Type Here to Get Search Results !

কমলপুর- কুরমাঘাট সীমান্ত হাটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা,আরশিকথাঃ


ভারত ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আত্মিক হৃদ্যতা বাণিজ্যিক প্রসারেও অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে আন্তর্জাতিক জলপথ, ট্রেন সহ বিভিন্ন মাধ্যম, বাণিজ্যিক অগ্রগতি ও শিল্প সম্ভাবনার বিকাশে সহায়ক। বৃহস্পতিবার কমলপুর (ভারত) কুরমাঘাট (বাংলাদেশ) সীমান্ত হাটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী টিপু মুনসি সহ প্রতিনিধিদল। ধলাই জেলার অন্তর্গত কমলপুর মরাছড়ায় ৬৮৫ কানি জমিতে এই সীমান্ত হাটটি নির্মিত হবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫.৩০ কোটি টাকা। সপ্তাহের প্রত্যেক মঙ্গলবার ভারতীয় সময় অনুসারে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই হাট খোলা থাকবে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ভারতের দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় দুই দেশের সুপ্রাচীন মৈত্রীর সম্পর্ক বাণিজ্যিক অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে। বাংলাদেশ হয়ে আন্তর্জাতিক জলপথ, স্পেশাল ইকোনমিক জোন, মৈত্রী সেতু, আখাউড়া হয়ে রেল সংযোগ সহ আগামীদিনে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে যোগাযোগ এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নয়া দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে যা দুই রাষ্ট্রের সমৃদ্ধিতেই অগ্রণী ভূমিকা নেবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৮টি সীমান্ত হাট নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিলো। এরমধ্যে ২টি সক্রিয় রয়েছে এবং আরও ২টি সীমান্ত হাট চালুর প্রক্রিয়া চলছে। দুই রাষ্ট্র একত্রিতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে ক্রম অগ্রসরমান। এরই ফলশ্রুতিতে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে সম্প্রতি বিশেষ অগ্রগতি এসেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বাণিজ্যিক রপ্তানির পরিমাণ। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দুই রাষ্ট্রের সুসম্পর্কে চির ধরানোর বহু অপপ্রয়াস করা হলেও দুই বন্ধু রাষ্ট্রের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকদের ও সম আধুনিক প্রবাহমানতা তা সফল হতে দেয়নি। বর্তমানে আগরতলা থেকে দিল্লি পর্যন্ত সরাসরি চালু হওয়া বিমান সংযোগের ফলে, পর্যটন, চিকিৎসা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ত্রিপুরায় আসা বাংলাদেশের নাগরিকরাও এর সুফল পাবেন। কৈলাসহর বিমানবন্দরটিও চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পাশাপাশি দুই রাষ্ট্রের সুদীর্ঘ সম্পর্কের বিভিন্ন স্মৃতিচারণ করে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী টিপু মুনসি বলেন, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে ভারত যেভাবে দাঁড়িয়েছিলো তা কখনও ভোলার নয়। লক্ষ লক্ষ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিলো ভারত। যার একটি বড় সংখ্যা ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়েছিলো। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার সম্পর্ককে আরও আত্মিক করে তুলেছে বাংলা ভাষা। তিনি বলেন, এই সীমান্ত হাট সহ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক এবং আভ্যন্তরীণ সম্পর্কের বিকাশে গৃহীত বিভিন্ন পরিকল্পনা শিল্প সম্ভাবনা উন্মেষের পাশাপাশি আভ্যন্তরীণ সম্পর্ক সুদৃঢ়করণে অগ্রণী ভূমিকা নেবে। আগামীদিনেও দুই রাষ্ট্র মিলে একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, শিল্পক্ষেত্রে বিকাশে একাধিক পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্যে সম্পন্ন হওয়া ইনভেস্টমেন্ট সামিট রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার বিকাশে এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। মৈত্রী সেতু থেকে শুরু করে একাধিক পদক্ষেপ ভারত বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা নেবে। আগামীদিনে আগরতলা বিমানবন্দরকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবার শুরুর মাধ্যমে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের আরও বিকাশ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা শুভেচ্ছা ও স্মারক বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আব্দুস সহিদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, ত্রিপুরা শিল্প ও বাণিজ্য নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়, বিধায়ক পরিমল দেববর্মা, ধলাই জিলা পরিষদের সভাধিপতি রুবি ঘোষ, ধলাই জেলার জেলাশাসক গোভেকার ময়ূর রতিলাল প্রমুখ।


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ


ছবিঃ সংগৃহীত

৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২২
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.