মাতৃভাষা আমাদের অস্তিত্বর অভিজ্ঞান।
অসমীয়া ও ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে চাই বাংলাও।এই দাবি নিয়ে পথে নেমেছিলেন তারা যারা আসামের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা গোষ্ঠীর সদস্য। প্রশাসন পক্ষ থেকে এই দাবির উত্তরে মিলেছিল বুলেট।স্তব্ধ হয়ে গেছিল এগারোটি প্রাণ।শুধু ১৯৭১ই নয় ১৯৭২ এবং ১৯৭৬ সালেও শহীদ হন বাঙালিরা মাতৃভাষায় কথা বলার অপরাধে।
১৯৭৬ সালে সুদেষ্ণা সিংহও প্রাণ হারিয়েছিলেন।এভাবেই একুশ আর উনিশের বন্ধনে ভাষা শহিদের উত্তরাধিকার হিসাবে আমরা গর্বিত।তবে এই গৌরবের দায়িত্ব ও আমাদের বহন করতে হবে।
উনিশে এবং একুশে হল একই পংক্তিতে বসা আলাদা দুটো থালা যে থালার নীচের ভিটেমাটি আর উপরের খাবার,জল একই ভাষাতে কথা বলে। দুই ক্ষেত্রেই আরোপিত ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মাতৃভাষাকে অবলুপ্তির পথ থেকে পুনরুদ্ধারের লড়াই।আজ পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে যখন ভাষার জন্য প্রতিবাদ বা আত্মবলিদান হয় তখন এই উনিশে মে আর একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্ক যুক্ত হয়ে যায় অনায়াসে। বাংলাভাষাই শুধু নয় পৃথিবীর আর কোন ভাষারই যেন মৃত্যু না হয় সেদিকেও মানুষ হিসাবে আমাদের নজর রাখা কর্তব্য বলে আমি মনে করি।
পৃথিবীতে আর কোন নুতন ভাষার জন্ম হবে না।পৃথিবী ভাষা বন্ধ্যা হয়ে গেছে। একটি ভাষার মৃত্যু মানে সে ভাষায় কথা বলার শেষ মানুষটির মৃত্যু।তাই আমাদের রক্তে ভেজা অক্ষরের চোখের জল মোছার আন্দোলন থামলে চলবে না।তাই রক্ত শুধু মাতম নয় এর উদযাপন,উৎসবের মধ্য দিয়ে আমরা রক্ষা করবো জমাট বাঁধা রক্ত থেকে উদ্ভূত আমাদের মাতৃভাষাকে।স্বদেশ মাটি এবং মানুষের প্রতি শ্রদ্বাবোধ তাদের প্রতি দায়িত্ববোধের চেতনা গড়ে উঠে মাতৃভাষার মাধ্যমে।
চন্দ্রা মজুমদার
আগরতলা
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
১৯শে মে ২০২২