Type Here to Get Search Results !

মুসলিম নিদর্শন হায়া সোফিয়া এখন নামাজের জন্য উন্মুক্ত" : সৈয়দ ইফতেখার,বাংলাদেশ

হায়া সোফিয়া। যার পরতে পরতে ইসলামের ঐতিহ্য। মসজিদটিতে টানা ৪শ' ৮১ বছর নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। হায়া সোফিয়া নির্মিত হয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধিপতি সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের নির্দেশে। ইস্তাম্বুল শহরের নাম তখন ছিল কনস্টান্টিনোপল, যা ছিল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী, যাকে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যও বলা হয়। প্রায় এক হাজার বছর ধরে এটিই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গির্জা। ৯১৬ বছর সেখানে প্রাচীনপন্থি ও রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা উপাসনা করেন। ১৪৫৩ সালে, অটোমান সুলতান মুহাম্মদ ফতেহ তৎকালীন ইস্তাম্বুল দখলে নিলে, খ্রিস্টান প্রতিকৃতিগুলো কুরআনের আয়াতে ঢেকে স্থাপনাটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। তিনি সেখানে প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেন। উত্তোলন করেন ইসলামের পতাকা। সেই থেকে ইসলামী ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন এই হায়া সোফিয়া। অটোমান সুলতান ফতেহ গির্জাটি ব্যক্তিগত অর্থে কিনে নেন। বেচাকেনার সেই দলিল তুর্কি সরকারের কাছে রয়েছে। ১৯২৪ সালে কামাল আতাতুর্ক খেলাফত উচ্ছেদ করে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় ৫শ' বছর মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার পর ১৯৩৪ সালে হায়া সোফিয়াকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। জাদুঘর থাকাকালীন ১৯৮৫ সালে হায়া সোফিয়াকে বিশ্ব-ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ইউনেস্কো। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য তুরস্কের সর্বাধিক দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এই সুবিশাল স্থাপনা তৈরির সময় প্রকৌশলীরা ভূমধ্যসাগরের ওপার থেকে নির্মাণসামগ্রী নিয়ে এসেছিলেন। বসপরাস প্রণালীর পশ্চিম পাড়ে ইস্তাম্বুলের ফাতিহ এলাকায় গম্বুজশোভিত এই বিশাল ঐতিহাসিক ভবনটি খুব সহজেই দর্শকদের নজর কাড়ে। প্রায় ৮৬ বছর হায়া সোফিয়া ছিল জাদুঘর। আবার স্থাপনাটিকে মসজিদে পরিণত করা সহজ ছিল না। পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও দমে যায়নি তুরস্ক। ১০ই জুলাই ২০২০। 'এই গির্জাকে জাদুঘর বানানো ভুল ছিল'– সর্বোচ্চ আদালতের এ রায়ের পর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান এটিকে মসজিদ বানানোর আদেশে সই করেন। ২৪শে জুলাই-শুক্রবারের জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে আবারও এখানে এবাদতে মশগুল হন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। এতে বাংলাদেশিরাও নামাজ আদায়ের সুযোগ পান। এ স্থাপনাটি বিনামূল্যে উন্মুক্ত থাকবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য। যেকোনো দেশ থেকে পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারবেন।

সৈয়দ ইফতেখার
বাংলাদেশ

২৩শে জুলাই ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.