Type Here to Get Search Results !

বাংলাদেশের খ্যাতনামা সাংবাদিক-লেখক ও গবেষক কাজল রশীদ শাহীন এর সাথে আরশিকথা'র সাক্ষাৎকারঃ পর্ব ১

কাজল রশীদ শাহীন, সাংবাদিক-লেখক ও গবেষক। পিএইচডি করেছেন বাংলা সাহিত্যে। সংবাদপত্রে বিভিন্ন বিভাগে কাজ করছেন দুই যুগ। সহ-সম্পাদক থেকে হয়েছেন সম্পাদক। সংবাদপত্রের ভেতর-বাইরের কথাসহ সংকট-সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন আরশি কথার ঢাকা ব্যুরো এডিটরের সঙ্গে। 


আরশি কথা: কেমন আছেন, যখন আমাদের দেশে তো বটেই বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা কোভিড-১৯ মহামারী?

ড. কাজল রশীদ শাহীন: ভালো আছি বললে মনে হয় সত্যের অপলাপ হবে। আবার যদি বলি ভালো নেই, তাহলে মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, করোনাকালে বেঁচে থাকাটাইতো ভালো থাকা। সময়টা এমন, নৈর্ব্যক্তিক উত্তর দেয়া কষ্টসাধ্য। করোনা বৈশ্বিক মহামারী, পৃথিবীর সব-দেশেই কমবেশি এর প্রভাব ও ধ্বংসযজ্ঞ রচিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এর ভেতরে যেসব দেশগুলোর ব্যবস্থাপনা ভালো। নাগরিকদের জন্য সুশাসন-সুসম বণ্টন ও ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণে যারা আন্তরিক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন ও নাগরিকবান্ধব মানবিকতার চর্চায়অভ্যস্ত, সেসব দেশগুলো কিন্তু করোনায় অধিক আঘাত প্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হচ্ছে এবং তাদের খুব বেশি বেগ পেতে হচ্ছে না। কিন্তু যেসব দেশে এগুলোর ঘাটতি রয়েছে, তারা যদি করোনায় তুলনামূলকভাবে কম আঘাতপ্রাপ্তও হয় মাশুল বা খেসারত দিতে হচ্ছে অনেক বেশি। বিষয়টা উদ্বেগের।

করোনা ব্যক্তি মানুষ শুধু নয়, আমাদের পরিবারের, সমাজের, প্রতিষ্ঠানসমূহের, রাষ্ট্রের ভেতর বাইরের স্বরূপটাকে উন্মোচিত করে দিয়েছে। বিশাল একটা অগ্নিপরীক্ষা সংঘটিত করে সবাইকে জেরবার করে দিচ্ছে। যারা নিজেদেরকে এতদিন দায়বদ্ধ, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, নিবেদিত, উৎসর্গীকৃত সর্বোপরি ভালো এবং আলোর ঝাণ্ডাধারী বলে জাহির করেছেন, তারা আদতে কতটুকু ভালো এবং আলোর প্রতি তাদের পক্ষপাত কেমন, সবই পষ্ট করে দিয়েছে করোনা কোভিড-১৯।

এডওয়ার্ড ডব্লিউ সাঈদ ‘কাভারিং ইসলাম’ বইয়ে যেমনটা বলেছেন তার সারবত্তা করোনাকালে একটু অন্যরকমভাবে খুবই প্রাসঙ্গিক। পশ্চিমা বিশ্ব তাদের চোখ দিয়ে যে ইসলামকে উপস্থাপন করে সেই ইসলামকে যদি প্রকৃত ইসলাম মনে করা হয়, তাহলে তা হবে মস্তো বড়ো ভুল, যেটা আমরা প্রায়শ করে থাকি। পশ্চিমা বিশ্ব তাদের স্বার্থসিদ্ধির রাজনীতির জন্য ইসলামকে কালিমালিপ্ত ও বিতর্কিত করে, তাদের বশংবদ মিডিয়ায় সেসব বারংবার প্রচার ও প্রকাশের মধ্য দিয়ে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে, ট্যাগ লাগিয়ে দেয়। গোয়েবলস তো বহু আগেই বলেছেন, একটা মিথ্যাকে বারংবার সত্য বলে প্রচার করলে তা সত্য হয়ে যায়।

