বছরের ৩০০ দিন কি ঘুমিয়ে থাকা যায়? যায়! গল্প নয় সত্যি! রাজস্থানের বাসিন্দা পুরখারামের ক্ষেত্রে এমনটাই হয়। ৩৬৫ দিনের মধ্যে ৩০০ দিনই ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন ৪২ বছরের ব্যক্তি। আর এতেই ‘কুম্ভকর্ণ’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। বাঙালি পরিবারে কুম্ভকর্ণের নাম তখনই উচ্চারণ করা হয়, যখন কেউ একটু বেশিই ঘুমিয়ে থাকেন। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, রাবণ ও কুম্ভকর্ণ তপস্যায় ব্রহ্মাকে তুষ্ট করেছিলেন। রাবণ তাঁর কাঙ্খিত বর পেয়েছিলেন। তবে কুম্ভকর্ণের যখন ব্রহ্মাদেবের কাছে বর চাওয়ার পালা আসে, ইন্দ্রদেবের অনুরোধে দেবী সরস্বতী তাঁর জিহ্বা আড়ষ্ট করে দেন। আর সেই কারণেই নাকি ‘ইন্দ্রাসনে’র বদলে ‘নিদ্রাসন’ চেয়েছিলেন কুম্ভকর্ণ। তাঁর সেই ইচ্ছে পূরণ করেছিলেন ব্রহ্মাদেব। বছরের ছয় মাস ঘুমিয়েই থাকতেন কুম্ভকর্ণ। পুরখারাম ‘কুম্ভকর্ণ’ উপাধি অবশ্য নিজগুণে পাননি। অ্যাক্সিস হাইপারসোমনিয়া নামের একটি বিরল রোগ বাসা বেঁধেছে তাঁর শরীরে। এতে আক্রান্ত মানুষজন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে ঘুমোতে থাকেন। ২৩ বছর আগে এই সমস্যা শুরু হয়েছিল। এখন একটানা ২৫ দিন ঘুমিয়ে থাকেন পুরখারাম। রোজগারের জন্য একটি মুদি দোকানও খুলেছিলেন। তাঁর ঘুমের ব্যামোর কারণে সেটিও বছরের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে। এমনও হয়েছে দোকানে বসে থাকতে থাকতেই ঘুমিয়ে পড়েছেন। সে ঘুম ভাঙানোর সাধ্য কারও নেই। তাহলে কীভাবে চলে রাজস্থানের কুম্ভকর্ণের? পরিবার, আত্মীয় ও পাড়ার লোকজনই তাঁর খেয়াল রাখেন। পুরখারাম ঘুমিয়ে থাকলে সেই অবস্থাতেই তাঁকে খাইয়ে দেন তাঁর স্ত্রী লিছমিদেবী। ঘুমন্ত অবস্থাতেই তাঁকে স্নান করানো হয়। অনেক ডাক্তার দেখিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তবে পুরখারামের মা কঁওয়ারি দেবীর আশা, তাঁর ছেলে একদিন সুস্থ হবে, আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে।