Type Here to Get Search Results !

নরেন্দ্র মোদি, একজন যুগান্তকারী উদ্যোগ নেয়া জননেতাঃ বাংলাদেশ থেকে সৈয়দ ইফতেখার’র বিশ্লেষণ

আমি বাংলাদেশ থেকে বলছি। আর ভাবছি। ভাবছি করোনাভাইরাস নিয়ে। কী ভাবছি? ভাবছি, বেশি দূরে যেতে হবে না। পাশের দেশ ভারত ও তাদের উদ্যোগগুলো নিয়ে। করোনা প্রতিরোধে তাদের সাফল্য নিয়ে। প্রথমে রোববার(২২ মার্চ) দিনব্যাপী একদিনের সাধারণ কারফিউ জারি করে জনগণকে অভ্যস্ত করা হলো। কোটি কোটি মানুষের মধ্যে গড়ে তোলা হলো কোভিড-নাইনটিনের সচেতনতা। এর মাধ্যমে ভাইরাসের চেইন ভাঙার প্রচেষ্টা ছিল। এরপর পশ্চিমবঙ্গে মাত্র চারজন করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার পরই রাজ্যজুড়ে লকডাউন করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যটিতে ৭ কোটি ৯০ লাখ মানুষ রেশনে প্রতি মাসে ২ রুপি কেজি দরে চাল পেতেন; এখন সেটি বিনামূল্যে দেয়া হবে বলে জানান মমতা। এভাবে দেয়া হবে ছয় মাস। এর মধ্যে মঙ্গলবার (২৪শে মার্চ) মধ্যরাত থেকে ভারতজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়, যা চলবে ১৫ই এপ্রিল অব্দি। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি করোনাভাইরাস রুখতে এই ঘোষণা দিয়েছেন। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে তিনি হাত জোড় করে দেশবাসীকে এই নির্দেশনা মানার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, প্রত্যেক ভারতীয়র পরিবারের সদস্য হিসেবে তিনি এই আকুতি জানান। ভুলে যেতে বরেন বাইরের জীবন। বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলো নিরন্তর কাজ করবে। মোদি জানান, মানুষ যাতে সব জরুরি পরিষেবা পান, তা সুনিশ্চিত করতে একজোট হয়ে কাজ করছেন সবাই। এই নির্দেশনা না মানলে ভারত অন্তত ২১ বছর পিছিয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেন মোদি। বলেছেন, করোনাভাইরাস ভারতকে ধ্বংস করে দেবে। যদি না মানুষ সচেতন হন, লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ডেকে আনবে। তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে, জনবহুল ভারত কোনো ভুল করতে চায় না। এমনই কথা হওয়া উচিত একজন নেতার। যতই আপনি মোদির নানা কার্যক্রমের জন্য সমালোচনা করেন না কেন, তিনি যে একশ কোটির বেশি জনগণের দায়িত্ব নিজে নিলেন তা অবশ্যই প্রশংসার। এ জন্য কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কিংবা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিকে তাকাতে হবে না, প্রতিবেশী ভারতের দিকেই দেখুন। সচেতন হোন। এখন কথা হলো, জনবহুল ভারত, জনগণের কথা ভাবছে। ভেবেছে। ভেবে সিদ্ধান্তও নিয়েছে। ২১ দিনের লকডাউন করা মানে হলো পুরো করোনার চেইন অব কমান্ড ভেঙে ফেলা। এটি বিশাল ব্যাপার। আমাদের মতো (বাংলাদেশের মতো) দেশটিতে কেউ গ্রামে ছুটে যাননি। যে যেখানে আছেন, সেখানেই থেকেছেন। এটাকেই বলে দেশপ্রেম। যা মুখে বলে হয় না, কাজে কর্মে প্রকাশ করতে হয়। ভারত বরাবরই যা প্রমাণ করছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের থেকে প্রায় ২২ গুণ বড় ভারতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫০০'র কিছু বেশি। সুস্থ হয়েও বাড়ি ফিরছেন অনেকে। মারা গেছেন কেবল ১০ জন। সরকারি উদ্যোগের ফলে অনেকটা বিপদ কাটিয়ে উঠছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ। দেশটির স্বাস্থ্য পরিষেবাকে মজবুত করতে ১৫ হাজার কোটি রুপি ইতোমধ্যে বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আইসোলেশশন বেড, আইসিইউ, ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আরও উন্নত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা।

সৈয়দ ইফতেখার, সাংবাদিক,
বাংলাদেশ

২৫শে মার্চ ২০২০

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.