আবু আলী, ঢাকা ॥
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “আপাতত ১৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আজ মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে করোনা মোকাবেলায় সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের এই দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বাড়িতে থাকতে হবে। এই সময়ে সকল ধরনের কোচিং, প্রাইভেটসহ আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া যাবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ১ এপ্রিল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞ মতামত ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে যা কিছু করা প্রয়োজন তার সবই করা হবে। গ্রীষ্মকালীন ছুটি ও রমজানের ছুটির সাথে এই ছুটি সমন্বয় করা হবে বলেও তিনি জানান। এছাড়া ১৮ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশিদের মাস ভিসার মেয়াদ আরও তিন বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
বাংলাদেশে নতুন করে আরও ৩ করোনা রোগী শনাক্ত: বাংলাদেশে নতুন করে আরও তিন জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আট জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিন জন সুস্থ হয়ে গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে আছেন পাঁচ জন।
১৬ মার্চ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল নমুনা পরীক্ষার পর আরও তিন জনের মধ্যে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সর্বমোট আট জনের ভেতরে এখন করোনার উপস্থিতি রয়েছে। নতুন তিন জন আগে যারা নিশ্চিত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে একজনের পরিবারের সদস্য। নতুন তিন জনের মধ্যে এক জন নারী ও দুজন শিশু রয়েছে।’
মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘আমরা আবারও অনুরোধ করছি, যারা বাইরে থেকে আসছি, তারা যাতে পরিবারের কাছ থেকেও দূরত্ব বজায় রাখি। আমরা হোম কোয়ারেন্টিন করাটা নিশ্চিত করতে পারবো। কিন্তু, পরিবারের ক্ষেত্রে পরিবারেরও ভূমিকা নিতে হবে। যদি সেক্ষেত্রে পালন করা সম্ভব না হয়, তাহলে আমাদের প্রাতষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।’
যে তিন জন নতুন শনাক্ত হয়েছে তাদের আমরা হাসপাতালে এনেছি। তাদের মধ্যে উপসর্গ মৃদু। তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো। কিন্তু, তাদের কাছ থেকে যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তাই তাদের আমরা আইসোলেশন ও পর্যবেক্ষণে রেখেছি।
১৬ই মার্চ ২০২০