আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় শোকাবহ পরিবেশে ১৫ আগস্ট ২০২৩ তারিখ (মঙ্গলবার) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালন উপলক্ষে সহকারী হাই কমিশন কর্তৃক দুই পর্বে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের ২য় পর্বে, আগরতলাস্থিত হোটেল সোনার তরীতে বেলা ১১:০০ ঘটিকায় বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনা সভা ও অনুষ্ঠান স্থলে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপস্থিত ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী সুশ্রী প্রতিমা ভৌমিক, বাংলাদেশ থেকে আগত সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের মাননীয় বিচারপতি জনাব এ কে এম আসাদুজ্জামান, ত্রিপুরা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি শ্রী অরিন্দম লোধ, ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শ্রী ইউ বি সাহা, ত্রিপরা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শ্রী এস সি দাস, ত্রিপুরা রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল শ্রী সিদ্ধার্থ শংকর দে, ত্রিপুরা রাজ্যের আইন সচিব শ্রী বিশ্বজিত পালিত, ত্রিপুরা উচ্চ শিক্ষা কাউন্সিল এর চেয়ারম্যান প্রফেসর অরুনোদয় সাহা, বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধের মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব শ্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্যসহ মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিবারবর্গ, আগরতলা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এর ডেপুটি মেয়র শ্রীমতি মনিকা দাস দত্ত, বিএসএফ ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ারের পক্ষ থেকে ডিআইজি এল কে কে লাল, ত্রিপুরা চা বোর্ডের চেয়ারম্যান শ্রী সন্তোষ সাহা, আগরতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য, স্যান্দন পত্রিকায় পরিচালক শ্রী অভিষেক দে প্রমুখ। তাছাড়া, ত্রিপুরা বার এসোসিয়েশন, ত্রিপুরা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন, প্রাণ বেভারেজ ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, অল ত্রিপুরা মার্চেন্ট এসোসিয়েশন, ডিভাইন টাচ মেডি-ক্লিনিক, ভারত-বাংলা মৈত্রী সংসদ, আরশিকথা সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকেও পৃথক পৃথকভাবে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বেলা ১১:০০ ঘটিকায় ০১ মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর প্রতিকৃতিতে সম্মানিত অতিথিবৃন্দ ধারাবাহিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বেলা ১১:১৫ ঘটিকায় জাতির পিতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও কর্মধারার উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বেলা ১১:৪৫ ঘটিকায় জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিশনের সহকারী হাইকমিশনার জনাব আরিফ মোহাম্মাদ। সহকারী হাইকমিশনার জনাব আরিফ মোহাম্মাদ তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন যে, ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতকরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘৃণ্য ঘাতকরা এই দিনে আরো হত্যা করে জাতির পিতার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব তিন পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশু পুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, একমাত্র সহোদর বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, কৃষক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, যুবনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বেবি সেরনিয়াবাত, আরিফ সেরনিয়াবাত, সাংবাদিক শহীদ সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আবু নাঈম খান সহ পরিবারের আঠারো জন সদস্যকে। জাতীয় শোক দিবসে তিনি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্টের সকল শহীদকে এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি ১৫ই আগস্টের হত্যাকান্ডকে পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম রাজনৈতিক হত্যাকান্ড হিসেবে অভিহিত করেন। স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতক চক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। তাই আসুন আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করি। তাঁর আত্মত্যাগের মহিমা ও দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মের মাধ্যমে প্রতিফলিত করে সকলে মিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টার প্রতিজ্ঞা করি। জাতীয় শোক দিবসে এই হোক আমাদের সুদৃঢ় অঙ্গীকার।
এছাড়া, সহকারী হাইকমিশনার ভারতের মহান স্বাধীনতার ৭৬তম বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে সমগ্র ভারতবাসী তথা ত্রিপুরাবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং স্বাধীনতার ৭৬তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ভারত সরকারের গৃহীত সকল উদ্যোগের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
১৫ই আগস্ট ২০২৩