পূর্ণি ঘোষাল, সাভার, আরশিকথাঃ
ঢাকা জেলার সাভারে সাস পরিচালিত রেইজ প্রকল্পের কার্যক্রম ভিজিট করেন বিশ্বব্যাংক ও পিকেএসএফ এর প্রতিনিধিদল। সোমবার (২অক্টোবর) সকাল ৯.০০টায় সাভার ব্যাংক টাউন এলকায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও বিশ্বব্যাংক এর আর্থিক সহযোগিতায় এবং সোস্যাল আপলিফটমেন্ট সোসাইটি (সাস) পরিচালিত রেইজ প্রকল্পের কার্যক্রম ভিজিট করেন বিশ্বব্যাংক ও পিকেএসএফ এর প্রতিনিধিদল।
বিশ্বব্যাংক সাউথ এশিয়া রিজিওনাল ডিরেক্টর ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট এর প্রতিনিধি নিকোল ক্লিংগেন, বিশ্বব্যাংক এর রেইজ প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার এস আমের আহমেদ, কো-টাস্ক টিম লিডার আনিকা রহমান, পিকেএসএফ এর মহাব্যবস্থাপক (কার্যক্রম) ও রেইজ প্রকল্পের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এবং উপ-প্রকল্প সমন্বয়কারী গোলাম জিলানী। এছাড়া সাস এর নির্বাহী পরিচালক হামিদা বেগম; পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষিবিদ ড. রফিকুল ইসলাম মোল্লা ও উপ-পরিচালক ও রেইজ প্রকল্পের ফোকাল পার্সন মঞ্জুর মোর্শেদ। উক্ত প্রতিনিধিদল ব্যাংক টাউন সাদিয়া টেইলার্স ভিজিট করেন।
তাসলিমা বেগম ৭ বছর পূর্বে মাত্র ২৫ হাজার টাকা নিয়ে টেইলারের ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তার দোকানে মূলধন আছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। তাসলিমা রেইজ প্রকল্পের তরুন উদ্যোক্তা হিসেবে তার ব্যবসা বড় করার জন্য সাস এর নিকট থেকে ঋণসহ সার্বিক সহযোগিতা পেয়ে যাচ্ছে। ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার ব্যাংক টাউন এলাকার মেয়ে তাসলিমা বেগম (৩৪)। তিনি সাদিয়া টেইলার্সের প্রোপাইটর। তার লেখাপড়ার খুব ই”ছা ছিল কিš‘ দারিদ্রতার জন্য বেশী লেখাপড়া করতে পারেনি। ৭ম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাসলিমার বিয়ে হয়ে যায়।
তবিয়ের পড় তাসলিমার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তাসলিমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। তাসলিমার সেলাই কাজে খুব আগ্রহ থাকায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশুনার সময় মায়ের কাছ সেলাই কাজ শেখেন। ২০০৯ সাল থেকে ঘরোয়াভাবে কাজ করে এবং ২০১৫ সালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেলাই কাজ করে। সেলাই কাজে বেশ অভিজ্ঞ হওয়াতে এলাকায় তার বেশ জনপ্রিয়তা আছে। তার প্রতিষ্ঠানে ২ জন নারী কর্মচারী কাজ করে। ২ জন কর্মচারীর বেতন, দোকান ভাড়া ও অন্যান্য খরচসহ মাসে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে তিনি প্রতিমাসে আয় করেন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ৫ বছর আগে তাসলিমার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করে এবং তাসলিমার সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়। জীবন সংগ্রামী তাসলিমা দুটি সন্তানের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। তাসলিমার স্বপ্ন তিনি একটি মিনি গার্মেন্টস তৈরী করবেন, যেখানে অসহায় নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের মোট কর্মসংস্থানের ৮৬.২% অনানুষ্ঠানিক খাতে এবং ৭৮% কুটির ও ক্ষুদ্র উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত যা টেকসই অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কোভিড-১৯-এর কারণে অন্যান্য খাতের মত অনানুষ্ঠানিক খাতেও বিরুপ প্রভাব পড়েছে। এরই প্রেক্ষিতে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) রেইজ প্রকল্পের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত শহর ও উপ-শহরাঞ্চলের ক্ষুদ্র উদ্যোগ পুনরায় সচল করার লক্ষ্যে উদ্যোক্ততাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ঋণ সহায়তা প্রদান, দেশের অনানুষ্ঠানিক খাতে নিযুক্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদেও সক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং নিম্ন-আয়ের পরিবারভুক্ত তরুণদের শিক্ষানবীশ কর্মসূচীর মাধ্যমে চেকসই কর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উল্লেখ্য, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী যেমন দলিত, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, চর, হাওড়, পার্বত্য অঞ্চল, চা বাগান ও উপক’লীয় এলাকা এবং প্রতিবন্ধী তরুনদের এই প্রকল্পে অংশগ্রহণে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
আরশিকথা বাংলাদেশ সংবাদ
২রা অক্টোবর ২০২৩