পরিবার-পরিজন-প্রতিষ্ঠান-সমাজ-রাষ্ট্রের সকল স্তরেই যারা এতদিন সফেদ রঙের পাঞ্জাবি পরে সাধু হয়েছিল। ভালো-ভালো বিশেষণে, কথায়-কর্মে-লেখায়, পুরস্কার সংস্কৃতিতে, বক্তব্যে-টকশোতে নিজেদেরকে উপস্থাপন করেছিল সত্য ও সুন্দরের প্রতিভূ হিসেবে, তারা আদতে কেমন, কী ছিল তাদের সফেদ পাঞ্জাবির পকেটে, করোনাকালে সেটা হাতের তালুর মতো চেনা হয়ে গেল।

গণমাধ্যমের একজন ক্ষুদ্রকর্মী হিসেবে যখন দেখি, দেশে-বিদেশের সকল গণমাধ্যম শুধুই শঙ্কার কথা বলছেন, আশু সংকটের কথা বলছেন, তখন আহত হই, আরো হতাশাগ্রস্ত হই।

অথচ এই পৃথিবী দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধ এবং প্রায় প্রতি শতাব্দীতেই কমপক্ষে একটা করে মহামারী মোকাবেলা করেছে, সেসবের অভিজ্ঞতা কি সুক্ষ্ণভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, তখন কিভাবে পরিস্থিতি সামলানো গেছে। আমরা তো জানি প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং স্প্যানিশ ফ্লুর পরও ১৯২০ সালে আমেরিকার শেয়ার বাজারের সূচক ঊর্ধ্বমূখী ছিল। তাহলে আমরা কেন বারবার শঙ্কার কথা বলছি। গবেষকেরা কেন শুধু তথ্য-উপাত্ত দিয়ে নেতিবাচক ভবিষ্যদ্বাণী করছেন? 

ঝড় আসলে ঘর উড়ে যাবে এটা কি আমাদেরকে টিভির পর্দায়, পত্রিকার পাতায় গবেষকের কাছে থেকে জানতে হবে, নাকি আমাদেরকে জানাবেন কিভাবে ঝড় মোকাবেলা করে টিকে থাকতে পারি সীমিত সাধ্য ও সামর্থ্যের মধ্যেও।

এসব বাস্তবতায় কেমন আছি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন ? 


আরশি কথা: সাংবাদিকতায় কিভাবে এলেন? গল্পটা যদি আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতেন।

ড. কাজল রশীদ শাহীন: মানুষের ন্যায্য অধিকারের কথা বলার তাগিদ থেকে সাংবাদিক হয়েছি। আমি সবসময় নিজেকে বাই চয়েজ জার্নালিস্ট মনে করি। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। এখন মনে হয় বিজ্ঞানে পড়লেও সাংবাদিক হওয়ার ইচ্ছেটা আমার আশৈশবের। আমি মাধ্যমিকে পড়ার সময়ই স্থানীয়ভাবে সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িয়ে যাই। লেখালেখির চেষ্টাটা তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণি থেকেই। আমার আব্বা সরকার উমমত আলী এবং বড়ো ভাই অ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ লেখালেখি করতেন। আমি লুকিয়ে আব্বার পাণ্ডুলিপি ও বড়ো ভাইয়ের ডায়েরি পড়তাম। যদিও কাজটা ঠিক নয়, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দিতাম যে, আমি তো এটা অন্য কাউকে বলছি না নিজের জানার জন্য করছি, তাই এখানে কোনো অপরাধ নেই। এবং নিজেও লেখার চেষ্টা করতাম, কিন্তু তাদের কখনোই অনুসরণ করতাম না। আমার লেখাগুলো ছিল নিজের ব্যক্তিগত রাগ-ক্ষোভ-দুঃখ-কষ্ট থেকে। যতটুকু মনে পড়ে প্রথম কবিতা আমার হারানো কবুতর নিয়ে। যদিও হারানো কবুতরের মতো প্রথম লেখাটা হারিয়ে গেছে। প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘আমি চলেই যাব’ অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়, কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশ বার্তা পত্রিকার সাহিত্যবাসর-এ প্রকাশিত হয়।

