রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা আরও ১২ শতাংশ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি সরকারি পেনশনারদেরও ১২ শতাংশ ডিআর বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্ধিত এই মহার্ঘভাতা ১ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে কার্যকর হবে। মঙ্গলবার সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা এই ঘোষণা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১২ শতাংশ মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ফলে রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্ত মহার্ঘভাতার পরিমাণ হবে ২০ শতাংশ। রাজ্য সরকারের ফিক্সড-পে গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ- ডি কর্মচারীরাও স্থায়ী বেতনের ১২ শতাংশ হারে মহার্ঘভাতা পাবেন। ১২ শতাংশ ডিএ / ডিআর বৃদ্ধির ফলে রাজ্যের ১ লক্ষ ৪ হাজার ৬০০ জন নিয়মিত কর্মচারি এবং প্রায় ৮০ হাজার ৮০০ জন পেনশন প্রাপক পরিবার আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন।সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সরকারি কর্মচারী ও পেনশনাদের ডিএ / ডিআর এবং ডিআরডব্লিউ, এমআরডব্লিউ, পিটিডব্লিউ ইত্যাদি কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধি করার ফলে রাজ্য সরকারের বার্ষিক ১৪৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ডেইলি রেটেড ওয়ার্কার (ডিআরডব্লিও) / মান্থলি রেটেড ওয়ার্কার (এমআরডব্লিও) / পার্ট টাইম ওয়ার্কার (পিটিডব্লিও), কন্টিনজেন্ট ইত্যাদি কর্মীদের মাসিক মুজুরী বৃদ্ধিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের মাসিক মজুরি ৫০ শতাংশের উপর বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে ডিআরডব্লিউ (গ্রুপ-সি) কর্মীদের মজুরি ৭ হাজার ২০ টাকা থেকে বেড়ে ১০ হাজার ৯২০ টাকা, ডিআরডব্লিউ (টেকনিক্যাল) কর্মীদের মুজুরি ৭ হাজার ২৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১১ হাজার ১৮০ টাকা, ডিআরডব্লিউ (গ্রুপ-ডি) কর্মীদের মজুরী ৬ হাজার ৪৫৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ১০ হাজার ১০ টাকা, স্থায়ী শ্রমিকদের মাসিক মজুরী ৬ হাজার ৭১৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ১০ হাজার ২৭০ টাকা করা হয়েছে। এমআরডব্লিউদের (গ্রুপ-ডি) মাসিক ভাতা ৭ হাজার ৩৪৪ টাকা থেকে বেড়ে ১১ হাজার ৩৮০ টাকা, প্রধান পুরোহিতদের মাসিক ভাতা ৮ হাজার ৯৪৪ টাকা বেড়ে ১২ হাজার ৯৮০ টাকা, অধিকারির মাসিক ভাতা ৮ হাজার ৬৫৪ টাকা থেকে বেড়ে ১২ হাজার ৬৯০ টাকা হয়েছে। চার ঘন্টার জন্য পার্টটাইম ওয়ার্কারদের বেতন ৫ হাজার ৯০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৯০০ টাকা, তিন ঘন্টার জন্য পার্ট টাইম ওয়ার্কারের বেতন ৫ হাজার ৬৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৬৭০ টাকা এবং দুই ঘন্টার জন্য পার্টটাইম ওয়ার্কারের মাসিক বেতন ৫ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৪৫০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও ভিলেজ চৌকিদারের মাসিক বেতন ৬ হাজার ৭০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার ১০০ টাকা, স্কুল মাদারের মাসিক বেতন ৪ হাজার ৮৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ হাজার ৪৫০ টাকা, পুরোহিত / চন্দ্রাই / প্রধান চণ্ডিপাঠক / পূজারি / পাচকদের মাসিক ভাতা ৬ হাজার ৯৯০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার ৫০০ টাকা, তাল্লুয়া / মালি / গার্ড / সিঙ্গার / সুইপার / গার্ডেনারদের মাসিক মজুরী ৫ হাজার ৯৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯ হাজার ১৪০ টাকা, অ্যাডান্ট লিটেরেসি টিচারদের মাসিক বেতন ৪ হাজার ১৮১ টাকা ৬০পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬৪২০ টাকা, পার্টটাইম ইনস্ট্রাক্টরদের মাসিক মজুরি ৪০৭১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার ৩১০ টাকা এবং কমিউনিটি হেলথ গাইডদের মাসিক বেতন ৪ হাজার ৭১ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার ৩১০ টাকা করা হয়েছে। মাসিক মজুরী বৃদ্ধির ফলে ডি আর ডব্লিউ, এম আর ডব্লিউ, পি টি ডব্লিউ সহ ৮৬০০ জনের উপর কর্মী উপকৃত হবেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমান রাজ্য সরকার ২০১৮ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর সরকারি কর্মচারিদের পে স্কেল সংশোধন করেছে। এরপর ৮ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করা হয়েছিল। সরকারের আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আজ সরকারি কর্মচারিদের ১২ শতাংশ মহার্ঘভাতার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।সাংবাদিক সম্মেলনে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মন বলেন, সরকারি কর্মচারি সহ বিভিন্ন স্তরের সুবিধাভোগীদের সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করাই হচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকারের লক্ষ্য। আজকের এই ঘোষণার মাধ্যমেই সরকারের লক্ষ্য প্রমাণিত হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা এবং অর্থদপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে উপস্থিত ছিলেন।আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ
২৭ ডিসেম্বর ২০২২