আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে।সকাল ০৭:৩০ ঘটিকায় দূতালয় প্রাঙ্গনে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অতঃপর সহকারী হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।সকাল ০৭:৪৫ ঘটিকায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।০৮:১০ ঘটিকায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শাহাদাৎ বরণকারী সকল সদস্য সহ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও বাংলাদশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শহীদ সদস্যবৃন্দের স্মরণে নবনির্মিত অ্যালবার্ট এক্কা ওয়ার মেমোরিয়ালে সহকারী হাইকমিশনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।সকাল ১০:২০ ঘটিকায় মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অত্র মিশনের প্রথম সচিব জনাব মোঃ আল আমিন। আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধের সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব শ্যামল চৌধুরী ও স্বপন ভট্টাচার্য।
সম্মানিত বক্তাগণ উল্লেখ করেন যে, একটি অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বক্তাগণ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ও ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সহকারী হাইকমিশনার জনাব আরিফ মোহাম্মাদ তাঁর সমাপনী বক্তব্যে মহান বিজয় দিবসে স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ জাতীয় চার নেতা, ৩০ লাখ শহিদ, সম্ভ্রম হারা ২ লাখ মাবোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বতোভাবে সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন ভারতের জনগণ, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী, তৎকালীন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা অটল বিহারী বাজপেয়ী, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভারতীয় সেনাবাহিনী, ত্রিপুরার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্রলাল সিং সহ ত্রিপুরার সর্বস্তরের জনগণকে যারা নিজেদের সকল সামর্থ্য দিয়ে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে এক অনবদ্য অবদান রচনা করেছিলেন। তিনি আরও বলেন শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে রুপকল্প-২০২১ সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই অর্জন করেছে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, ইতিহাসের সর্বোচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে বিগত বছরগুলোতে, দ্রত গতিতে বাড়ছে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও রপ্তানি। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা আজ প্রান্তিক গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত।প্রতিটি গ্রামে শহরের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। সকল গৃহহীন ভূমিহীনদের জন্য ঘর তৈরী করে দেয়া হচ্ছে।শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে।৫০ বছরে মাথাপিছু আয় প্রায় ১০০ মার্কিন ডলার হতে ২৮২৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য সহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে রোল মডেল।
বেলা ১১:৩০ ঘটিকায়, বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশ হতে আগত নৃত্যদল তাদের পেশাদারি পরিবেশনার মাধ্যমে মুজিব শতবর্ষের থিম সং‘‘ তুমি বাংলার ধ্রুবতারা’’ সহ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও দেশাত্মবোধক বিভিন্ন সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরে, যা অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক - শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
১৬ই ডিসেম্বর ২০২২