আগামী ২৫ মার্চ থেকে শুরু হবে ১২ দিনব্যাপী ৪০তম আগরতলা বইমেলা। চলবে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এবারের বইমেলার থিম বা মূল ভাবনা- ‘আমার ত্রিপুরা আমার গর্ব'। বৃহস্পতিবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং হলে আয়োজিত ৪০তম আগরতলা বইমেলা ২০২২-এর পরিচালন কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ছুটির দিন ব্যাতীত বইমেলা চলবে দুপুর ২.৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। ছুটির দিনে বইমেলা চলবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৯.৩০ মিনিট পর্যন্ত। এবারের বইমেলা উপলক্ষ্যে ৩৫ বছরের নীচে নৃত্য, সংগীত, ভিশ্যুয়াল আর্ট, থিয়েটার শিল্পীদের জন্য ৪টি নতুন পুরস্কার চালু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এছাড়াও এবারের বইমেলায় অংশগ্রহণকারী পুস্তক বিক্রেতাদের স্টল রেন্ট, রেজিস্ট্রেশন ফি ইত্যাদি মকুব করা হয়েছে।
সভায় আলোচনা করতে গিয়ে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে বাংলা সাহিত্য চর্চার একটি সুগভীর ইতিহাস রয়েছে। সেইক্ষেত্রে আগরতলা বইমেলা আমাদের মনের মেলা। রাজ্যের সাহিত্য ও সংস্কৃতির পরিবেশকে টিকিয়ে রাখতে বইমেলার গুরুত্ব রয়েছে। এবারের বইমেলাতে সর্বাধিক অংশগ্রহণকে সুনিশ্চিত করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। উপমুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার জনগণের অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আত্মনির্ভরতা আনার ক্ষেত্রে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ৪০তম আগরতলা বইমেলায় অন্যান্য পুরস্কারের পাশাপাশি নৃত্য, সংগীত ও ভিশ্যুয়াল আর্টে রাজ্যের তরুণ প্রতিভাবানদের জন্য তিনটি নতুন পুরস্কার চালু করা হবে। এই পুরস্কারগুলি হলো সত্যরাম রিয়াং পুরস্কার, অশ্বিনী কুমার বিশ্বাস স্মৃতি পুরস্কার ও সুমঙ্গল সেন স্মৃতি পুরস্কার।সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রত্যেককে নিয়েই চলতে হবে। মানুষকে সম্মান দিলেই সম্মান ও বিশ্বাস পাওয়া যায়। এবার জেলাস্তরেও বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে।এদিন সন্ধ্যায় সচিবালয়ে ৭টি জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে সিদ্ধান্ত হয়েছে ঊনকোটি জেলায় ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ৫ মার্চ থেকে ৯ মার্চ, ধলাই জেলায় ১১ মার্চ থেকে ১৫ মার্চ, খোয়াই জেলায় ১৭ মার্চ থেকে ২১ মার্চ, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৯ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল, গোমতী জেলায় ১৭ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল এবং সিপাহীজলা জেলায় ২৩ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল জেলাস্তরের বইমেলাগুলি অনুষ্ঠিত হবে। রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বইমেলা পরিচালন কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন কারামন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা সরকার দেব, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের অ্যাসিসেন্ট হাইকমিশনার আরিফ মহম্মদ, আগরতলা পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র মণিকা দাস দত্ত, রাজ্য উচ্চশিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. অরুণোদয় সাহা, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুবল কুমার দে, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে গোয়েল, ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ডের সম্পাদক শুভব্রত দেব, অল ত্রিপুরা বুক সেলার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক উত্তম চক্রবর্তী, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাখাল মজুমদার সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বগণ। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত আগরতলা বইমেলা পরিচালন কমিটির সভা পরিচালনা করেন দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ
১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২২