ছোট্ট রাজ্য হলেও ত্রিপুরাতে রয়েছে পর্যটন শিল্প বিকাশের অফুরন্ত সম্ভাবনা। বর্তমান সরকার প্রথম থেকেই পর্যটন শিল্পকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। ছবিমুড়া, নারেকলকুঞ্জ, ঊনকোটি, নীরমহল সহ রাজ্যের প্রত্যেকটি পর্যটন কেন্দ্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর রয়েছে। এসকল স্পটগুলিকে আন্তর্জাতিক পর্যটন স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এতে পর্যটকদের আকর্ষন বৃদ্ধি করা যাবে। আয় বাড়বে রাজ্যের। বন দপ্তরের উদ্যোগে রবিবার আগরতলার হেরিটেজ পার্কে আয়োজিত প্রজাপতি উৎসব ২০২২'র উদ্বোধন করে একথা বলেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
বন দপ্তরের উদ্যোগে প্রজাপতি উৎসব এবছর নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হল। গতবছর থেকে এই ব্যতিক্রমী উৎসব শুরু হয়েছিল। এদিন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীসহ অন্যান্য অতিথিরা মুক্ত আকাশে প্রজাপতি উড়িয়ে দিয়ে উৎসবের জৌলুস বাড়িয়ে তুলেন। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী আরও বলেন, মানুষকে আনন্দ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় রাজ্য সরকারের দপ্তরগুলি নানা উৎসবের আয়োজন করে থাকে। অজানাকে জানা এবং অচেনাকে চেনার ইচ্ছা সকল মানুষের মধ্যে রয়েছে। বাটারফ্লাই ফেস্টিভ্যাল বা প্রজাপতি উৎসবে কি হবে সেটা জানার ইচ্ছা সকলের মনে জাগবে। অন্যান্য দপ্তরের মতো বন দপ্তরও নিজেদের কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি করে থাকে।অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী বলেন, প্রজাপতিদের আয়ুকাল অত্যন্ত কম। মাত্র ১৫ দিন থেকে প্রায় ৩০ দিন পর্যন্ত বাঁচে তারা। কিন্তু এই স্বল্প সময়েও প্রজাপতি মানুষকে আনন্দ দিয়ে যায়। পরিবেশের ইকো সিস্টেমকে সুন্দর করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় তারা। এভাবে সমাজকে সুন্দর করে তুলতে মানুষকেও বিশেষ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। প্রজাপতিদের থেকে মানুষের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজকে সুন্দর ও নির্মল করে তুলতে প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যের জন্য, দেশের জন্য এবং সমাজের জন্য কিছু করার মানসিকতা থাকতে হবে সকলের। কাউকে বাদ দিয়ে সমাজকে সুন্দর করা যাবে না, দেশকে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। এজন্য সকলের মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তবেই এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত, এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানে পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা সরকার দেব বলেন, প্রজাপতি উৎসবের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। প্রকৃতিকে রক্ষার প্রশ্নে বিশাল ভূমিকা রয়েছে প্রজাপতির। তাই সকলের কাছে একটাই বার্তা থাকবে পশু-পাখি, বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসুন। অনুষ্ঠানে বন দপ্তরের প্রধান সচিব কে এস শেঠি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের আয়তন ছোট হলেও এখানে বন্যপ্রাণী এবং জৈব বৈচিত্র্যের অভাব নেই। ত্রিপুরাতে প্রায় ২৫০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে। রঙ-বেরঙের এসকল প্রজাপতি শিশু থেকে শুরু করে সবার কাছে প্রিয়। তাই বন দপ্তর চেষ্টা করছে প্রজাপতির সংখ্যা বাড়িয়ে রাজ্যের পর্যটন শিল্পকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে। অনুষ্ঠানে বন দপ্তরের পিসিসিএফ ড. অভিনাশ কনফাডে বলেন, মানুষের মধ্যে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পশু-পাখিরদের নিয়ে উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে অমরপুরে গজরাজ ফেস্টিভ্যাল, তৃষ্ণা অভয়ারণ্যে বাইসন ফেস্টিভ্যাল সহ আরও অন্যান্য উৎসব করা হবে। এর অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে পশু- পাখি, গাছপালা তদুপরি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। এদিন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বন দপ্তরের এপিসিসিএফ আরকে শামল, সিসিএফ ড. শশী কুমার, ডিএফও জয়কৃষ্ণান ভিকে প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রজাপতি নৃত্য, মামিতা নৃত্য সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
ছবিঃ সংগৃহীত
৪ঠা ডিসেম্বর ২০২২