নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা,আরশিকথাঃ
বুধবার আগরতলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভারতের ৭৩তম প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন করা হয়।

এদিন সকালে সরকারি বাসভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ বিধানসভা ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা পুলিশ এবং টিএসআর বাহিনীর জওয়ানরা কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ শ্রীচক্রবর্তী সমবেত কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী প্রজাতন্ত্র দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারির এই দিনে দেশের সংবিধান কার্যকর হয়। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত মানুষের মৌলিক অধিকার এবং তার সুরক্ষা কবজ সবকিছু সংবিধানে উল্লেখিত আছে। তিনি বলেন, শক্তিশালী রাষ্ট্র ব্যবস্থা তখনই প্রতিষ্ঠিত হয় যখন সমস্ত মানুষের অধিকারগুলি সুরক্ষিত হয়। অনুষ্ঠানে বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে আত্মবলিদানকারী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ার স্বপ্ন নিয়ে সকলকে এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমানে ত্রিপুরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য সমস্ত দিক থেকে নিজেকে তৈরি করে নিয়েছে।

এদিকে সচিবালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ দেশের সংবিধান ও সংবিধান প্রণেতাদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশের সাংবিধানিক অঙ্গীকার রক্ষায় আমরা দায়বদ্ধ থাকলেও দেশে কখনও কখনও সেই অঙ্গীকার রক্ষার সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দেশের জনগণের মানসিকতা, দেশভক্তি ও দেশপ্রেমের নতুন এক প্রভাব তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি গান্ধী বিকাশ সমিতি ও সদর মহকুমা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে গান্ধীঘাটে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পুরপারিষদ তুষার কান্তি ভট্টাচার্য, সদর মহকুমা শাসক অসীম সাহাসহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকগণ। এদিকে অ্যালবার্ট এক্কা পার্কের শহীদ বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে দেশের শহীদ ও বীর জওয়ানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ। অনুষ্ঠানে টিএসআর-১১ নং ব্যাটেলিয়নের হাবিলদার মুকেশ মজুমদারের নেতৃত্বে জওয়ানগণ বিউগল বাজিয়ে শহীদ বীর জওয়ানদের প্রতি সেলামি প্রদর্শন করেন। এদিকে পুর নিগমের প্রধান কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন মেয়র দীপক মজুমদার, ছিলেন ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত, পুর নিগমের কমিশনার শৈলেশ কুমার যাদবসহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
এদিকে প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ের সামনে পতাকা উত্তোলন করেন দলের রাজ্য কমিটির সভাপতি ড. মানিক সাহা।অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ বিজেপি'র সাধারণ সম্পাদক টিংকু রায়, কাউন্সিলর রত্না দত্ত, সংখ্যালঘু মোর্চার পর্যবেক্ষক জসিম উদ্দিনসহ অন্যান্যরা। ড. মানিক সাহা দেশের সংবিধান রচনার প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার মূল অনুষ্ঠানটি হয় কংগ্রেস ভবনের সামনে।
জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকাসহ অন্যান্য শাখা সংগঠনগুলির পতাকা উত্তোলনের পর উপস্থিত সবাই দেশের বরেণ্য সন্তানদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। উপস্থিত ছিলেন পিসিসি সভাপতি বীরজিৎ সিনহা,প্রাক্তন বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়সহ অন্যান্যরা।প্রতি বছরের মতো এবারও প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপিত হয় আগরতলা প্রেসক্লাবে। এদিন সকালে ক্লাব প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি সুবল কুমার দে। উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাব সম্পাদক প্রণব সরকারসহ অন্যান্য বরিষ্ঠ সাংবাদিকরা।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সংগৃহীত
২৬শে জানুয়ারি ২০২২