প্রভাষ চৌধুরী,বাংলাদেশ,আরশিকথাঃ
বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাধীন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কুরমাঘাট-কমলপুর বর্ডার হাটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আয়োজনে বর্ডার হাটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদও উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ত্রিপুরা রাজ্যের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, ত্রিপুরার শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন আগতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ।ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্ডার হাট স্থাপনের ফলে দুই দেশের সীমান্ত এলাকার লোকজন তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সহজে বেচাকেনা করতে পারছে এবং অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। এ ছাড়াও সীমান্তের দুই পাশে বসবাসকারী জনসাধারণের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্ডার হাট স্থানীয় জনগণের মধ্যে যে উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে, তা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুসংহত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সহজলভ্য করার উদ্দেশ্যে বর্ডার হাট স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তারই ধারবাহিকতায় ২০১০ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বর্ডার হাট স্থাপনসংক্রান্ত সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়, যা পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল সংশোধন করা হয়।
সমঝোতা স্মারক অনুসারে ২০১১ সালের ২৩ জুলাই কুড়িগ্রাম সীমান্তে বালিয়ামারিতে প্রথম, ২০১২ সালের ১ মে সুনামগঞ্জের ডলারোতে দ্বিতীয়, ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার পূর্ব মধুগ্রাম ও ছয়ঘড়িয়ার মধ্যবর্তী সীমান্তে তৃতীয় এবং ২০১৫ সালের ৬ জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার তারাপুর সীমান্তে চতুর্থ বর্ডার হাট চালু করা হয়।
বর্ডার হাট স্থাপনের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় গত বছরের ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে সুনামগঞ্জ জেলার সায়েদাবাদ ও বাগানবাড়ি বর্ডার হাট এবং সিলেটের ভোলাগঞ্জে ৩টি বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হয়। আরও ৩টি বর্ডার হাটের অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অতিরিক্ত ৬টি বর্ডার হাট স্থাপন প্রক্রিয়াধীন।
অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন।