Type Here to Get Search Results !

এ বছরে আরও চারটি বর্ডার হাট চালু হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাংলাদেশ


আবু আলী

ঢাকা, আরশিকথা  ।।

চলতি বছরের মধ্যে আরও চারটি নতুন বর্ডারহাট চালু হবে। এ বিষয়ে মমতা ব্যানার্জির সাথে কথা বলেছি। আশা করছি তিন চারটি প্রোপাজাল দেবো। মিজুরামে গিয়েও আলোচনা হয়েছে। ছোট রাজ্য হলেও তারা এটি খুব পজিটিভলি দেখছে। একটা সাজেকের কাছাকাছি আরেকটি ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এটি নিয়ে দ্রুত দেখতে।

 সোমবার বেলা ১১টায় সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত 'বিএসআরএফ সংলাপ'-এ তিনি এসব কথা বলেন। 

বিএসআরএফ’র- সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক -এর উপস্থাপনায় সংলাপ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাস । 

ভোজ্য তেলের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রচুর ব্যবসায়ীকে আমরা ধরছি। সেটি ধরে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করছে ভোক্তা অধিকার। সেখানে অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে এবং জেলেও পাঠানো হয়েছে। তবে এমন কোন পরিস্থিতি সৃস্টি করতে চাইনা যাতে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃস্টি হয়। রমজান মাসটা সংজমের মাস। ব্যবসায়ীরা জানে ঈদের পর দাম বাড়বে তারা সেই সুযোগ নিয়েছে। তবে আমাদের ভুল হয়েছে টানা দুই মাস তেলের দামটা নির্ধারন করিনি, যদি করতাম তাহলে তারা সুযোগটা নিতে পারত না। এ সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামটা বেড়েছিলো, তাই সেটি আগে ফিক্স করলে সমস্যাটা হতো না।

ব্যবসায়ীরা সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত না। আমরা ব্যবসায়ী বান্ধব। আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের দাম অনুযায়ী দাম ফিক্সআপ করে দেই। সে অনুযায়ী বাজারে দামটা থাকলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইতে, বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাই।

পেঁয়াজের বিষয়ে তিনি বলেন, পেঁয়াজের আইপি বন্ধ করে কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষকরা যাতে দাম পায় সেটি দেখতে হবে। আমরা দেখছি কৃষকরা যাতে অন্তত ২৫ টাকা পায়। বাকি ট্রান্সপোর্টসহ অন্য খরচ মিলে ঢাকার মানুষ ৪৫ টাকায় যাতে খেতে পারে। কৃষকরা যাতে দাম পায় এবং ভোক্তারাও যাতে কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারে সেটি আমরা দেখছি।

তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রনের যুদ্ধ অনেকটা প্রভাব ফেলেছে আমাদের খাদ্য পণ্যের উপর। সেজন্য সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। সামনের দিকে কিছুটা সংকট রয়েছে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আশেপাশের শ্রীলঙ্কার অবস্থা দেখে অনেকে প্রচার করছে সে অবস্থা হতে পারে। সেরকম কোন সম্ভবনা নেই। আমরা নিজেরাই শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দিয়েছি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অবস্থা ভালো থাকলে দেশের অবস্থাও ভালো থাকে। আমি বেশ্বিক সমস্যার মধ্যে আছি। তেল, চিনি, ডালের দাম নিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে। তেলের ৯০ ভাগ আমাদের আমদানি করে আনতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে দামের প্রভাব হলে আমাদের দেশেও দাম বেড়ে যায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েকটি পণ্য আছে যেগুলো আমরা মনিটর করি। ঈদের আগে তেলের দাম নিয়ে অনেক কথা এসেছে। আমাদের মন্ত্রণালয় প্রতি মাসে একবার বসে ট্যারিফ কমিশন এই প্রাইজিংটা করেন। সবকিছু এভারেজ করে দামটা নির্ধারন করা হয়। আমাদের একটা বিশেষ কারণ ছিলো, ঈদের মাসটাতে আমরা দামটা বাড়াতে চাইনি। ব্যবসায়ীদের বলেছিলাম এই সময়টা ম্যানেজ করেন। তাই যেই সময়ে দামটা ফিক্স করা হয় সেখানে কিছুটা বিলম্ব হয়। যেহেতু তারা ভেবেছিলো ঈদের পর দামটা বাড়বে। সেজন্য অনেকে তেল জমিয়ে রেখেছিলো।

