থাপনা। তথ্য সমৃদ্ধ সুন্দর নিবেদন।
    পদ্মাসেতু বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন। অবশেষে বিগত পঁচিশে জুন পদ্মাসেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে -- সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের দিগন্তে এ এক নব পালক, সকল বাংলাদেশী জনগণের এক অনন্য প্রাপ্তি।
    শুভেচ্ছা সতত প্রিয় বোন।

    উত্তরমুছুন