আবু আলী, ঢাকা, আরশিকথাঃ
অসম ও ত্রিপুরার সঙ্গে নৌপথে বাণিজ্য শুরু হওয়ার পর নদীপথের নাব্যতা সংকটের কারণে বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ভারত-বাংলাদেশের নৌ বাণিজ্য। পাশাপাশি ধুবরী থেকে বাংলাদেশে পাথর রপ্তানি কার্যক্রমও ধুকছে। করিমগঞ্জ দিয়ে পাথর রপ্তানি শুরু হলেও নাব্যতা সংকটে তা নিয়মিত হবে কিনা- তা নিয়ে রয়েছে ধোয়াশা। দু’দেশের নৌপথে নাব্যতা সংকট নিরসনে যৌথ উদ্যোগে ড্রেজিং চালু হলেও তা কাজে আসছে না। ড্রেজিংয়ের কাজ নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। এমন অবস্থায় দুই দেশের নৌপথের কার্যকর ড্রেজিং না হলে নৌ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার নৌ প্রটোকলের আওতায় নৌপথে পণ্য পরিবহণ উদ্বোধন করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে গোমতি নদী দিয়ে বাংলাদেশের কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে ত্রিপুরার সোনামুড়ায় গেছে পণ্যের প্রথম চালান। আর চলতি মাসের প্রথমে বাংলাদেশের সিলেটের কুশিয়ারা নদী দিয়ে দ্বিতীয় চালান এসেছে করিমগঞ্জে স্টিমারঘাটে। কিন্তু এই দুই নৌপথেই নাব্যতা সংকটসহ রয়েছে কম উচ্চতার ব্রিজের সমস্যা। বাংলাদেশের আশুগঞ্জ থেকে করিমগঞ্জের মাঝপথে কার্গো জাহাজ থেকে ছোট ট্রলারে করে পণ্য পরিবহণ করা হয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশি পণ্যের জাহাজ গ্রহণের পূর্ব নির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এ ছাড়া গত ৯ মাস আগে অসমের ধুবরি ও বাংলাদেশের চিলমারী নৌবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি শুরু হলেও এখন নাব্যতা সংকেটে ধুকছে। দু’দেশের যৌথ উদ্যোগে এ নৌপথে ড্রেজিংয়ের কাজ চললেও তা কোনো কাজে আসছে না। প্রতির্মহুর্তে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় ড্রেজিং স্থায়ী হচ্ছে না বলে দাবি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ সংস্থা বিআইডাব্লিউটিএ-এর অতিরিক্ত পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে দু’দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণে কিছু সমস্যা হলেও আগামীতে তা থাকবে না। দুটি নৌপথে যৌথ উদ্যোগে ড্রেজিং চলছে।
বাংলাদেশের নৌ পরিবহণ মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) ভোলানাথ দে জানান, ত্রিপুরার সঙ্গে নৌ রুটে গোমতী নদী ড্রেজিংয়ের জন্য একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। সেটা খুব দ্রুত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) উঠবে।
তিনি বলেন, ধুরবী-চিলমারী রুটে দু’দেশের যৌথ উদ্যোগে ড্রেজিং চলছে। কিন্তু ড্রেজিং স্থায়ী হচ্ছে না। কারণ নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টা নিয়ে ভারতীয় ঠিকাদার বিআইডাব্লিউটিএ’র আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এখন ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থ্যাৎ যেখানে নৌকা আটকে যাবে সেখানেই ড্রেজিং করে কিয়ার করা হবে।
এ বিষয়ে ভারতের ধুবরীর পাথর রপ্তানিকারক আতাউর রহমান জানান, নাব্যতা সংকটের কারণে ভেসেলগুলো আটকে যাচ্ছে। এখান থেকে আগে প্রতিদিন ভেসেল ছেড়ে যেত। কিন্তু এখন সপ্তাহে একটি পাথরবোঝাই ভেসেল যাচ্ছে।
গত ৯ মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টন পাথর রপ্তানি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতের ১২ থেকে ১৫ জন রপ্তানিকারক রয়েছে। কিন্তু নৌপথের সমস্যার কারণে অনেকের রপ্তানির আগ্রহ কমে যাচ্ছে।