ভারত সব সময়ই মিশ্র সংস্কৃতি , মিশ্র ভাষাভাষীর দেশ। স্বাধীনত্তোর ভারতের সংবিধান ও তাকে মান্যতা দিয়েই গঠিত হয়েছিল। উত্তর- পূর্ব ভারতের আসামও তার ব্যতিক্রম ছিল না।
কিন্তু ভারত স্বাধীন হওয়ার পরেই আসামের মুখ্যমন্ত্রী ( তখন প্রধানমন্ত্রী বলা হত) ১৯৪৭ সালের ৩ অক্টোবর ঘোষণা করেন " Assamese would be the official and state language. Assamese would also be the medium of instruction in schools" .
মুখ্যমন্ত্রী গোপীনাথ বরদলৈ এর এই ঘোষনার পরই আসামে বাঙালিরা আক্রান্ত হতে শুরু করে। ১৯৪৭ সালের ২৩ আগষ্ট আসামের "জাতীয় মহাসভা" গৌহাটিতে এক বিশাল জনসভায় 'বঙ্গাল খেদা'র ডাক দেন। তারপরই আসামে বাঙালিদের ভাগ্যাকাশে নেমে আসে কালবৈশাখীর ঝড়। আসাম সরকারের প্রত্যক্ষ /অপ্রত্যক্ষ মদতে অসমিয়ারা ঝাঁপিয়ে পরে বাঙালিদের উপর। আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করতে থাকে বাঙালিদের ঘর বাড়ি স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি। জ্বলন্ত ঘরে ছুঁড়ে দেওয়া হয় শিশু কিশোরদের দেহ। ধর্ষিতা হয়ে বাঙালি নারী নিজেই নিজের অভিশাপে দ্গ্ধ হতে থাকে । বাঙালির মৃত্যু মিছিলে শ্মশান হয় উঠে ভারি । বাঙালি খেদার এই নগ্ন রূপ পূর্বপাকিস্তানে ৪৬ এর নোয়াখালির দাঙ্গাকেও হার মানিয়েছিল।তৎকালীন ভারত সরকার অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায় নিজের অস্থিত্ব হারিয়ে ফেলে।
১৯৬০ সালে যখন অসমিয়াদের অত্যাচার চরমে পৌঁছায় তখন কাছারের বাঙালিরা একত্রিত হতে শুরু করে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা সভা সমিতির মাধ্যমে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠে। ৩ জুলাই শিলচরে অনুষ্ঠিত হয় বাংলা ভাষা সম্মেলন। আসাম পশ্চিমবঙ্গের বহু বাঙালি এই সম্মেলনে যোগদান করেন। পাশাপাশি অন্যান্য অনেক জায়গাতেই বাঙালিরা একত্রিত হওয়ার চেষ্ঠায় সভা সমাবেশ করতে থাকেন, কিন্তু প্রকৃত নেতৃত্বের অভাবে আন্দোলন দানা বাঁধেনি। তারপর ১৯৬১ সালে করিমগঞ্জে 'গণসংগ্রাম পরিষদ' গঠিত হওয়ার পর নতুন ভাবে আন্দোলন শুরু হতে থাকে। দলে দলে গ্রাম শহরের বাঙালিরা গণসংগ্রাম পরিষদে নাম লেখাতে থাকে। একটাই দাবী , আসামে মাতৃভাষা বাংলার সরকারি স্বীকৃতি চাই। কিন্ত্তু আসাম সরকার পরিষদের দাবিকে অগ্রাহ্য করে রাষ্ট্রীয় শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসে। তখন সংগ্রাম পরিষদ ১৯৬১ সালে ১৯ ও ২০ মে দুদিনের অহিংস সত্যাগ্রহ আন্দোলন করতে তৎপর হয়ে উঠে। আন্দোলন ঠেকাতে তৎকালীন আসাম সরকার শিলচর সহ সমগ্র কাছার জেলা পুলিশ মিলিটারিতে ছেঁয়ে ফেলে । ১৯ মে ১৯৬১ সাল সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রথম দিন বাঙালিদের কাছে হয়ে উঠে এক শোকের দিন, এক কালো দিন। ঐদিন ভোর থেকেই সমগ্র কাছারের নিরস্ত্র নারী পুরুষ, মায়ের হাত ধরা শিশু কিশোর দলে দলে যোগদেয় সত্যাগ্রহ আন্দোলনে । তাদের শপথ - সরকারি অফিস আদালত খোলা যাবে না । ট্রেনের চাকা চলবে না। আসাম সরকারের ভিত কাঁপতে থাকে আন্দোলনকারীদের সম্মিলিত শ্লোগানে --" বন্দে মাতরম্ , বাংলা ভাষা জিন্দাবাদ, জান দেব কিন্ত্তু জবান দেবো না"। সেই হাজার হাজার বাঙালিরা ছিলেন নিরস্ত্র - শান্ত- ধীর- স্থির, কিন্তু মাতৃভাষার সম্মান বাঁচাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
