আবু আলী, গৌহাটি, আসাম থেকে:
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি যাত্রীবাহি গাড়ি চলাচলের সুবিধা প্রয়োজন। কেননা এক্ষেত্রে বাংলাদেশই লাভবান হবে। আমি দিল্লী যাওয়ার সময় অনেক বাংলাদেশি আমাকে অনুরোধ করেছেন যাতে করে তাদের নিজস্ব গাড়ি নিয়ে এয়ারপোর্টে যেতে পারেন।বাংলাদেশের সঙ্গে অন্যান্য বন্দরের মতো আগরতলা বন্দর দিয়ে যাতে সব ধরণের পণ্য আমদানী-রপ্তানি হয় সে দাবি জানান তিনি। এছাড়া নৌপথকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন তিনি। বিদ্যমান বর্ডার হাটের পাশাপাশি নতুন করে আরও বর্ডার হাট স্থাপনের কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি বর্ডার হাটের সেবা বাড়ানো দরকার। বাংলাদেশি উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের ত্রিপুরার বিনিয়োগ ও কারখানা স্থাপনের কথা অনুরোধ করেন।
গতকাল আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে হোটেল র্যাডিসনে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ স্টেকহোল্ডারস মিট ২০১৯-এ ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এসব কথা বলেন।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল দু'দিন ব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথরি বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন প্রতিমন্ত্রী জেনারেল (অব.) ভি কে সিং, আসামের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারী, অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, কেন্দ্রী সরকারের বস্ত্র মন্ত্রনালয়ের সচিব রবি কাপুর, বানিজ্য সচিব ড. অনুপ ওয়াধা, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার রকিবুল হক, এডিবির কান্টি্র ডিরেক্টর কেনিচি ইয়োকাআমা, ভারতীয় চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি মায়ান জালান প্রমুখ।
ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক দিল্লী সফরে যা আমরা পেয়েছি তা আরো এগিয়ে নিতে হবে। বাধা দেয়ার চেষ্টা হতে পারে কিন্তুু দু'দেশের জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে তা উপেক্ষা করতে হবে। আসাম ত্রিপুরাসহ উত্তরপূর্বাঞ্চলের ৬ রাজ্য চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করলে বাংলাদেশও লাভবান হবে। ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সমস্যা পরিবহন খরচ এবং সময়। কারণ মূল ভুখন্ড থেকে এখানে পণ্য আনতে অনেক সময় লেগে যায়। এজন্য নদী পথকে সচল করতে পারলে আমাদের দূরত্ব ১২শ কিলো মিটার থেকে কমে ৬শ কিলো মিটারে নেমে আসবে। ফলে পণ্যের মূল্য অর্ধেক হবে। বাংলাদেশের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারলে আমাদের অনেক খরচ কমবে। এতে বাংলাদেশও লাভবান হবে। তিনি বলেন, ত্রিপুরা গ্যাস আছে, আসামে তেল, পাথর ও কয়লা আছে। এছাড়া আছে আমাদের পর্যটনের বিখ্যাত জায়গা। এ অঞ্চলের উন্নয়ন হলে বাংলাদেশও লাভবান হবে। আর যে কোনও উন্নয়নের জন্য ভালো যোগোযাগ ব্যবস্থা পূর্ব শর্ত। চট্টগ্রাম বন্দরে টার্নওভার বাড়লে তাতে বাংলাদেশও উপকৃত হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে হলে দু'দেশের মধ্যে স্থল ও নৌপথে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোর জন্য এটা অবশ্যই জরুরি হয়ে পড়েছে। আজ মঙ্গলবার ভারতের আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ স্টেকহোল্ডার্স মিট ২০১৯' এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। ভারতের আলোচকরা বলেন, আসাম ত্রিপুরাসহ উত্তরপূর্বাঞ্চলের ৬ রাজ্য চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করলে শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশও লাভবান হবে।
এছাড়া ট্রাক চলাচলে আরও সহজীকরণ করতে হবে। বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের ত্রিপুরায় আহ্বান করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। বিমান পরিসেবা বাড়ানোর কথাও বলেন তিনি।
২৩শে অক্টোবর ২০১৯
২৩শে অক্টোবর ২০১৯