দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য গ্রামের উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরী। কারণ দেশের অধিকাংশ মানুষই গ্রামে বসবাস করেন। নাবার্ড গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারীদের উন্নতি সাধনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে।
মঙ্গলবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২নং হলে আয়োজিত নাবার্ডের ৪১তম প্রতিষ্ঠা দিবস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। তিনি বলেন, নাবার্ড ১০০ কোটি টাকার প্রাথমিক মূলধন নিয়ে পথচলা শুরু করেছিল এবং ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই মূলধন ১৭,০৮০ কোটি টাকা হয়েছে। নাবার্ড ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গীর পাশাপাশি মানুষের জন্যও কাজ করছে। নাবার্ড দেশের গ্রামীণ এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধনের পাশাপাশি উদ্ভাবনী, প্রযুক্তিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষির বিকাশে কাজ করছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নাবার্ড গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশের জন্য তিনটি মুখ্য বিষয়ের উপর কাজ করছে। সেইগুলি হল আর্থিক উন্নয়ন এবং তত্বাবধান। তিনি বলেন, নাবার্ডের উদ্যোগগুলি সারা দেশের গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী বিশেষ করে কৃষকদের হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। নাবার্ডের দ্বারা চালু এস এইচ জি ব্যাংক লিঙ্কেজ প্রকল্পটি বিশ্বের বৃহত্তম মাইক্রো ফিনান্স প্রকল্পে রূপান্তরিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের কৃষকদের কল্যাণে কাজ করছেন। নাবার্ডও প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যকে সফল করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, জয়েন্ট লায়েবিলিটি গ্রুপকে আর্থিক সহায়তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে নাবার্ড। নাবার্ডের ডিজাইনকৃত ফার্মার্স প্রডিউসার অর্গানাইজেশন (এফপিও) দেশের কৃষকদের উৎসাহিত করছে। নাবার্ড ওয়াটার শেড ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রেও অগ্রণী। ভারত সরকারের নোডাল সংস্থা হিসেবে নাবার্ডকে ৬৩ হাজার প্যাক্স এর কম্পিউটারাইজেশনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ ভারতের উন্নতি এবং বিকাশে সহায়ক নাবার্ড। গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত ব্যবধান কমিয়ে আনার কাজ করছে নাবার্ড। তিনি বলেন, আর আই ডি এফ (আরআইডিএফ) এর অধীনে বিভিন্ন প্রকল্পে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৩,১৬৬, ৯৯ কোটি টাকা রাজ্যের জন্য মঞ্জুর করেছে নাবার্ড। এছাড়াও রাজ্যের উন্নয়নে নাবার্ডের অনুমোদিত বিভিন্ন প্রকল্প কর্মসূচির তথ্য মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। আর আই ডি এফ ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন প্রকল্প সমূহে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা প্রদানে নাবার্ড কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থ দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, আর বি আই-এর জি এম সতবস্তু সিং সাহোটা, ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংক এবং ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যানগন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাবার্ডের জি এম লোকেন দাস।
অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংক, ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাংকের সেরা ব্রাঞ্চগুলির উল্লেখযোগ্য কাজের জন্য ব্রাঞ্চ ম্যানেজারদের এবং প্যাক্সকেও সম্মানিত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাদের হাতে স্মারক এবং শংসাপত্র তুলে দেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ২টি প্যাক্সকে মাইক্রো এটিএম, ৫ জন সুবিধাভোগীকে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, ২টি প্যাক্সকে জে এল জি ঋণ মঞ্জুরীপত্র, ৩ জনকে বর্গাদার ঋণ অনুমোদনপত্র, একটি সংস্থাকে রুরাল হাট মঞ্জুরীপত্র এবং জি আই ট্যাগিং এর মঞ্জুরীপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য অতিথিরা৷
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা ত্রিপুরা স্টেট কো-অপারেটিভ ব্যাংকের একটি মোবাইল এটিএম ভ্যান এবং একটি মোবাইল রুর্যাল মার্ট এর পতাকা নেড়ে সূচনা করেন।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ
১২ই জুলাই ২০২২