আমাদের মেঝভাই বজলুর রশীদ উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় সাংবাদিকতায় যুক্ত হন। কুষ্টিয়ার সাপ্তাহিক ইস্পাত পত্রিকা দিয়ে উনার সাংবাদিকতা শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ‘দৌলতপুর বার্তা’ নামে একটা মাসিক পত্রিকা কিছুদিন তিনি সম্পাদনা করেছেন। দৈনিক যুগান্তরসহ কয়েকটি পত্রিকায় সাংবাদিকতাও করেছেন। পরবর্তীতে কানাডা চলে যান এবং পরিবারসহ ওখানেই থিতু হন। আমাদের আব্বা চাকরির সুবাদে কুষ্টিয়া সদরে থাকতেন। আমরা ভাই-বোনেরা থাকতাম গ্রামের বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামে। আব্বা সপ্তাহান্তে ব্যাগ ভর্তি করে কুষ্টিয়ার স্থানীয় পত্রিকাসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক বাড়ি নিয়ে আসতেন। ভাইবোনেরা এগুলো দেখতেন আর আমি পড়তাম।  একেবারে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তাম এবং যেগুলো ভালো লাগত সংরক্ষণ করতাম। আত্মীয় পরিমণ্ডলে খন্দকার আব্দুর রশীদ নামে আমাদের একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বড়ভাই ছিলেন। তাদের পরিবারে আমার অবাধ যাতায়াত ও প্রশ্রয় ছিল। তিনি বাসায় নিয়মিত দৈনিক বাংলা ও বিচিত্রা পত্রিকা রাখতেন, যেগুলো আমি গোগ্রাসে গিলতাম। 

আমাদের বড় ভাইয়েরও পত্রিকা পড়া ও কেনার অভ্যাস রয়েছে। কুষ্টিয়ায় এলে এবং কুষ্টিয়ার বাইরে কোথাও গেলেই পত্রিকা ও ম্যাগাজিন নিয়ে আসতেন। তার কাছে দেশের বাইরে থেকেও পত্রপত্রিকা আসত। রেডিও বেইজিং, রেডিও তেহরান, রেডিও বিবিসি, রেডিও ভয়েস অফ আমেরিকা এগুলোর নিয়মিত শ্রোতা ছিলেন আব্বা ও বড় ভাই এবং তাদের সুবাদে আমরা ভাইবোনেরাও।  এছাড়া বই পড়ার একটা অভ্যাস ছিল পরিবারের সবার মাঝেই, আব্বা ছিলেন অসম্ভব র্যাপিড রিডার। লিবিয়ার গাদ্দাফীর সবুজ বই যেমন ছোটবেলাতেই পড়েছি, তেমনি রাগুদা প্রকাশনীর বইও। শরত-ফাল্গুনী-নিমাই তো রয়েছেনই। আমার মা খুব ভালো কিতাব পড়তেন। আমার মনে আছে, গাজী কালু চম্পাবতী, সোনাভানের পুঁথি যেমন মার কাছে শুনেছি, তেমনি বিষাদ সিন্ধুও। আমাদের এলাকাটা লোকধর্ম প্রভাবিত। বেহুলা লখিন্দর, মনসার কিচ্ছা এসব আমরা শুনে শুনে বড় হয়েছি।শৈশব-কৈশোরে পাওয়া এই আবহ-সান্নিধ্য-সুযোগ ও সংস্কৃতিই হয়তো সাংবাদিকতার প্রতি উদ্বুদ্ধ-দুর্বল করার পাশাপাশি প্যাশনের জন্ম দিয়েছে।


আরশি কথা: ঠিক কবে, কিভাবে সাংবাদিক হওয়ার ইচ্ছেবীজ মনে অঙ্কুরিত হলো?

