Type Here to Get Search Results !

শেখ রাসেল দিবসে আগরতলা দূতালয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজন

প্রভাষ চৌধুরী, বাংলাদেশ ডেস্ক, আরশিকথাঃ

ভিন্নরকম আয়োজনে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন ও শেখ রাসেল দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানী শহরের কুঞ্জবনে বাংলাদেশ দূতালয় প্রাঙ্গণ, আগরতলা স্থিত  আরশি কথা নিউজপোর্টালের কার্যালয় এবং অন্বেষা শিশু সুরক্ষা কেন্দ্রে রাসেল দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়।


জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে  ‘শেখ রাসেল দিবস’ উদযাপনে দিনব্যাপী  অনুষ্ঠানমালা তিন পর্বে ভাগ করা হয়।



প্রথম পর্ব 

সকাল ১০টায় বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন প্রাঙ্গণে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ১০টা ৫ মিনিটে শেখ রাসেলসহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শাহাদাৎ বরণকারী সব সদস্যের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে রাসেল দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বাণী পাঠ করা হয়। 


দ্বিতীয় পর্ব

দুপুর ১২টায় ত্রিপুরার জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল আরশি কথার বনমালীপুরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজ্যের তিনটি শিশু আশ্রমের (যথাক্রমে ত্রিপুরার আড়ালিয়ার ‘শ্রী অরবিন্দ শ্রী মা আশ্রম ট্রাস্ট’,  খোয়াইয়ের ‘উৎসর্গ সামাজিক সংস্থা’, আমতলীর ‘নবপ্রান্তিক’) সুবিধা বঞ্চিত/অনাথ/প্রতিবন্ধী  শিশুদের উপস্থিতিতে শেখ রাসেলের নির্মলতা, প্রাণবন্ত ও নির্ভীক জীবনের ওপরে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।






দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়, দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আরশি কথা নিউজেপোর্টালের প্রধান সম্পাদক শান্তনু শর্মা ভট্টাচার্য।





এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. রেজাউল হক চৌধুরী, প্রথম সচিব মো. আল আমীন, স্থানীয় কাউন্সেলর ও ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসেফর ড. অলক ভট্টাচার্য ও রাজ্যের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. সত্যজিৎ চক্রবর্তী। 




অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য দেন ত্রিপুরার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আশিষ কুমার বৈদ্য। অনুষ্ঠান শেষে তিনটি অনাথ আশ্রমের দুই শতাধিক শিশুর মাঝে উন্নতমানের খাবার, শিক্ষাসামগ্রী ও রেশন বিতরণ করা হয়। 


৩য় পর্ব 

বিকেল ৫টায় শেখ রাসেল দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘অন্বেষা শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র’র শতাধিক অনাথ  শিশুর উপস্থিতিতে শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ বিষয়ক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 



বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে অনাথ শিশুদের নিয়ে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়, সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে শেখ রাসেলের ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যসহ অনুষ্ঠানের তাৎপর্য তুলে ধরেন ত্রিপুরা ভলান্টারী হেল্থ অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ডা. শ্রীলেখা রায়। সেখানে আরও বক্তব্য রাখেন সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ, প্রথম সচিব মো. আল আমীন। 

সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মাদ তার বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদকে। 

তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন জাতির পিতার অত্যন্ত প্রিয় লেখক ছিলেন খ্যাতনামা দার্শনিক ও নোবেলজয়ী লেখক বার্ট্রান্ড রাসেল। তাই বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শখ করে তাদের আদরের ছোট ছেলের নাম রেখেছিলেন ‘রাসেল’। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এই নিষ্পাপ শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘৃণিত খুনিরা। এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবার ও তার আদর্শকে। কিন্তু খুনিদের সে স্বপ্ন ধূলিসাৎকরে আজ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে এবং শেখ রাসেল আজ বিশ্বে অধিকার বঞ্চিত শিশুদের প্রতীক  ও মানবিকসত্তা হিসেবে বেঁচে আছে সবার মাঝে। 

বিকেল ৫টা



৪৫ মিনিটে অনাথ শিশুদের মাঝে পরিধেয় বস্ত্র বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যা ৬টায় শেখ রাসেলের জন্মদিন  উপলক্ষে কেক কাটা হয়। এরপর সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ‘অন্বেষা শিশু সুরক্ষা কেন্দ্র’র অনাথ শিশুদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনাথ শিশুরা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের পাশাপাশি বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। যা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অনাথ শিশুদের মাঝে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন অত্র মিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান  মো. রেজাউল হক চৌধুরী। দিনব্যাপী কর্মসূচিতে সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, সিভিল সোসাইটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং আগরতলা মিশনে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট অনাথ আশ্রমের শিশুরা উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠান পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন মিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. রেজাউল হক চৌধুরী।


আরশিকথা বাংলাদেশ 

১৮ই অক্টোবর ২০২২

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.