গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে প্রাণীসম্পদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনা এবং সদর্থক মানসিকতার। শনিবার নজরুল কলাক্ষেত্রে ত্রিপুরা ভেটেরিনারি কাউন্সিলের উদ্যোগে ২২তম বিশ্ব প্রাণী চিকিৎসক দিবসের উদ্বোধন করে এই অভিমত প্রকাশ করেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস।
এই উপলক্ষ্যে এখানে সকালে রক্তদান শিবির ও পরে কারিগরি আলোচনাসভা এবং সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় অবসরপ্রাপ্ত প্রাণী চিকিৎসকদের সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি।বিশ্বের প্রাণীকূল আমাদের বড় সম্পদ। তারজন্য ভালো ব্যবস্থা, নিয়ম ও আইন থাকতে হবে। রাজ্যে প্রাণী চিকিৎসার পরিকাঠামো গত ৪ বছরে আমূল পাল্টেছে বলে এদিন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস বলেন। তিনি আরও বলেন, এই দপ্তরের কর্মকান্ড বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজ্যের ৭৫ শতাংশ মানুষের রোজগার বৃদ্ধি করা সম্ভব। এর মাধ্যমে রাজ্যে দুগ্ধ, মাংস, ডিমের উৎপাদনও বাড়বে। তাই মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের দিক নির্দেশনায় মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনা শুরু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হাঁস, মোরগ, শূকর দেওয়া হচ্ছে। কর্মসূচিতে ৩টি পর্যায়ে রাজ্যের ৬ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।এছাড়াও তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গোধন প্রকল্প রাজ্যে ৯৫ শতাংশ সফল। এরফলে গোপালকদের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার হয়েছে। রাজ্যে শীঘ্রই ১২টি মোবাইল ভেটেরিনারি ভ্যান, ৫০টির অধিক ছোট ও বড় আকারের প্রাণী চিকিৎসালয় গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। এছাড়াও প্রতিটি গ্রামে ১টি করে প্রাণী চিকিৎসা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ারও লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে ক্লাস্টার বেসড পদ্ধতিতে সুবিধাভোগীদের প্রাণী বিতরণ করাকেও অগ্রাধিকার দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এরফলে প্রাণীপালকরা যেমন উৎসাহিত হবেন তেমনি রাজ্যের সম্পদও সৃষ্টি হবে।
অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, প্রাণীরা নিজেদের উপলব্ধি প্রকাশ করতে পারে না বলে প্রাণী চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতার নিরিখে কাজ করতে হয়। তা খুবই কঠিন কাজ। তিনি প্রাণী চিকিৎসা পদ্ধতিকে আরও উন্নততর ও বিজ্ঞানসম্মত করে তোলার উপরও জোর দেন।রক্তদান বিষয়ে আলোচনায় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রীচৌধুরী বলেন, রাজ্যে এখন যে কোনও মহৎ কাজই রক্তদানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে। মানবধর্ম পালনের মধ্য দিয়ে সমাজ ও দেশের জন্য কিছু করার এর থেকে উত্তম কোনও মাধ্যম হতে পারে না। করোনাকালীন সময়ে রক্তদানের উৎসাহ ও উদ্যোগে অনেকটা ভাঁটা পড়েছিল। কিন্তু মানুষ এখন তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী রক্তের যোগান ঠিক রাখার জন্য তিনি সকল মানুষের কাছে রক্তদানের আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা দিলীপ কুমার চাকমা, আয়োজক কমিটির কনভেনার ডা. অনাদি শঙ্কর ভট্টাচার্য, ত্রিপুরা ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সভাপতি ডা. চিন্টু দেববর্মা ও রেজিস্ট্রার ডা. সুশান্ত গুরুদাস। এই কর্মসূচিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রাণী চিকিৎসক সহ ইন্টার্ন ও ভেটেরিনারি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ
৩০শে এপ্রিল ২০২২