ড. কাজল রশীদ শাহীন: একদম সন তারিখ ধরে মনে নেই। তবে একটা ঘটনার কথা বলতে পারি। আমি তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। সেসময় আমাদের গ্রামের বাড়ি ফিলিপনগর ও বৈরাগীর চর এলাকায় ফি-বছর যাত্রাপালা হতো। সেই যাত্রাপালায় অভিনয়সূত্রে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন আমাদের বড় ভাই। এবং অন্য যারা ছিলেন তারাও কেনো না কোনো সূত্রে খুবই নিকটজন এবং সম্পর্কটা উঠোন-বাড়ির মতো। ওই বছরের যাত্রাপালায় কেন যেন অশ্লীল নৃত্যের পরিমাণ বেড়ে গেল। অথচ আমাদের ওখানকার সংস্কৃতিটাই ছিল এমন, যাত্রাটাই মূখ্য। এবং মঞ্চস্থ হওয়া প্রতিটি পালাই হতো কাহিনী প্রধান। কিন্তু ওইবার সেই ধারাবাহিক ঐতিহ্য বাধাগ্রস্ত হলো এবং নৃত্যটাই মুখ্য হয়ে উঠল। শুধু তাই নয়, নৃত্যের নামে চরম অশ্লীলতা এবং দেদারছে জুয়ো খেলা চলল। যা নিয়ে সবার মধ্যেই এক ধরণের অস্বস্তি কাজ করছিল, কিন্তু আয়োজক কর্তৃপক্ষের চোখ রাঙানিতে কেউ চাইলেও যেহেতু কিছু বলতে পারছিল না, তাই সবাই স্রোতে গা ভাসিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিল। বিষয়টা আমাকে আহত করে। আমি এই নিয়ে একটা রিপোর্ট লিখে ইস্পাত পত্রিকায় পাঠিয়ে দিই।

আমার সেই রিপোর্টটা কিছু যোজন-বিয়োজন করে সম্পাদকীয় হিসেবে ছাপানো হয়। এখন আমি বুঝি সেদিন আমি আসলে রিপোর্ট নয় সম্পাদকীয়ই লিখেছিলাম। শিরোনাম দিয়েছিলাম, যাত্রাপালায় নৃত্যের নামে অশ্লীলতা/ অপসংস্কৃতি বন্ধ হোক। যাই-ই হোক, সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক হয় এবং অ্যাকশন শুরু করে। জুয়ো খেলা ও অশ্লীলতা বন্ধ হয়। অন্যদিকে, সবার ভেতরে একটা প্রশ্ন তৈরি হয় কে এই কাজটা করলো। এমনকি আমাদের বড় ভাইও মনে মনে খুঁজে ফিরছিল কে এই কাজটা করেছে। এই খবরে কেউ কেউ ভেতরে ভেতরে খুশি হলো, কেউ কেউ অখুশি। কিন্তু অজানাই থেকে গেল কার কাজ এটা। ঘটনাটা এই প্রথম আমি আপনার কাছে বললাম, এতদিন কারও কাছে বলিনি।

এই ঘটনা আমার ভেতরে সাংবাদিক হওয়ার বীজ অঙ্কুরোগদম ঘটিয়েছে হয় তো। সন্তানের প্রকৃত জন্মদিন কিন্তু মাও বলতে পারেন না। আমরা ভূমিষ্টদিনকে জন্মদিন বলে চালিয়ে দিই। কিন্তু জন্মদিন হলো তো সেই ক্ষণ, যখন শুক্রানু আর ডিম্বানু মিলিত হয়েছে। সুতরাং কোন্ ঘটনা কবে আমাকে সাংবাদিকতার প্রতি উৎসর্গীকৃত করেছে বলাটা দুরুহ।

তবে ওই ঘটনার কয়েকটা দিকের মধ্যে একটা দিক সবিশেষ গুরুত্ববহ। আমি ইস্পাত পত্রিকার সাংবাদিক ছিলাম না। যাত্রাপালায় অশ্লীল নৃত্য হচ্ছে বিষয়টা জানত ওই পত্রিকার কমপক্ষে দুইজন সাংবাদিক, যারা নিউজটা কিল করেছেন। আমি সাংবাদিকতায় ‘নিউজ ব্যাংক’ বলে যে ধারণা বা তত্ত্বের কথা বলি তা কিন্তু আমি পেয়েছি এই ঘটনা থেকে। এটা যদি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে সাংবাদিকতায় আমূল পরিবর্তন আসবে। শুধু আমাদের দেশে নয় সারা বিশ্বেই এটা কাজে লাগানো যেতে পারে। আর এটা কাজে লাগালেই সাংবাদিকতা সর্বত্রগামী হবে এবং দেশ ও দশের যথার্থ কল্যাণ সাধন হবে। যে যে কারণে একটা সমাজ-সম্প্রদায়-রাষ্ট্র পিছিয়ে থাকে তা অনেকাংশেই দূর করা সম্ভব হবে যদি নিউজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা যায় এবং এর মধ্যে দিয়ে সংবাদপত্রের স্বাবলম্বি হওয়ার বীজও নিহিত রয়েছে। এটাকে আবার সিটিজেন জার্নালিজমের সঙ্গে মিলিয়ে ফেললে হবে না।


আরশি কথা: এই সাংবাদিকতা পেশায় এসে তৃপ্ত? 

