Type Here to Get Search Results !

১৫ই আগস্ট বাঙালির শোক দিবস, এটাই সত্য ঃ পি আর প্ল্যাসিড, জাপান

কথায় আছে, একটা মিথ্যাকে বার-বার জোর দিয়ে বললে সেটা সত্যে পরিনত হয়।  

  বিষয়টি আসলে তা নয়। সত্য সত্যই। মিথ্যা কখনোও সত্যে পরিনত হয় না, হতে পারে না। হতে পারে, কোনো মিথ্যাকে বার-বার জোর দিয়ে বললে সেটা সত্যের মতো প্রচারিত হয় ফলে সত্যের মতো শোনা যায়। তার মানে সেটা সত্য নয়। যারা গায়ের জোরে বলে, মিথ্যা সত্য হয়, বুঝতে হবে তারা বোকার রাজ্যে বাস করে।

  আর সেটার পিছনে যদি ক্ষমতা বা ক্ষমতাবানদের মদদ বা হাত কিংবা ইন্ধন থাকে এতে সমর্থন কারীদের সংখ্যা এমনিতেই বেড়ে যায়। কারণ, ক্ষমতা বলে কথা। সেই সমর্থনের পিছনে কোনো না কোনো অভিসন্ধি থাকে, স্বার্থ থাকে। যে কারণে বিষয়টি মিথ্যা জানার পরেও সমর্থনের পাল্লা ভারি করে।

বিষয়টি ঠিক এমন যে, দিনের বেলা আকাশে যতোই মেঘ থাকুক, মেঘে পৃথিবীর একটা অংশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হলেও সেটা অবশ্যই পুরো পৃথিবীকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করতে পারে না। একসময় না একসময় মেঘ সরে গেলে আবার পৃথিবী তথা সেই অংশ সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়। এটাকে অন্য কিছুতে কেউ ঢেকে রাখতে পারে না। আবার এটাকেই সত্য প্রমাণে কেউ যদি চোখে কালো চশমাও পড়ে তাতেও লাভ হয় না। চশমার ফাঁক দিয়ে চোখে আলো আসবেই।

উপরের বিষয়টি লেখার কারণ হচ্ছে, আজ ১৫ই আগস্ট। আজকের দিনে অনেকের জন্ম হতেই পারে। তারা তাদের জন্মদিন উপলক্ষে উৎসব  পালন করতেই পারে। অন্যদের দ্বারা অভিনন্দিত তারা হতেই পারে। শুভেচ্ছার ডালি তাদের জন্য খোলা থাকতেই পারে। এতে কারো কোনো কিছু বলার থাকতে পারে না। থাকার কথাও না। 

আজকে এই দিনে অন্য কোনো দেশ বা রাষ্ট্রেরও শুভ কিছু থাকতে পারে। সেই দেশের জনগণ তা পালন করবে তাদের সেই শুভ দিবস। এতেও কারো ভিন্ন মত পোষণ করার অবকাশ নেই। যেমন, ভারত - পাকিস্তানের কথাই যদি বলি, সেই দেশের জন্য দিবসটি আনন্দের। তাদের দেশের জন্য আজ নতুন সূর্য উদয়ের দিন। সুতরাং সেই দেশের মানুষ দিবসটি তাদের মতো করে উদযাপন করতে পারে।

কিন্তু বাংলাদেশের জন্য আজকের এই দিন শুভ নয়। শুভ হতে পারে না। কারণ, আজকের এই দিনে বাংলাদেশের স্থপতি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। আজকের এই দিন জাতির জন্য শোকের। অবশ্যই কালো অধ্যায়ের একটি বড় অংশ।

আজকের দিনে জাতিরজনকের স্বাভাবিক মৃত্যু হলেও এটাকে শোক দিবস হিসেবে পালন করলে অন্যায় কিছু হতো না।

দুঃখের বিষয়, আজকের দিনে দেশ নেত্রী বলে খ্যাত দেশে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ার পার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মোৎসব পালন করা হয়, যা পুরোটাই উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এটাকে যে যা-ই বলুক, আমি বলবো এটাতে তাদের রুচিবোধের প্রমাণ মিলে।যেখানে বেগম খালেদা জিয়ার আজকের এই দিনে জন্ম হয়নি সেখানে আজকের এই দিনেই কেনো তার জন্মোৎসব পালন করতে হবে?? কই, আগে তো কখনোও করা হয় নি?? বেগম খালেদা জিয়া তো একসময় দেশের ফার্স্ট লেডি ছিলেন তখন তো তার জন্মদিন পালনের কোনো ইতিহাস চোখে পড়ে না? এমন কি তার পরিবারও কোথাও প্রমাণ তুলে ধরতে পারে নি, বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন যে ১৫ ই আগস্ট?  

উল্টো আরো বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দলিলে দেওয়া তার জন্ম তারিখ পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন। ক্ষমতায় যাবার পর যদি এসব ভিন্ন তারিখ গুলোকে এক করে নেওয়ার ব্যাবস্থা করা হতো তবে বলা যেতো সেটা বুদ্ধিমানের কাজ করা হয়েছে। সেটা না করে একটা মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে দেশে - বিদেশে দলটির সমর্থক গোষ্ঠি দ।বারা যা করা হচ্ছে তা সত্যিই হাস্যকর এবং কুরুচিপূর্ণ, দুঃখজনক। 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বি এন পি)- র মতো দেশের এতো বড় একটি রাজনৈতিক দলের উচিৎ হবে বিষয়টির সমাধান কল্পে পরিবর্তন বা সংশোধন করা। তা না করলে এতে ভালোর চেয়ে আগামীতে ফল খারাপই হবার সম্ভাবনা বেশি। 

নিচে বেগম খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখের একটি তালিকা দেওয়া হলো।

খালেদা জিয়ার এসএসসি পরীক্ষার সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬, বিবাহ সনদে ৫ আগস্ট ১৯৪৪, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথের নথিতে জন্মতারিখ ১৯ আগস্ট ১৯৪৭ এবং পাসপোর্টে ১৯ আগস্ট ১৯৪৫ সাল উল্লেখ করা হয়েছে।

এবার আপনিই বলুন, কোনটাকে আপনি সত্য বলবেন? তাই বলছি, মিথ্যাকে বর্জন করে সত্যের পক্ষে থাকুন। এতে নিজের মনে যেমন শান্তি পাবেন তেমনি আগামী প্রজন্মকেও সত্যের আলোয় পারবেন আলোকিত করে শান্তি দিতে।


পি আর প্ল্যাসিড 

সম্পাদক, বিবেকবার্তা

জাপান

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.