Type Here to Get Search Results !

সুখস্মৃতির নিউইয়র্ক ভ্রমণ ঃ স্বাগতা ভট্টাচার্য, কানাডা

।। নিউইয়র্ক টাইমস্কোয়ার ।।


আমার ভ্রমন পিপাসু মন প্রায় সময়ই  আপন মনে  গুনগুন করে বলে ইস! আমি যদি পুরো পৃথিবীর জায়গা গুলো ঘুরে ঘুরে বেড়াতাম দু চোখ মেলে প্রাণ ভরে দেখতে পারতাম তাহলে ঐ আত্মতুষ্টির  বোধজ্ঞানে আমি হয়তো সব পেয়েছির বৈভবে বিত্তশালী হতাম। তা যাইহোক একটা নির্দিষ্ট সীমায় বেঁধে রাখা জীবনে এ ভাবনা বাতুলতা মাত্র।

তবুও বাঁধা হীন মনে চাওয়ার তো শেষ নেই ।মনকে শান্ত আর নয়নকে সার্থক করার উদ্দেশ্যে প্রায় সময়ই আমি আমার বর আর পুত্র ভ্রমণের উদ্দেশ্যে অনেক দূর দূরান্তে পাড়ি দেই। ভ্রমণের অসীম আনন্দকে মনে এঁটে রেখে জীবন পথে এগিয়ে চলি আবার নতুনের সন্ধানে। এবার আমরা প্ল্যান করলাম বিশ্বের রাজধানী বলে খ্যাত আমেরিকার নিউইয়র্কে যাব। কয়েক বছর আগেও ওখানে গিয়েছিলাম।
নিউইয়র্ককে মনে হয়েছিল দিগন্ত ব্যাপি বড় বড় আকাশ চুম্বি অট্টালিকার সমুদ্র কোথায় শুরু কোথায় শেষ  বোঝার উপায় নেই। সেবার সন্ধ্যা বেলায় নিউইয়র্ক টাইমস্কোয়ার এ যাওয়া হয়ে উঠেনি ।মায়া নগরীর রাতের সৌন্দর্যের গল্প অনেক শুনেছিলাম।ঐ সৌন্দর্য উপভোগ করবো বলে ব্যাগ গুছিয়ে  আমরা তিনজন মহানন্দে বেড়িয়ে পড়লাম।

ডেট্রয়েট, ক্লীভল্যান্ড ,আ্যটলান্টিক সিটি হয়ে আমার দিদির বাড়ী  জার্সি সিটিতে গেলাম। পরদিন সন্ধ্যায় জামাইবাবুর সাথে আমরা সাবওয়ে দিয়ে কুড়ি মিনিটেই পৌঁছে গেলাম মায়া নগরী নিউইয়র্কের আকর্ষণী মূল কেন্দ্রবিন্দু টাইম স্কোয়ারে। পৌঁছে আমি হতবাক।উচ্ছ্বাসিত জন সমুদ্র আমি আমার জীবনে ও দেখিনি।সে দিন বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান ও ছিল না। বিস্তৃত এলাকা জুড়ে গগন ছোঁওয়া বিল্ডিং গুলিতে বিভিন্ন রঙের উজ্জ্বল আলোকে বিশাল বিশাল স্ক্রীনে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন,নাচ ,গান ,ইংলিশ ড্রামা হচ্ছিল আবার একই সাথে ওপেন নাচ গান আরও কত কি  হচ্ছিল ! কোনটা দেখব কোনটা না।সে এক চোখ ধাঁধানো অবস্থা। এই অভিজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করা যায়না। রাস্তায় রাস্তায় খোলা খাবারের দোকান ,ক....ত যে বিভিন্ন ধরনের মনিহারি দোকান  এর যেন শেষ নেই।আলোময় পথে এতো ভীড়ের মাঝে আবার আমাদের দেশের মতো রিক্সাও চলছিল। ক্ষণে ক্ষণে জন সমুদ্রে হারিয়ে  যাওয়ার ভয়। জিজ্ঞেস করে জানতে পারি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে র পর্যটক  রাতের সৌন্দর্য দেখতে এখানে আসেন  আমাদের মতো। বিদেশের বড় বড় সিটিতে অনেক বেড়িয়েছি কিন্তু এখানের এই দৃশ্যাবলী অতুলনীয় ।ভ্রমন বিলাসীরা কেন এখানে আসেন মনে মনে উত্তর ও পেয়ে গেলাম। বিশ্বজনে আমি  যেন আনন্দ সাগরে ডুব দিয়েছি।ফেরার পালায় আমার মনে হচ্ছিল 

খুশীর জোয়ারে ভাসছে ভুবন,

জন অরন্যের কোলাহলে উদ্বেলিত প্রাণের স্পন্দন,

আজ যেন দুঃখ বিষাদের বিদায় ক্ষণ।

অপূর্ব এ চিত্র গাঁথা চির দেদিপ্যমান  হয়ে থাকুক আমার ভ্রমন বিলাসী মনের মনিকোঠায়।



স্বাগতা ভট্টাচার্য, কানাডা

২৭শে নভেম্বর ২০২২


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.