আরশি কথা

আরশি কথা

No results found
    Breaking News

    আজও তোমায় খুঁজি " - নির্ঝর পাল, ত্রিপুরা

    আরশি কথা

    আজও তোমায় খুঁজি...


    ঋতুচক্রে তখন ফাল্গুন মাস,

    মধুঋতুর আবাহনে প্রকৃতি তখন উত্তাল।

    জীব লোকের এই মধুআনন্দের ক্ষণে তোমার জৈবিক পদচারণার সূচনা,

    তাই তুমিই হয়ে উঠলে জীবনানন্দ।

    বাংলার প্রতিটি বৃক্ষলতা, নদ-নদী, তোমার দৃষ্টির স্নিগ্ধ আনন্দে হলো মায়াময়।

    হৃদয় সমুদ্রের অতল গভীরে নিমজ্জমান তুমি

    শাদা বকের পাখায় লাগালে কাকাতুয়া রোদ,

    আবার হাজারো বছরের পথ হাঁটার পরেও আজও তুমি অক্লান্ত।

    শাশ্বত রাত্রির বুকে অনন্ত সূর্যোদয়ের প্রত্যাশী ছিলে তুমি।

    কিন্তু হায় কবি! তুমি কী চেয়েছিলে এই ছবি!

    তোমার 'রূপসী বাংলা'

    আজ মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিংয়ের প্রকোপে তার রূপ হারিয়েছে।

    'সাতটি তারার তিমির' আজ এক 'অদ্ভুত আঁধার'-এ বিলীন।

    'সুচেতনা' আজ সত্যিই 'এক দূরতর দ্বীপ';

    ফাল্গুনের এই গভীর আঁধারে লাশকাটা ঘরে শুয়ে,

    আর কোনদিনও না জাগার জন্য সে চিরনিদ্রিতা।

    'রূপসার ঘোলা জলে' ডিঙ্গা বাওয়া কিশোর,

    আজও তার স্বপ্নতরী বেয়ে যায় কোনো এক অজানার উদ্দেশ্যে।

    যে কিশোরী চাল ধোয়া ভিজে হাতের কোমলতায়

    আগামীর দিকে এগিয়ে যাবার কথা ছিল

    আজ এই সমাজের নীল বিষে,

     নিওন আলোর নিচে আলোর অভিসারিকা!

    কবি, 'অর্ধনারীশ্বর'রূপে তুমি 'রূপসী বাংলা'র বুকের গভীরে আছো কি না জানিনা, 

    কিন্তু তোমার অর্ধনারীশ্বরেরা আজও বাসে, ট্রেনে, রাস্তায় করুণা ভিক্ষা করে।

    একদিন তো তুমিই জানিয়েছিলে, ভালোবাসার রং গোলাপের রক্তের মতো,

    তাই ভালোবাসার দিনে আমরা রক্ত হোলিতে মাতি,

    ফলে এই 'মহাপৃথিবী'র বুকে এক 'বিপন্নবিস্ময়'

    আমাদের অন্তর্গত 'রক্তের ভিতরে খেলাকরে',

    আর আমাদের 'আরো অধিকতর ক্লান্তকরে',

    আজ যখন জীবন পথের বেলা পেরিয়ে আমরা অবেলা এবং কালবেলার পথিক,

    তখন হে জীবন পথিক জীবনানন্দ, ফিরে এসো, ফিরিয়ে দাও - অবরুদ্ধ জীবনের আনন্দ।

     শুধু একবার ফিরে এসে এই ঘুণ ধরা সমাজের শীর্ষে দাঁড়িয়ে বলো-

     " এই পৃথিবীর রণ রক্ত সফলতা সত্য

    তবু শেষ সত্য নয়

    শাশ্বত রাত্রির বুকে

    সকলই অনন্ত সূর্যোদয়।"


    নির্ঝর পাল, ত্রিপুরা


    ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২২

     

    3/related/default