নিজস্ব প্রতিনিধি,
কৈলাসহর মহকুমার মনু নদীর বাঁধ সংস্কার কাজের গতি ও গুনগতমান নিয়ে প্রশ্ন
তুললেন স্থানীয় বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গাইডলাইন মেনে কাজ
হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দীর্ঘ প্রায়
৪৫ বছর ধরে কৈলাসহরের বিভিন্ন এলাকায় মনু নদীর পাড়ের বাঁধের কোন ধরনের সংস্কার কাজ না হওয়ায় বাঁধ বিপদজনক হয়ে পড়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে কৈলাসহরবাসীরা বাঁধ সংস্কারের
দাবী জানানোর পর অবশেষে এক মাস আগে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়। বাঁধ সংস্কারের পাশাপাশি
বাঁধের প্রস্থ বাড়ানো হচ্ছে এবং উচ্চতা আরও পাঁচ ফুট বাড়ানো হচ্ছে। কৈলাসহরের কাউলিকুড়া,
সোনামুখি, গৌরনগর, কামরাংগা বাড়ি, ছনতৈল, দূর্গাপুর, সোনামারা, কিনাইরছড়, গোবিন্দপুর,
সফরিকান্দি ও লাটিয়াপুড়া ইত্যাদি এলাকায় মনু নদীর পাড়ের বাঁধ প্রায় চল্লিশ কোটি টাকা
ব্যয়ে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শুরুর প্রথম থেকেই কাজে দুর্নীতি শুরু হয়েছে বলে
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করে আসছিল। গ্রামবাসীরা স্থানীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ
ইঞ্জিনিয়ারের কাছে লিখিত এবং মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানানোর পরও দপ্তরের পক্ষ থেকে কোন
ধরনের কার্যকরী ভুমিকা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাই দপ্তরের উপর আস্থা হারিয়ে অনেকে
স্থানীয় বিধায়ক বিরজিত সিনহার দারস্থ হয়েছিলেন। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে মঙ্গলবার
বিধায়ক বিরজিত সিনহার নেতৃত্বে পাঁচজনের এক প্রতিনিধি দল মনু নদীর পাড়ের বাঁধ সংস্কারের
কাজ পরিদর্শন করতে যান। প্রতিনিধি দলে বিধায়ক বিরজিত সিনহার সাথে ছিলেন গৌরনগর পঞ্চায়েত
সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান মহম্মদ বদরুজ্জামান, গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নুমান আলী
ও কংগ্রেস নেতা চন্দ্রশেখর সিনহা। উনারা কৈলাসহর
শহরের দূর্গাপুর, সোনামারা, পূর্ব দূর্গাপুর, কামরাঙ্গা বাড়ি এলাকায় মনু নদীর পাড়ের
বাঁধ সংস্কারের কাজ পরিদর্শন করেন। কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায় প্রতিনিধি
দলের। পুরনো বাঁধের উপর মর্জিমাফিক মাটি ফেলা হচ্ছে। ভারী মেশিন দিয়ে মাটি ভাইব্রেটিং
বা মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে না। কাজের ওয়ার্ক অর্ডারে বাঁধ পাঁচ ফুট বাড়ানোর কথা থাকলেও
কোথাও এক ফুট বা কোথাও হাফ ফুট বাড়ানো হচ্ছে। তাছাড়া বাঁধের প্রস্থতা বাড়ানোর কথা থাকলেও
প্রস্থতা বাড়ানো হচ্ছে না। কাজ চলছে খুবই ধীর গতিতে। তাছাড়া বাঁধের উপর কাজের সময় দপ্তরের
পক্ষ থেকে কোনো আধিকারিক কিংবা দপ্তরের কেউ উপস্থিত থাকেন না। যার ফলে, দপ্তরের কেউ
তদারকিতে না থাকায় এজেন্সি তাদের মর্জিমাফিক কাজ করছে। বিধায়ক বিরজিত সিনহা অভিযোগ
করেন যে, মনু নদীর পাড়ের বাঁধ সংস্কারের কাজ এতটাই নিম্নমানের হচ্ছে যে, সামান্য বন্যা
হলেই বাঁধ আবার ভাঙ্গবে। বিশেষ করে,২০১৮ সালে কৈলাসহরের বিমানবন্দরের দক্ষিন অংশে মনু
নদীর পাড়ের বাঁধ ভেঙ্গে যেভাবে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল, সেই জায়গায় বাঁধের কাজ দপ্তরের
গাইড লাইন না মেনে একেবারেই যাচ্ছেতাই কাজ হচ্ছে। তাই আসন্ন বর্ষায় বিমান বন্দরের দক্ষিন
অংশে আবারও বাঁধ ভাঙ্গবে বলে আশংকা প্রকাশ করেন বিধায়ক।
Akb tv news
20.05.2025