ড. কাজল রশীদ শাহীন: চারপাশের সবাই অতৃপ্ত। ভাইবোনদের এসব নিয়ে খুব বেশি হা-হুতাশ নেই। উনারা নিশ্চিত জীবিকা চাইলেও কিছুটা ব্যতিক্রম। আমার মেজ বোন কবিরন নেছা, আমাদের পরিবারের একমাত্র সরকারি চাকরিজীবী যিনি, খুব করে চেয়েছিলেন, আমি যেন বিসিএস দিই। কিন্তু আমি কখনোই সে পথে পা মাড়াইনি। আমি কখনো অন্য চাকরির জন্য কোথাও ট্রাই করিনি, এমনকি আবেদনও না। কারণ আমি স্বেচ্ছায় সাংবাদিক হয়েছি, কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে নয়। এই শহরে আমি একাধিকবার চাকরিহারা, চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছি। কিন্তু এই পেশার প্রতি বিন্দুমাত্র বিরাগ হয়নি। আমি তো অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। আমার প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় মনে হয়েছে, এই কাজ করার পর আমাকে বেতনও দেয়া হচ্ছে! কারণ আমি তো কাজ করছি না আনন্দ করছি, লিখছি-পড়ছি-কাটাকুটি করছি, তথ্য সংগ্রহ করছি সবই তো আমার জন্য ভীষণ আনন্দের, যাতে কোনো ক্লান্তি কাজ করে না। আনন্দের কাজ করলে আবার বেতন দেয় নাকি? এই ভাবনা আমার সহকর্মীদের শেয়ার করলে, তারা একযোগে বলে উঠেছে, বস এই কথা খবরদার মালিককে বলেন না। হ্যাঁ, এই প্রশ্নও কাজ যে করে না, তা কিন্তু নয়। সেটা হলো- এত কাজ করার পরও আমরা সাংবাদিকরা কেন ন্যায্য সম্মান ও সম্মানী থেকে বঞ্চিত হই?

আপনার প্রশ্নের উত্তর এর আগেও আমাকে অনেকবার দিতে হয়েছে। আমি সর্বদায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শরণ নিয়ে বলেছি, ‘আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান।’ সুতরাং, আমার কোনো খেদ নেই, উল্টো ভালবাসা আছে, গভীর গভীরতর ভালবাসা।

আরশি কথা: সাংবাদিক না হলে কী হতেন? অর্থাৎ ছোটবেলা কী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।

ড. কাজল রশীদ শাহীন: সাংবাদিক না হলে কী হতাম আমার ভাবনাতে নেই। তবে ছোটবেলায় অনেক কিছুই হতে চেয়েছি। প্রথম থেকেই লেখক হতে চেয়েছি। পাশাপাশি আরো কিছু ইচ্ছে ছিল। যেমন, একটা সময় পর্যন্ত আমাদের বাড়ির রাখালদের দেখে রাখাল হওয়ার খুব ইচ্ছে ছিল। এর পেছনে অবশ্য একটা যৌক্তিক কারণ ছিল, আমার মনে হতো রাখালরা, সারাদিন কাজ করলেও সন্ধ্যার পর স্বাধীন। তখন ওরা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। বিশেষ করে গল্প শুনতে পারে, যাত্রা দেখতে যেতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্রীযুক্ত নারায়ণ চন্দ্র বাবু একটা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, আজও আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, তিনি কেন বলেছিলেন এই কথা? পঞ্চম শ্রেণির শেষ ক্লাশ ছিল সেদিন। আমরা এর পর পরীক্ষা শেষে মাধ্যমিকে চলে যাব সেকারণে সবারই মন খারাপ। স্যার সবার সম্পর্কে বলেছিলেন, আমাকে বললেন, কাজল অনেক বড় রাজনীতিবিদ হবে। তবে আমি আজও লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখি, এবং নিজেকে তৈরি করার চেষ্টায় আছি। আমি মনে করি, আমার সাংবাদিকতা লেখক হওয়ার অন্যতম এক পাথেয়। লেখক হওয়ার করণ-কৌশল খুঁজে ফিরছি সাংবাদিকতার মধ্য দিয়েই। এবং লেখক হতে চাই বলেই সাংবাদিকতার বাইরে এখন পর্যন্ত ভুল করেও পা বাড়াইনি। 


আরশি কথা: অধিকাংশ সাংবাদিকদের ভেতরই কিছু অতৃপ্তি, হতাশা দেখা যায়। এ থেকে উত্তরণের উপায় কী?

