নারী-- কনক-রঞ্জিত কল্পতরু; সৃষ্টির অনুলোম বিলোম উপন্যাস,
নারী ঊষর উর্জস্বী -- মাতা,ভগিনী,কবিলা, দুহিতা, প্রণিধির কোরাস।
নারী-- তৃষিত সুখের আলোক বর্তিকা; জেনানা-র তরঙ্গায়িত কাকলি,
লালিত স্বপ্নের মৌ গুঞ্জরণে বিকশিত মনের পতঞ্জলি।
ঋতু থেকে ঋতুতে উড়ে চলা ফাকতা আঁখির অনুসঙ্গ বিরজা,
প্রভাত রবির ফিরিওয়ালা; বৃষ্টি সুখে সাগরের ঢেউ; গৃহের ফিরোজা।
সৃষ্টির যা কিছু -- সবই নারী; বিলক্ষণ দেখি তাই নারীত্বেই যেন সব হসন অলয়,
নারীই বিলগ্ন শক্তি; সুখের ফোয়ারা; বিচলিত মনের নিধেয় আশ্রয়।
নারীই সৃষ্টির শোহরত; সৃজন-সত্ত্ব,দর্পিত নিবন্ধন, মাতৃরূপে সম্ভূ,
বদলে যাওয়া পদবীতে শ্বশুর বাড়ির সামিয়ানায় গৃহবধূ।
নারী মানেই নয়কো ক্যানভাসের মোনালিসা; মুদিখানার বুন্দিয়া,
ঘেন্নধরা লু-বাতাসের নয়তো কোনো উল্লম্ফন উছলিত ফাগুন হাওয়া।
বসন্তে যেমন অনেক বাহারি ফুল-- হয় অবহেলিত অবাঞ্ছিত,
রূপ লাবণ্যের ভেদাভেদে অমোঘের পথে অনেক নারীও হয় অপাঙ্ক্তেয় লাঞ্ছিত।
আজও শুনি ঘরে ঘরে নারীদের রুদ্ধশ্বাস পরিতাপ পরিহাস,
রঙিন ভালোবাসার আবডালে পুরুষের নানাকীর্তির অনুদ্বায়ী অভিলাষ।
নারীরা স্বপ্নবান সংবেদনশীল; অনুধ্যানে সুষ্ঠু সুস্থ সমাজ গঠনের কারিগর,
নারী মানেই প্রেমিক মন; ভালোবাসার দূরন্ত আবেগ -- যৌবনা সাগর।
নারী মানেই অনুপ্রাণনা অপত্য বিস্ময়; বিরামহীন সংগ্রামের স্পন্দন,
পরাগরেণুর মাতাল গন্ধ; জীবন তরী নিয়ে বয়ে যাওয়া স্বর্ণালী পলাশবন।
নারী মানেই প্রতিকূল অনুকূল স্রোতের অবগত ভ্রাম্যমান ভেলা,
ভোগবাদ সমাজের উপচয় অপবাদের কৃতাহ্নিক পথ বয়েও চলা।
তবুও তাকিয়ে দেখি সবকিছুর ঊর্ধ্বে রয়েছে সম্পর্কের নিবিড় বিশ্বাস,
"নারী দিবস" তাইতো সৌন্দর্যে রোদ্দুর হয়ে উঠা বীরাঙ্গনাদের নিঃশ্বাস।
- মৃণাল কান্তি পণ্ডিত, ত্রিপুরা
৮ই মার্চ ২০২২