শিলচর রেল স্টেশন এলাকায় আরো অনেকের সঙ্গে পিকেটিংরত অবস্থায় ছিলেন কমলা ভট্টাচার্য ও তাঁর ছোটবোন মঙ্গলা। সকাল থেকে কোন ট্রেনই তাদের বাধা দানের ফলে চলাচল করতে পারেনি। পুলিশ মিলিটারি বার বার লাঠি চালিয়ে, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েও আন্দোলনকারীদের একচুলও নাড়াতে পারেনি। কিন্তু আন্দোলন চলছিল অহিংস ভাবে। এমতাবস্থায় দুপুরের পর প্রায় আড়াইটে নাগাত শিলচর রেলস্টেশনে হঠাৎই পুলিশ বিনা প্ররোচনায় নিরস্ত্র সত্যাগ্রহিদের উপর নির্বিচারে গুলী চালাতে শুরু করে। এলো পাথারি গুলিতে কমলা সহ দশ জন সত্যাগ্রহী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গুলীবিদ্ধ সত্যেন্দ্র দেব রেল পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্ত্তু পরদিন পুকুরে তাঁর মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। বীরেন্দ্র সূত্রধর আহত অবস্থায় সিভিল হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরদিন তিনিও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ১১ জনের মৃত্যুতে সমস্ত বাঙালি জাতি শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে। ধিক্কারে ভরে উঠে আকাশ বাতাস। নিজের দেশে মাতৃভাষার জন্য আত্ম বলিদান দেওয়া সেই ১১ জন বীর শহিদ সৈনিকরা ছিলেন :-
(১) কমলা ভট্টাচার্য
সম্ভবত বিশ্বের প্রথম নারী যিনি মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষায় শহিদ হয়েছেন। বন্দুকের গুলি তার চোখ ভেদ করে মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। কমলারা পূর্ব পাকিস্তানের সিলেট থেকে শিলচরে এসে অাশ্রয় নিয়ে ছিলেন। তারা ছিলেন দুভাই, চার বোন। সেদিন আন্দোলনে কমলার সংগে ছিল ছোট বোন মঙ্গলা। ছোট বেলাতেই পিতা রামরমন ভট্টাচার্যকে হারান। মা - সুপ্রভাসিনী ছিলেন অভিভাবক। অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। ছোট বোন কমলা প্রাণে বেঁচেছিলেন বটে কিন্ত্তু ঘাতকের অত্যাচারে চলার শক্তি হারিয়ে ছিলেন। শিলচরের পেদাপট্টি আজ শহিদ কমলা রোড হয়ে তার স্মৃতিকে আগলে রেখেছে।
(২) শচীন্দ্রচন্দ্র পাল
পিতা গোপেশচন্দ্র পাল শিলচরের দেওয়ানজি বাজারের বড়ো ব্যবসায়ী । চার ভাই এক বোন । মাধ্যমিক পাশের পরই সত্যাগ্রহী হিসেবে সংগ্রাম পরিষদে নাম লেখান। পরিষদের নির্দেশ ছিল ভোর পাঁচটার আগেই তারাপুর রেল স্টেশন এলাকায় রেল অবরোধের প্রস্তুতি নিতে হবে। রেল চালাতে না পেরে লাঠি চার্জ , টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ এবং শেষ পর্যন্ত গুলি চালনা, আর তাতেই গুলি বিদ্ধ হন শচীন্দ্র পাল সহ অসংখ্য মানুষ। হাসপাতাল যাবার পথেই শচীন্দ্রের জীবনাবসান হয়। দেওয়ানজি বাজার সড়কটির নতুন নাম করণ হয় " শহীদ শচীন্দ্রচন্দ্র পাল অ্যাভিনিউ নামে।