ড. কাজল রশীদ শাহীন: হতাশা কোনো কাজের কথা নয়। হতাশা থাকলে অন্য পথে হাটতে হবে। আপনি পাহাড়ে ওঠার স্বপ্ন দেখবেন আর উচ্চতাভীতিকে প্রশ্রয় দেবেন, তাতো কোনো কাজের কথা হতে পারে না।

আরশি কথা: আপনি তো মূলত প্রিন্ট মিডিয়ার মানুষ। ইদানীং একটা কথা শোনা যায়- অনলাইনের যুগ আসছে। প্রিন্ট বেশিদিন টিকবে না। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?

ড. কাজল রশীদ শাহীন: অনলাইনের যুগেও ছাপানো পত্রিকা টিকে থাকবে। আমার বিশ্বাস আমরা কখনো সেই পৃথিবীতে যেতে পারব না, যেখানে ছাপানো পত্রিকা বলে কিছু থাকবে না। অনলাইনের যুগ আসছে এসেও গেছে, তবে প্রিন্ট মিডিয়াকে ছাপিয়ে অনলাইন যেতে পারবে কিনা তা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে। আমার মনে হয়, অনলাইন ছাপানো পত্রিকার একটা অংশ হিসেবে বিকশিত হবে এবং ছাপানো পত্রিকার প্রভাব-জনপ্রিয়তা ও মুনাফা অর্জনের পথকে আরো বেশি শক্তি ও সামর্থ্য যোগাবে।


আরশি কথা: বাংলাদেশের প্রিন্ট মিডিয়া অর্থাৎ ছাপানো পত্রিকার ভবিষ্যৎ কী?

ড. কাজল রশীদ শাহীন: শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীজুড়েই প্রিন্ট মিডিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে ছাপানো পত্রিকা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে পৃথিবীর কিছু কিছু দেশে যখন ছাপানো পত্রিকার সংখ্যা কমে আসছে, তখন কিছু কিছু দেশে ছাপানো পত্রিকার সংখ্যা বেড়েছে। এটা কেন হয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর তালাশ করা জরুরি। আমি ছাপানো পত্রিকার অর্থাৎ প্রিন্ট মিডিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই শঙ্কিত হতে রাজি নই। শুধু বাংলাদেশে নয় দক্ষিণ এশিয়াতেই ছাপানো পত্রিকার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যৌক্তিক কারণ রয়েছে বলে আমি মনে করি না। এখন অভিভাবক যদি যথাযথ পুষ্টির যোগান না দিয়ে সুস্থ-সবল-কর্মঠ সন্তান প্রত্যাশা করে তাহলে কি সেটা যুক্তিযুক্ত হবে? হ্যাঁ, একথা সত্য, প্রযুক্তির কারণে অনেক কিছু খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, সেই ধাক্কা ছাপানো পত্রিকার ওপর এসেও পড়েছে। সেই ধাক্কাকে মোকাবিলা করতে হবে এবং এটাই সংবাদপত্রের জন্য এখন চ্যালেঞ্জ। মনে রাখতে হবে ছাপানো পত্রিকাকে এর আগেও অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। রেডিও-টেলিভিশন যখন এসেছে তখনো কিন্তু মনে করা হয়েছিল ছাপানো পত্রিকার বুঝি ইতি ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু তেমনটা কিন্তু হয়নি। এবারের চ্যালেঞ্জটা হয়তো সর্বগ্রাসী, কিন্তু মোকাবিলা করা সম্ভব নয়, এমনটা আমি অন্তত মনে করি না। বরং যে চ্যালেঞ্জগুলো এসেছে সেগুলো অ্যাডাপ্ট করে নিলে ছাপানো পত্রিকা আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। ছাপানো পত্রিকাকে একটা ঘরের সঙ্গে তুলনা করে আমরা চ্যালেঞ্জগুলোকে উইন্ডো হিসেবে কাজে লাগাতে পারি। 

