Type Here to Get Search Results !

স্বাধীনতার পর আমার দেশ......ত্রৈধা মজুমদার,ত্রিপুরা

সাধারণ ব্যবসার উদ্দেশ্য নিয়ে ১৬০৮ খৃষ্টাব্দে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের সুরাট বন্দরে প্রথম আসে।ভারতের সামাজিক, আর্থিক রাজনীতি নিয়ে লোকদের মধ্যে যে মতভেদ সেই মতভেদকে কেন্দ্র করেই ভারতের উপর শাসন করার কথা ভাবতে শুরু করে ওরা।১৭৫০ খৃষ্টাব্দে ভারতের রাজনীতিতে প্রথম হস্তক্ষেপে শুরু করে এবং ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দে পলাশী যুদ্ধের পরই ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজত্ব শুরু  হয়ে যায়।তারা তাদের ধর্ম আর সংস্কৃতিকে সবচেয়ে উন্নত মনে করত তাই তারা চাইত তাদের কালচারটা আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে।ওদের মতে আমরা বর্বর, অশিক্ষিত, সামাজিক আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পরা জাতি।তারা আমাদের বুঝাতে চাইত আমাদের উন্নতির জন্য লিভিং স্টাইল এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে।আসলে বৃটিশদের ভারতে আরো জাকিয়ে বসার জন্য উন্নত বাসস্থান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার দরকার।ওদের  কালচার আমাদের উপর চাপাতে চাপাতে ওরা একদিন আমাদের প্রভু হয়ে উঠল।ভারতীয়দের বিশ্বাস,ধর্মকে আরো জোর অবজ্ঞা করতে লাগল।১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ এই একশো বছর বৃটিশরা আমাদের উপর সবচেয়ে বেশি অত্যাচার করে।পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যায় আর তখনই শুরু হয় রিভোলিউশন বা অত্যাচারের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে জোরদার আন্দোলন। সংগ্রাম,হানাহানি এবং অসংখ্য বিপ্লবীদের আত্মবলিদানের  বিনিময়ে  ১৯৪৭ খৃষ্টাব্দের ১৫ই আগস্ট পৃথক রাষ্টবিভাজনের মাধ্যমে আমাদের দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
আজ স্বাধীনতার চুয়াত্তর বছর পরেও ভাবতে বাধ্য হচ্ছি সত্যিই কি আমরা স্বাধীন?না বৃটিশদের ফেলে যাওয়া কিছু খড়কুটো নিয়ে আবার দেশ সামলাতে লেগেছি।সর্ববৃহৎ সংবিধানের দেশ আমাদের এই ভারতবর্ষ,কিন্তু কোথায় বাক্ স্বাধীনতা,ধর্মনিরপেক্ষতা,কোথায় সব জাত ধর্মের সমানাধিকার ? কোথায় নারী পুরুষের সমতা ? কোথায় সুপ্রিম কোর্টের সেই নিরপেক্ষ বিচার? কোথায় সিবিআই এর সেই নিষ্ঠা।সবই এখন রাজনীতির রঙে সজ্জিত।
এখন আলোকপাত আজকের সবচেয়ে বড় দুঃসময়ের দিকে।করোনায় আজ ভারতবর্ষের করুণ অবস্থা। শুধু চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে শতশত মানুষ।শুধু সময় মত ভর্তি হতে পারলেই বেঁচে যেত অনেকগুলো মানুষ।লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ চাকরি হারিয়েছে,হারাচ্ছে, দিকে দিকে খাদ্যের অভাব,বাজারে অগ্নিমূল্য পণ্যদ্রব্যের।কোন নিয়ন্ত্রয় নেই বাজারের উপর।অর্থনীতি ভীষন ভাবে নিম্নগামী।এখানে গলি থেকে রাজপথ সবাই নানা রাজনৈতিক রঙে নিজেদের পরিচিতি বাড়াচ্ছে।যতটুকু বুঝি ঈশ্বর কোন মন্দিরে থাকেন না তিনি থাকেন আর্ত পীড়িত অভুক্ত মানুষের মধ্যে।সেই জন্যই স্বামীজি বলেছিলেন 'জীবে প্রেম করে যে জন সে জন সেবিছে ঈশ্বর'।তাই আর্তের সেবাই মুখ্য হওয়া উচিত। আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ এই দেশে যে যার অধিকারে থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। এত বছর পর আজও কেন নানা দ্বিমতে আমরা একে অপরের বিরুদ্ধাচরণে ব্যস্ত থাকছি ? কেনই বা হিংসা, লোভে মত্ত হচ্ছি ? সেই প্রশ্নই জাগে মনে।এসব দেখে মনে হয় সামনে নয় পেছনে হাঁটছি আমরা...।।


ত্রৈধা মজুমদার,ত্রিপুরা

ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
১৫ই আগস্ট ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.