(৩) শহীদ বীরেন্দ্র সূত্রধর
জন্ম ১৯৩৭ সালে হবিগঞ্জ মহকুমার বহরমপুরে। ছোট বেলাতেই মা বাবাকে হারান। ঠাকুমার কাছে মানুষ। বংশ পরম্পরায় বীরেন্দ্র কাঠের কাজে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। কাজের সূত্রে আইজলে থাকতেন। স্ত্রী ও কন্যা হাইলাকান্দিতে থাকতেন। তাদের কে দেখতে আইজল থেকে ফিরছিলেন, শিলচর এসে জড়িয়ে পড়েন সত্যাগ্রহ আন্দোলনে।১৯ মে পুলিশের গুলিতে তিনিও প্রাণ হারান। শিলচরে একটি রাস্তা তাঁর নামে নামাঙ্কিত করা হয়।
(৪) শহিদ তরণীমোহন দেবনাথ
তরণীমোহনের জন্ম বাংলাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ১৯৪০ সালে। পিতা যোগেন্দ্রচন্দ্র
মাতা জগতীবালা। দেশভাগের পর শিলচরে রাঙ্গিরখাড়িতে চলে আসেন। পৈতৃক সুতোর ব্যবসা শুরু করেন। ১৯ মে অন্যান্য সত্যাগ্রহীদের সংগে তিনিও ছিলেন শিলচর রেলস্টেশনে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ যখন প্রতিবাদী হাত তুলে মাতৃভাষা জিন্দাবাদ ধ্বনি দিচ্ছিলেন তখনি ঘাতকের বুলেট তাঁর মাথা বিদ্ধ করে । তিনি লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। রাঙ্গিরখাড়ি সড়ক আজ শহিদ তরণীমোহন দেবনাথ রোড হয়ে তাঁকে স্মরন করছে।
(৫) শহিদ চণ্ডীচরণ সূত্রধর
পূর্ব পাকিস্তানের সিলেট জেলার হবিগঞ্জে উনার জন্ম১৩৩৩ বঙ্গাব্দে। শৈশবেই মাতা পিতাকে হারান। দেশভাগের পর ১৯৫০ সালে শিলচরের রাঙ্গিরখাড়িতে চলে আসেন। পারিবারিক কাঠের কাজকেই পেশা করেন। বিয়ে করেন নি, তাই ১৯ মে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যাবার সময় বন্ধুদের বলে ছিলেন " আমার তো কেউ নেই, কিছুই নেই, সর্বস্বহারা, বাংলাভাষার জন্য না হয় আমার জীবনটাও দিয়ে দেব"। হ্যাঁ, ঘাতকের গুলি তার শেষ ইচ্ছা অপূর্ণ রাখেনি। রাঙ্গিরখাড়িতে একটি সড়ক তার নামে রাখা হয়।
(৬) শহিদ হীতেশ বিশ্বাস
হবিগঞ্জ মহকুমার ব্রাহ্মণডোরা গ্রামে ১৩৪৩ বঙ্গাব্দে তাঁর জন্ম। পিতা হরিশচন্দ্র, মাতা- কিরণবালা। ১২ বছর বয়সে পিতৃহারা হন এবং দেশভাগের পর ত্রিপুরার খোয়াইতে চলে আসেন। মাকে ত্রিপুরায় রেখে শিলচরে পাড়ি দেন কর্মের সন্ধানে। দিদি বাসন্তীর বিয়ে দেন শিলচরে। ১৯ মে দিদিকে নিয়েই আন্দোলনে যোগ দেন। পুলিশের গুলি পায়ে লেগে মাটিতে পড়ে গেলে দিদিকে চীৎকার করে পালিয়ে যেতে বলেন।পর মুহুর্তেই আরেকটি গুলি এসে তাঁর বুক ঝাঁঝরা করে দেয়।শিলচরে তাঁর নামে একটি সড়ক তাঁকে শহিদের সম্মান জানাচ্ছে।
(৭) শহিদ কুমুদরজ্ঞন দাস
১৯৪০ সালে সিলেটের জুরি গ্রামে জন্ম। শৈশবেই মাতৃবিয়োগ হলে পিতা কুঞ্জমোহন দ্বিতীয়বার বিয়ে করলে তিনি অবহেলার পাত্র হয়ে উঠেন। দেশভাগের পর মামা-মামীর সঙ্গে শিলচরে চলে আসেন। কাজের সন্ধানে আগরতলায় এসে ড্রাইভিং শেখেন। কিন্তু মামা হঠাৎ অসুস্থ হলে শিলচরে ফিরে যান এবং ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। রেলস্টেশনে ঘাতকের বুলেট তাঁরও প্রাণ কেড়ে নেয়। শিলচরের ম্যাগাজিন রোড আজ তাঁর নামে নামাঙ্কিত ।
