Type Here to Get Search Results !

আগরতলা স্থিত বাংলাদেশ দূতালয়ে জাতীয় শোক দিবস পালনঃ আরশিকথা হাইলাইটস

প্রভাষ চৌধুরী, ব্যুরো এডিটর, বাংলাদেশ,আরশিকথাঃ


যথাযোগ্য মর্যাদা ও শোকাবহ পরিবেশে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (১৫ আগস্ট) আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন দিনব্যাপী তিন পর্বে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব দিনের শুরুতে সকাল ৮টায় দূতালয় প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, সকাল ৮টা ৫ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শাহাদত বরণকারী সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়।


এরপর সোয়া ৮টায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

দ্বিতীয় পর্ব

আগরতলার হোটেল সোনারতরীতে বেলা ১১টায় বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।


সভা ও অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপস্থিত ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সুশ্রী প্রতিমা ভৌমিক, ত্রিপুরা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী শ্রী রতন লাল নাথ, ত্রিপুরা রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী সুশান্ত চৌধুরী, ত্রিপুরা বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার ও বর্তমান বিধায়ক শ্রী রেবতী মোহন দাস, ত্রিপুরা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল শ্রী সিদ্ধার্থ শংকর দে, ত্রিপুরা রাজ্যের আইন সচিব শ্রী বিশ্বজিত পালিত, ত্রিপুরা উচ্চ শিক্ষা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর অরুনোদয় সাহা, বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধের মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব শ্রী শ্যামল চৌধুরী, শ্রী স্বপন কুমার ভট্টাচার্য প্রমুখ।


অনুষ্ঠানে মৈত্রী সম্মাননা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিবারবর্গ, ইন্দো-বাংলা চেম্বারস অ্যান্ড কমার্স ইন্ড্রাস্ট্রি, ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের সভাপতি রতন সাহা, আগরতলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রণব সরকার, দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক প্রদীপ দত্ত ভৌমিক এবং স্যান্দন পত্রিকায় পরিচালক অভিষেক দে উপস্থিত ছিলেন।



বেলা ১১টা ১ মিনিটে নীরবতা পালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে সম্মানিত অতিথিরা ধারাবাহিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বেলা সোয়া ১১টায় জাতির পিতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও কর্মধারার ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় শোক দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. রেজাউল হক চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতকরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
ঘৃণ্য ঘাতকরা এ সময় আরও হত্যা করে জাতির পিতার সহধর্মিনী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তিন পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, ১০ বছরের শিশু পুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, একমাত্র সহোদর বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, কৃষক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, যুবনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বেবি সেরনিয়াবাত, আরিফ সেরনিয়াবাত, সাংবাদিক শহীদ সেরনিয়াবাত, সুকান্ত বাবু, আবু নাঈম খানসহ পরিবারের ১৮ সদস্যকে। জাতীয় শোক দিবসে তিনি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদকে এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। সহকারী হাইকমিশনার ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করেন। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক ও অভিন্ন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু থাকবেন ইতিহাসের মহানায়ক হয়ে। এছাড়া সহকারী হাইকমিশনার ভারতের মহান স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সমগ্র ভারতবাসী তথা ত্রিপুরাবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে ভারত সরকারের গৃহীত সব উদ্যোগের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ তার সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়িত করা হয়।

৩য় পর্ব 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সহকারী হাইকমিশন আগরতলার অন্বেষা শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রের শতাধিক অনাথ শিশুদের মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করে।





জাতির পিতার সংগ্রামী ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক অনাথ শিশুদের মাঝে তুলে ধরা হয়। জাতীয় শোক দিবস পালন অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থানীয় নেতা, রাজ্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিক, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সিভিল সোসাইটির গণ্যমান্য ব্যক্তি, ব্যবসায়িক নেতা এবং আগরতলা মিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ ত্রিপুরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার উপস্থিত ছিলেন।


আরশিকথা হাইলাইটস

১৫ই আগস্ট, ২০২২
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.