Type Here to Get Search Results !

এইডস নিয়ে সচেতনতা মূলক কর্মশালা ঃ আরশিকথা ত্রিপুরা

বিশেষ প্রতিনিধি, আগরতলা, আরশিকথাঃ


এইচআইভি বা এইডসের মারণ থাবায় আজ বিভিন্ন বয়সের সাথে নবীন প্রজন্মও কাবু হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই মারণব্যাধির বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি অতি আবশ্যিক হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তাই, শুক্রবার আগরতলায় সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের নিয়ে এইডস নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এক কর্মশালার আয়োজন হয়। এই কর্মশালায় সমস্বরে আওয়াজ উঠেছে, ওই মারণব্যাধিকে প্রতিহত করতেই হবে।আগরতলার সুকান্ত একাডেমিতে আয়োজিত এই কর্মশালার উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরা এইডস কন্ট্রোল সোসাইটি সহ ত্রিপুরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এবং ত্রিপুরা ওয়েব মিডিয়া ফোরাম। 

এদিন এই কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডক্টর সঞ্জিব দেববর্মা বলেন, শিরাপথে মাদক গ্রহণ এইচআইভি বা এইডস সংক্রমনের অন্যতম কারণ। ফলে, এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তার কথায়, এইচআইভি বা এইডস সংক্রামক ব্ নয়। এটি একটি ভাইরাস। সুস্থ দেহে ওই সংক্রমণে আক্রান্তের রক্ত সঞ্চালনে, সংক্রমিতের ব্যবহৃত সূঁচ কিংবা সিরিঞ্জ ব্যবহারে, আক্রান্তের অঙ্গ প্রতিস্থাপনে এবং সংক্রমিতের সাথে অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কের ফলে এই রোগ ছড়ায়। এছাড়া, ওই সংক্রমণে আক্রান্ত মায়ের দেহ  থেকে সদ্যোজাত সন্তানের দেহেও ওই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। তাই, এই সমস্ত ঝুঁকি এড়িয়ে নিজেকে সুস্থ এবং সুরক্ষিত রাখতে জনগণকে সচেতন থাকতে হবে, দৃঢ়তার সাথে বলেন তিনি।

এদিন স্বাস্থ্য অধিকর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, শিরাপথে মাদক গ্রহণে বহু মানুষ এইচআইভি বা এইডস রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই ব্যাধি মানুষের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে যারা এই রোগে আক্রান্ত হন তাদের পরিণতি ভয়াবহ হয়। তাই এই রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে সচেতন থাকতে হবে। সাথে তিনি যোগ করেন,এইডস সংক্রমণ থেকে শিশুদের রক্ষা করার তাগিদে মায়েদের বিশেষভাবে সচেতন করতে হবে। 

পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দফতরের অধিকর্তা ডক্টর অঞ্জন দাসও বলেন, রাজ্যে এইচআইভি সংক্রমণ রোধে জনগণকে সচেতন হতে হবে। তার বক্তব্য, ওই সংক্রমন রোধে স্বাস্থ্য দপ্তর এবং এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে। স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনে সংক্রমন রোধে ইতিমধ্যে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তিনি এই সংক্রমনের অন্যতম কারণ হিসেবে শিরাপথে মাদক গ্রহণকেই দায়ী করেছেন। তার উদ্বেগ, সিরিঞ্জ দিয়ে ড্রাগস গ্রহণের মাধ্যমে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি জানিয়েছেন, এই রোগের লক্ষণগুলি হল, জ্বর, ফ্যারিঞ্জাইটিস, ফুসকুড়ি, মায়ালজিয়া, অস্বস্তি, মুখ এবং খাদ্যনালীতে ঘা, মাথাব্যথা, বমি ভাব এবং বমি, ক্লান্তি, বর্ধিত লিভার, ওজন বৃদ্ধি, থ্রাশ, রাতের ঘাম এবং ডায়রিয়া। তিনি বলেন, এইচআইভি সংক্রমণের বিষয়ে জানতে হলে ১০৯৭ টোল ফ্রি নম্বর দেওয়া আছে। জনগণ সেখানে যোগাযোগ করতে পারেন। এদিন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্যে সচেতনতার অভাবে দিনে দিনেই এইচআইভি সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা দেশে এই সংক্রমণের লিঙ্গ বৈষম্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে। তাই এই মারণব্যাধি মোকাবিলায় আদর্শ টিকাকরণ হিসেবে শিক্ষাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, এইচআইভি সংক্রমণ প্রতিরোধে সংবাদ মাধ্যমের বিকল্প নেই। এদিন এই কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন  এইডস কন্ট্রোল সোসাইটির প্রজেক্ট ডিরেক্টর ডক্টর সমর্পিতা দত্ত সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকগণ। এই কর্মশালায় দ্বিতীয় পর্যায়ে এই মারণব্যাধি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এই সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সাংবাদিকতার নানান পন্থা পদ্ধতি নিয়েও বিশেজ্ঞরা মূল্যবান বক্তব্য রেখেছেন।


ছবিঃ সংগৃহীত


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
৫ই জুলাই ২০২৪

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.