মন্ত্রী বলেন, এ মূহুর্তে পেঁয়াজের দাম একটু চড়া। তবুওও দাম মানুষের নাগালের মধ্যেই আছে। পেঁয়াজের দাম যদি কৃষক ২৫ টাকা পায় তাহলে তাহলেও মোটামুটি পোষানো সম্ভব হয়। পরে সেটির সাথে ট্রান্সপোর্টসহ কিছু কস্টিং যুক্ত হয়। আমরা কিছু কিছু ভালো কাজ করতে পেরেছি। আমরা ৬০ বিলিয়ন রপ্তানি করতে পারব বলে আশা করছি। ২০২৪ সালে ৮০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করতে পারব বলে আশা করছি। ১৫০টির উপর দেশে ফার্মাসিটিক্যাল পণ্য পাঠাতে পারছি। অন্যদিকে ইথিউপিয়া ৯০ শতাংশ এসব পণ্য বাইরে থেকে আমদানি করে। গার্মেন্ট সেক্টরে আরো ১০ লাখ কর্মী যুক্ত হবে বলে আশা করছি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এক কোটি মানুষকে টিসিবির পণ্য দিয়েছি দুইবার। আমাদের মাথায় আছে এক কোটি মানুষকে দেয়া রেগুলার করবো। ১৫-১৬ তারিখ থেকে যেটা দিতে চেয়েছিলাম, সেটা কিন্তু এক কোটি মানুষকে নয়, ট্রাকে করে ঢাকা-চট্টগ্রাম এমন শহরগুলোতে।

'প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে বলেছেন শহরের এই মানুষগুলোকে দেয়া হচ্ছে, গ্রামের মানুষকে তো দেয়া হচ্ছে না। তোমরা একটু সময় নিয়ে ঢাকাতে আমরা যে দেব.. বলেন টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, এর আগে ঢাকাতে আমরা কোনো লিস্ট পায়নি, যে নেটওয়ার্কে গ্রামে দেয়া হয়েছিল। ঢাকাতে ট্রাকে করে দেয়া হয়। এক কোটির মধ্যে ১৫ লাখ মানুষকে আমরা ট্রাকে করে দেয়। বাকি ৮৫ লাখ দরিদ্র সীমার নিচে যে কার্ড থাকে তাদেরকে দেয়া হয়। ইনস্ট্রাকশনটা এসেছে এবং আমরাও রি-অ্যারেন্জ করেছি।

তিনি আরও বলেন, ৮৫ লাখ মানুষকে বাদ দিয়ে ১৫-১৬ লাখ মানুষকে দেয়ার চেয়ে, একটুখানি চাপ দিয়ে এই ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকা এবং বরিশালে লিস্টটা আমরা করিয়ে নেবো, যাদেরকে আমরা দেবো। তাহলে জুনের প্রথম থেকেই আমরা এক কোটি মানুষকে দেয়া শুরু করতে পারবো। এই ১৫ দিন আমরা পিছিয়ে গেছি, আসলে আরো বেশি অ্যাডভ্যান্স হওয়ার জন্য। 

এর আগে টিসিবি থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল ১৬ মে থেকে খোলাবাজারে ১১০ টাকা লিটার সয়াবিন তেলসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি শুরু করা হবে। তবে রোববার রাতে হুট করেই সেই কার্যক্রম স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় সংস্থাটি।

সংস্থাটি বলছে, রাজধানীতেও এখন শুধু ফ্যামিলি কার্ডে পণ্য দেওয়া হবে। খোলাবাজারে ট্রাকে করে আর পণ্য বিক্রি হবে না। ফ্যামিলি কার্ড কার্যক্রম বাস্তবায়নে সোমবার (১৬ মে) থেকে খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি স্থগিত করা হয়েছে।

টিসিবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিক্রয় কার্যক্রম সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা এবং প্রকৃত সুবিধাভোগীর নিকট নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সরকার নীতিগতভাবে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য (ভোজ্যতেল, মশুর ডাল, চিনি) বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ঢাকা (উত্তর ও দক্ষিণ) ও বরিশাল সিটি করপোরেশনে ফ্যামিলি কার্ড প্রণয়ন ও বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর হতে শুধুমাত্র এই কার্ডের মাধ্যমেই টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

সে কারণে ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নিমিত্তে চলতি মাসের স্বল্প পরিসরে সাধারণ ট্রাকসেল কার্যক্রম (১৬ হতে ৩০ পর্যন্ত) স্থগিত করা হলো।

আগামী জুন মাসে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে এক কোটি নিম্নআয়ের পরিবারের নিকট টিসিবি কর্তৃক ভর্তুকিমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হবে বলে টিসিবি জানায়।


আরশিকথা বাংলাদেশ

১৬ই মে ২০২২

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.