এই যে করোনাকালে বিভিন্ন পত্রিকায় যে হারে সাংবাদিক ছাটাই করা হলো এবং হচ্ছে এটা কি শুধুই সক্ষমতার অভাব বলে হচ্ছে নাকি অন্য আরো অনেক কারণ রয়েছে। আবার এই সময় কোন পথে কিভাবে এগুনো যেতে পারে, সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে, সেটা নিয়ে কোথাও কোনো আলোচনা নেই। বরং সবাই চেনা পথে হাঁটছে। চেনা পথে হেঁটে অচেনা করোনা মহামারী দুর্যোগ শুধু নয় কোনো বাধা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। আপনিও ভিডিওটা দেখেছেন মনে হয়- বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মিলে একটা আবেদন জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের চাকরি থেকে যেন অব্যাহতি দেয়া না হয়।

খেয়াল করবেন, সেখানে কিন্তু কোনো পরামর্শ নেই। শিক্ষকরা যদি কয়েকটা পথা বাতলিয়ে দিতেন, এবং সেটা পেশ করতেন তাহলে অনেক বেশি কার্যকর কিছু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতো। চার/পাঁচটা উপায় তারা যদি বলতেন তাহলে হয়তো অন্যকিছু হতো। আমরা সবাই শুধু কথার কথা বলছি। সেখানে কোনো গবেষণা নেই। যথার্থ গবেষণা ছাড়া বড় কিছু যেমন হয় না তেমনি বড় ধাক্কা সামাল দেয়াও যায় না। আমাদের এখানে কিন্তু তেমন প্রতিষ্ঠান নেই বললেই চলে যার নিদেনপক্ষে অর্ধশতাব্দীর অভিজ্ঞতা রয়েছে। ব্যতিক্রম দুই একটা বাদে যে কয়েকটা রয়েছে সেগুলো কিন্তু রুগ্ন, অর্ধমৃত, অনাধুনিক এবং অরুচিকর। অথচ অন্যত্র দেখেন একশ-দেড়শা বছরের অভিজ্ঞতায় তারা ঋদ্ধ। তাহলে এই জার্নিতেও তারা যদি টিকে থাকতে পারে এবং আমরা কেন পারিনি, কেন পারবনা সেই প্রশ্নের উত্তরও তালাশ করা প্রয়োজন। 

আরশি কথা: অধিকাংশ পত্রিকার মালিকপক্ষ সারাবছর লোকসান হচ্ছে বলে দাবি করে। এ অযুহাতে অনেক প্রতিষ্ঠান সংবাদকর্মীদের বেতন-ভাতা নিয়েও অনিয়ম করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান চালিয়ে রাখে ঠিকই। এর যৌক্তিক কী কারণ আছে বলে মনে করেন?

ড. কাজল রশীদ শাহীন: এখানে একটা গ্রে-স্তর রয়েছে, যা নিয়ে গভীরভাবে ভাবা দরকার। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো যেসকল কর্তৃপক্ষ সারা বছর লোকসানের গীত গান, তারা কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন না। আমার মনে হয়, আমাদের এখানে মালিক-সম্পাদক-সাংবাদিকদের মধ্যে যে ত্রিভুজ কাঠামো গড়ে ওঠা দরকার সেটা এখনো চলমান। সংবাদপত্র একটা শিল্প, কিন্তু সৃজনশীল শিল্প। এখন আর দশটা শিল্পের মতো এটা যেমন নয়, তেমনি এটা আদতে কী, এবং কীভাবে, কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এটা পরিচালিত হবে সেই জায়গাটাও তো একটা খামতি রয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা পড়ানো হয়। এবং আমাদের শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকরা অসম্ভব নিষ্ঠার সঙ্গে সিলেবাস মেইনটেইন করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল যে কাজ গবেষণা সেটা কিন্তু প্রত্যাশিতরূপে হয় না। আবার যেগুলো হয়, তার সঙ্গে মাটি ও মানুষের সম্পর্ক কতোটা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সংবাদপত্রশিল্পের এই যে সংকট তা নিয়ে তাদের কোনো ফাইন্ডিংস রয়েছে? নেই। তারা তো জ্যাক লাকা ও মিশেল ফুকোর নিচে নামতেই পারেন না। ভালো, সেটা নিয়ে থাকুন। বেদের মেয়ে জোছনা নিয়ে থাকুন। তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু এদিকটাতেও একটু মনোযোগ দেন, আপনার শিক্ষার্থীরা যে অনার্স-মাস্টার্স করে রাস্তায় ভ্যাঁ-ভ্যাঁ করে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বিপথে বিপাকে যাচ্ছে, সেদিকে একটু দৃষ্টি দিন। পদ-পদবী-তারকাখ্যাতি তো অনেক হলো, এবার সন্তানের দিকে তাকান।

