Type Here to Get Search Results !

স্বনির্ভরতায় আপনজনের পাশে থাকা এক নারীর সুখের গল্প আরশিকথা হাইলাইটসে

"নিজের অস্তিত্বে বাঁচার মজাই আলাদা। কোন নির্ভরতায় হেলান দিয়ে কারোর জন্য মনপ্রাণ দিয়ে কিছু করা যায়না। স্বনির্ভর হয়ে পরিবার ও আপনজনের পাশে থাকার যে কি সুখ তা বলে বোঝানো যাবেনা" - নিবেদিতা চক্রবর্তীর সহজ সরল প্রকাশভঙ্গীতে বলা এই কথাগুলি কোথায় যেন এক সার্থকতার স্বাদ এনে দিচ্ছিলো। সবসময় নিজে একটা কিছু করার বাসনা তাকে আজ তার সফলতার মুখোমুখি এনে দিয়েছে। প্রথম মাসে ৮০০ টাকার উপার্জন দিয়ে একা নিজের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত করা সেই নিবেদিতা আজ ১৪জন সহকর্মীর উপার্জনে সুযোগ করে দিয়ে তাদের পরিবারের আশীর্বাদে থাকছেন। 

কি করে পারলো নিবেদিতা ?... এই প্রশ্নটা কিন্তু আসবেই। কিন্তু সেই সহজ সরল ভঙ্গিমায় উত্তর যে তৈরি হয়ে থাকবে তা আশাপ্রদই ছিলো। কলেজ থেকেই নিবেদিতার ইচ্ছে ছিলো কাউকে কিছু দিলে নিজে দেবে। তাই নিজে কিছু করার নেশায় স্বপ্ন দেখতো সে। ছোটবেলা থেকেই দুশ্চিন্তা ভয় এইসব তাকে কখনও বিচলিত করতে পারেনি। স্বপ্ন দেখার সাহস নিয়ে পথ চলছিলো সে। একদিন তার স্বপ্নে আরও শক্তি সঞ্চার করে বিখ্যাত অভিনেত্রী শাবানা আজমীর একটি টিভি সাক্ষাৎকার যেখানে তিনি বলেছিলেন "কেউ যাতে কিছু করার স্বপ্ন দেখা না ছাড়ে...আর যা করবে তাতে বেস্ট হতে হবে" - এই সাক্ষাৎকার এক বিশাল প্রেরণা হয়ে আজও শক্তি সঞ্চার করে চলেছে নিবেদিতার। 
একমনে দিনরাত কাজ করে নিজের অস্তিত্বকে এক সফলতার নিরিখে আনতে আজ সক্ষম হয়েছে সে। ছোটবেলা থেকেই মাসীর বাড়িতে মানুষ নিবেদিতা সৃষ্টিধর্মী কাজে এক অদ্ভুত আকর্ষণ অনুভব করতো। তাই বিয়ের পর শ্বাশুরী মায়ের পুরনো সেলাই মেশিনটাকে নিয়েই নেমে পড়ে এক নতুন লক্ষ্যে। মাসীর কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য এবং স্বামীর সহযোগিতায় সেদিন আজকের সফলতার বীজ বপন হয়। তাই সে অকপটে শ্বশুরবাড়ি এবং স্বামী রাজীব ভট্টাচার্যের সহায়তার কথা স্বীকার করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। 
কাজের প্রতি নেশা তাকে দিনরাতের তফাৎ থেকে দূরে রেখেছিলো। নতুন সৃষ্টির নেশায় আজও যত রাতই হোক না কেন শেষ করেই উঠতে হবে এই চ্যালেঞ্জে কাজ করে নিবেদিতা। নিজের সঙ্গে নিজের প্রতিযোগিতা ছাড়া অন্য কিছুর প্রতি প্রতিযোগী মনোভাব থেকে অনেকটাই দূরে হাঁটে সে। যদি তার কাজ সবাই পছন্দ করে তাহলে আর্থিক লাভালাভের বিষয়ে ততটা ভাবেনা নিবেদিতা। এক কথায় তার উত্তর " এটাই বড় পাওনা"। তাই সে কম টাকার কাজই হোক কিংবা বেশী টাকার নজর থাকে শুধু বেস্টটা দেওয়ার। 


সে জানে স্বপ্ন দেখতে গেলে সাহস চাই। আর নির্ভীক নিবেদিতা তাই আজও একটা বড় স্বপ্ন দেখে। কি সেই স্বপ্ন... রাজ্যে একজন ফ্যাশান ডিজাইনার হিসেবে সবার প্রথম পছন্দে থাকতে চায় নিবেদিতা। আর যারা কাজ করতে উৎসাহী তাদের দুহাত বাড়িয়ে সহায়তায় থাকতে চায়। কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও ভালবাসা এবং গুণমানে থাকার সততা আজ তাকে ৫০০এর বেশী সন্তুষ্ট গ্রাহককে নিয়ে পথ চলতে সহায়তা করছে। 

সবশেষে মিষ্টি হেসে আরশি কথা'কে ধন্যবাদ জানিয়ে বললো " মেয়েদের শক্তি অনেক... তাই যারা পরিশ্রম দেখে পিছিয়ে যায় তাদের জন্য কষ্ট হয়।"

আরশি কথা" সেলাম জানায় এই কর্মদ্যোগী নারীকে পাশাপাশি তার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করছে।।

এডিটর ডেস্ক

ছবিঃ নিজস্ব
১৯শে জুলাই ২০১৮ইং              

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.