সোমবার ৮ জুলাই এক ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হতে চলেছে আগরতলা গোবিন্দ বল্লভ পন্থ হাসপাতাল। এই প্রথমবারের মতো কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের মত জটিল অপারেশন হবে জিবি হাসপাতালে। এর জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এই অপারেশনে কোন ধরনের জটিলতা ও বিঘ্নতা চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা। নির্বিঘ্নে যাতে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের কাজটি সম্পন্ন হয় তার জন্য অপারেশনের আগে সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন সন্ধ্যারাতে জিবি হাসপাতাল পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের সময় অপারেশন রুমে যারা থাকবে তাদের সঙ্গে তিনি দীর্ঘ আলোচনা করেন। সমস্ত বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এদিন তিনি কথা বলেছেন কিডনি ডোনার এবং রোগীর সাথেও। তাদেরকে অভয় দিয়েছেন তিনি। পরের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, এই প্রথমবার রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হতে যাচ্ছে। রোগীর নাম শুভম সূত্রধর। তার দুটি কিডনিই বিকল হয়ে গেছে। তাই নতুন করে তার কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করার প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শুভমকে কিডনি ডোনেট করতে এগিয়ে এসেছেন তার গর্ভধারিণী মা মুন্না সাহা সূত্রধর। তারা মনিপুরের সৃজা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এখানে কিডনি প্রতিস্থাপন করাবেন। অপারেশনের আগে ডোনার এবং রোগীর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। তাই অপারেশনের আগে তাদের যে সমস্ত মেডিক্যাল পরিষেবা দেওয়ার প্রয়োজন সেগুলো ও সম্পন্ন করা হয়েছে। দুজনেই অপারেশনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা। পাশাপাশি তিনি বলেন, এই কিডনি ট্রান্সপ্লান্টকে উপলক্ষ করে মনিপুরের সৃজা ফাউন্ডেশন থেকে ১২ জনের একটি টিম এসেছে। টিমের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডক্টর মানিক সাহা। তারাও জানিয়েছেন রোগী এবং ডোনার দুজনেই ভালো আছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন এই প্রথমবার রাজ্যের বুকে এই ধরনের জটিল অপারেশন হতে যাচ্ছে। যদিও এর প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। এর জন্য চিকিৎসক এবং সিস্টারদের একটি টিমকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত করে আনা হয়েছে। রাজ্যের চিকিৎসক এবং নার্সরা যাতে এই ধরনের অপারেশনে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেন তার জন্যই তাদেরকে মণিপুরে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, সৃজা ফাউন্ডেশন এর সাথে রাজ্যের পাঁচ বছরের মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। আগামী পাঁচ বছর কিডনি প্রতিস্থাপন করার সময় প্রতিটি অপারেশনে তাদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন করার মত অপারেশন আগে হয়নি। যার কারনে রোগীদের বাইরের রাজ্যে চলে যেতে হতো। এখন এই সমস্যার সমাধান হতে যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, ত্রিপুরায় প্রচুর রোগী রয়েছে যারা কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে চান। এক্ষেত্রে ডোনার ও প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামো ছিল না বলে এতদিন কিডনি প্রতিস্থাপন করার মত অপারেশন এখানে হয়নি। সেই পরিকাঠামো এখন তৈরি করা হয়েছে। ফলে সোমবারের পর থেকে জিবি হাসপাতালে নিয়মিত কিডনি প্রতিস্থাপন করার মত অপারেশনগুলো সম্পন্ন হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সকাল আটটা নাগাদ অপারেশন শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছেন চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রে রোগী এবং ডোনার দুজনেরই অপারেশন হবে। একসাথেই শুরু হবে দুজনের অপারেশন। প্রাথমিকভাবে এই অপাচরেশনে পাঁচ ঘন্টা সময় লাগবে এমনটাই মনে করছেন চিকিৎসকরা।
সোমবারের এই অপারেশন যাতে সফল হয় তার জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছেন বলেও জানান। রোগী এবং ডোনার দুজনের জন্যও তিনি প্রার্থনা করছেন বলে এদিন সাংবাদিকদের জানালেন মুখ্যমন্ত্রী ।ছবিঃ সংগৃহীত
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
৭ই জুলাই ২০২৪