Type Here to Get Search Results !

ডেন্টাল সার্জনদের রাজ্যভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, রাজ্য সরকারের কাজের অগ্রাধিকারের প্রথম ক্ষেত্র শিক্ষা ও স্বাস্থ্য : মুখ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি, আগরতলা, আরশিকথাঃ


বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই জিবি হাসপাতালে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হতে যাচ্ছে।প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ফলে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত। কিন্তু একাংশের চোখে এই উন্নয়ন পড়ছে না। এমনকি সরকারের সৎ উদ্দেশ্য বানচালে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল তারা।ডেন্টাল কলেজে ফ্যাকাল্টি নেই বলে প্রধানমন্ত্রীর দরবারে চিঠি পেশ করেছিল । কিন্তু সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আগেই পেশ করা হয়েছে। ফলে এই অপচেষ্টা তাদের ব্যর্থ হয়েছে।  শনিবার আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে আয়োজিত রাজ্যে কর্মরত ডেন্টাল সার্জনদের রাজ্যভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা একথা বলেন। 

শনিবার আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে আয়োজিত রাজ্যে কর্মরত ডেন্টাল সার্জনদের রাজ্যভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রীর ডক্টর মানিক সাহা। তাছাড়া এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা স্টেট ডেন্টাল কাউন্সিল, আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজ এবং আইজিএম হাসপাতালের ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজে ই-সঞ্জীবনির মাধ্যমে টেলি মেডিসিন পরিষেবারও আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী টেলি পরিষেবার মাধ্যমে চিকিৎসক এবং রোগীর সাথে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। পরে অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কাজের মাধ্যমে মানুষের পরিচয়। তাই যে যে জায়গায় চিকিৎসকগণ বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন সেখানে সর্বোচ্চ পেশাগত দায়িত্ব নিয়ে কাজ করা আবশ্যক। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যের দন্ত চিকিৎসা পরিষেবায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। পরিকাঠামোর দিক থেকে আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজ অতুলনীয়। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যারা আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজ পরির্দশন করেছেন তারা এই কলেজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এই কলেজটি যাতে আগামীদিনে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সেরা কলেজ হিসেবে গড়ে উঠে সেদিকে লক্ষ্য রেখে সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী আহবান জানান। তিনি বলেন, আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজে টেলি মেডিসিন পরিষেবা চালু হওয়ার ফলে রোগীরা এখন সহজেই চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন। এই কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নে ডোনার মন্ত্রক ২০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তবে এই কলেজ স্থাপনে রাজ্য সরকারকে নানা বাধার সম্মুখীনও হতে হয়েছিল  কিন্তু সরকারের দৃঢ় মনোভাব ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় রাজ্যে এই কলেজ স্থাপন সম্ভব হয়েছে।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যে ডেন্টাল কাউন্সিল গঠিত হয়েছে। আগামীদিনে বিডিএস পড়ার জন্য রাজ্যের বাইরে যেতে হবে না। পাশাপাশি এমডিএস-এর জন্যও পড়ুয়দের যাতে বাইরে যেতে না হয় তার জন্যও সরকার উদ্যোগী হয়েছে। তিনি বলেন, আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ৯টি সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা পরিকাঠামোর উন্নয়নে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারত- প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার মতো মুখ্যমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনা চালু করেছে। আয়ুষ্মান ভারত- প্রধানমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনায় বাদ পড়া এমন ৪ লক্ষাধিক পরিবারকে মুখ্যমন্ত্রী জনআরোগ্য যোজনার আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। জিবি হাসপাতাল সহ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলিতে এই প্রকল্পে সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। টিএমসি এবং আইএলএস হাসপাতালেও এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ত্রিপুরা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ত্রিপুরার উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গির ফলে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে বিভিন্ন প্রতিকূলতা থাকা সত্বেও সরকার রাজ্যের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর। নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সরকার ডিজিট্যাল ব্যবস্থাপনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। রাজ্যে ই- বিধানসভা, ই-ক্যাবিনেট, রাজ্যের সমস্ত দপ্তরে ই-ফাইল ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে। জেলা, মহকুমা, ব্লক অফিসগুলিতেও ই-ফাইল ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে। রাজ্যের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতগুলিতেও এধরনের ই-ব্যবস্থাপনা চালু করা হয়েছে, যা দেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন বিনিয়োগকারীরাও রাজ্যে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।এদিনের এই অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ব্রাহ্মিত কৌর, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা প্রফেসর ডক্টর সঞ্জীব দেববর্মা, আগরতলা সরকারি ডেন্টাল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডক্টর শালু রায়, ত্রিপুরা স্টেট ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি ডক্টর সমীর রঞ্জন দত্ত চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ওরাল হেলথ প্রোগ্রামের স্টেট নোডাল অফিসার তথা উপঅধিকর্তা ডক্টর  অনিল আচার্য্য। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়াশনের ত্রিপুরা শাখার সেক্রেটারি ডক্টর সুজিত রায়। অনুষ্ঠানে এছাড়াও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ত্রিপুরা শাখার মিশন ডিরেক্টর রাজীব দত্ত, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ অঞ্জন দাস, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকারের অধিকর্তা প্রফেসর ডক্টর এইচপি শর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


ছবিঃ সংগৃহীত


আরশিকথা ত্রিপুরা সংবাদ
৬ই জুলাই ২০২৪

 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.