আপনার প্রশ্নের উত্তরে শুধু বলি, যৌক্তিক কারণ নেই। তবে জটিলতা রয়েছে যেটা মাকড়শার জালের মতো বিস্তৃত এখান থেকে বেরোতে হলে খোলনলচে পাল্টাতে হবে। এবং প্রত্যেকের যে মাইন্ডসেট আপ সেটা থেকেও বেরোতে হবে।

আরশি কথা: অনেক প্রতিষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রাপ্য আদায়-অনাদায়ের জন্য মালিক পক্ষের পাশাপাশি সম্পাদককেও দায়ী করা হয়। আপনি নিজেও একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই জায়গা থেকে আপনার কী মনে হয়?

ড. কাজল রশীদ শাহীন: অবশ্যই সম্পাদকরা দায়ী, কিন্তু সকল সম্পাদক নন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার এক শিক্ষক এক রাতে ফোন দিয়ে কুশলাদি বিনিময়ের পর বললেন- আজ এক সম্পাদকের বাসায় ডিনার করলাম। তার বাসার জৌলুস দেখে তো ভিমড়ি খেলাম, কাজল। শিল্পপতির বাসাকেও হার মানিয়েছেন উনি। অথচ সেই সম্পাদকের অফিসের সাংবাদিকরা কেউ ওয়েজবোর্ড তো পানই না। বেতন কাঠামোও খুবই দুর্বল, শোচনীয় পর্যায়ের। মালিক, সম্পাদকের উপস্থিতিতে আমার চাকরিজীবনের এক ইন্টারভিউয়ে, আমি যে বেতন চেয়েছি, সেটা দিতে মালিক রাজি, কিন্তু সম্পাদক নন। উনি আমাকে যোগ্য মনে করছেন, কিন্তু প্রত্যাশিত বেতন দিতে রাজি নন। একটা পর্যায়ে সম্পাদক বলে বসলেন, ওয়েজ বোর্ডও তো এই বেতন অনুমোদন করে না। আমি বললাম, ভাই সম্পাদকরা যে বেতন পান, সেটা কি ওয়েজবোর্ড অনুমোদন করে?

সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানে সম্পাদকরা বাবার মতো। কিন্তু ট্রাজেডি হলো, সব বাবা ভালো হলেও সকল সম্পাদক নন। করোনা মহামারী সেটা বোধকরি আমাদের কাছে একেবারে দিবালোকের মতো স্পষ্ট করেছে। আমাদের চেয়ে কিছুটা সিনিয়র একজন সম্পাদক বেশ কিছুদিন আগে একটা সমস্যায় পড়েছিলেন। এতে তার চাকরিটাও চলে যায়। কর্তৃপক্ষ শুধু তাকে বলেছিলেন, আপনি বলেন এর দায় আপনার নয়। কারণ আপনি তো এটা করেননি, যে সাংবাদিক করেছেন, দায়টা মূত তার। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, পত্রিকায় ছাপা হওয়ার পর সকল দায় সম্পাদকের, সুতরাং এটার খেসারত আমাকেই দিতে হবে। ওই সাংবাদিককে নয়। তিনি বিবিসির মতো গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারেও দায়টা নিজের কাঁধেই নিয়েছিলেন। সুতরাং, সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানে যা কিছু হয়, তার কৃতিত্ব যেমন সম্পাদকের, ব্যর্থতার দায়ও সম্পাদকের। এর আগে পরে কিছু নেই, থাকতে পারে না। 


চলবে…


আরশিকথা বাংলাদেশ ব্যুরো

২২শে সেপ্টেম্বর ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.