(৮) শহিদ সত্যেন্দ্র দেব
১৯৩৭ সালে হবিগঞ্জের দেওন্দি গ্রামে জন্ম। পিতা শশীমোহন মাতা সুরবালা দেব। ভারত ভাগের পর ত্রিপুরার কৈলাশহরে আশ্রয় নেন । পিতার মৃত্যুর পর সত্যেন্দ্র রাজমিস্ত্রির কাজে লেগে পড়েন। কাজের সন্ধানে মা বোনদের কৈলাশহরে রেখে শিলচরে চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে এগিয়ে যান। ১৯ মে গুলাগুলি শুরু হলে রেল পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়েন কিন্ত্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পরদিন পুকুরে তাঁর মৃত দেহ ভেসে উঠলে সেই দেহ নিয়ে বিশাল শোক মিছিল হয়। শিলচর পৌরসভা একটি রাস্তার নামকরণের মধ্য দিয়ে তাকে সম্মান জানায়।
(৯) শহিদ সুনীল সরকার
১৯৩৯ সালে ঢাকা জেলার স্বর্ণগ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা সুরেন্দ্র দে সরকার, মাতা সুভাষিণী দে সরকার। দেশভাগ হলে শিলচরে নতুনপট্টিতে চলে আসেন। ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে ১৯ মে শিলচর রেলস্টেশনে ঘাতকের গুলিতে প্রাণ হারান। শিলচর হাসপাতাল রোড থেকে শ্মশান রোডের সংযোগকারী রাস্তাটিকে শহিদ সুনীল সরকার রোড নামে আখ্যায়িত করা হয়।
(১০) শহিদ কানাইলাল নিয়োগী
১৯২২ সালে টাঙ্গাইলের খিলদা গ্রামে জন্ম। পিতা দ্বিজেন্দ্রলাল গুহ নিয়োগী, মাতা মনোরমা গুহ নিয়োগী। শিলচরে রেলের পার্সেল ক্লার্ক হিসেবে কাজ করছিলেন। ১৯ মে গুলাগুলি শুরু হলে তিনি মেয়েদের নিরাপদে রাখার জন্য দৌড়াদৌড়ি করছিলেন আর তখনি গুলি বিদ্ধ হয়ে শহিদ হন। শিলচর পৌরসভা রাস্তার নামকরনের মধ্য দিয়ে তাঁকে অমর করে রাখে।
(১১) শহিদ সুকোমল পুরকায়স্থ
করিমগঞ্জ মহকুমার বাগবাড়ি গ্রামে ১৯২৫ সালে জন্ম। পিতা সঞ্জীব ও মাতা শৈবলিনী পুরকায়স্থ। ব্যবসা করতেন । ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলি খেলেন বাম ঊরুতে। প্রচন্ড রক্ত ক্ষরণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। শিলচর পৌরসভা শ্মশান সড়কের নাম করেন শহিদ সুকোমল পুরকায়স্থ রোড।
উপরের শহিদদের কেউই ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন না। কেবল নিজেদের মাতৃভাষার টানে, মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার্থে, প্রাণের টানে জীবনের মায়া বিসর্জন দিয়ে স্বত:স্ফুর্তভাবে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে অংশ নিয়ে ছিলেন। কিন্ত্তু বাংলা বিদ্বেষী তৎকালীন রাষ্ট্রীয় শক্তি তাদের দমাতে বুলেটের সাহায্য নিয়ে ছিল।
বিশ্বের আপামোর বাঙালি জনগণ এই জীবনত্যাগীদের কথা কখনো ভুলবে না। প্রতি বছরের মত এবছরও ১৯ মে সমস্ত বাঙালি জাতি তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
তথ্য সূত্র: আসামে ভাষা আন্দোলন ও বাঙালি-প্রসঙ্গ
সসীম আচার্য, ত্রিপুরা
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
১৯শে মে ২০২২