আবু আলী, ঢাকা ॥
বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি ছাড়া অন্য কেউ ঢুকলে তাদের বিদায় করে দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পবিরহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভারতের এনআরসি বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। এই আইন পাস তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সরকার তাদের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো টানাপোড়েন চায় না।’ এ ছাড়া ভারতের লোকসভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হওয়ার আলোচনাকে ‘অযাচিত’ বলেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ। ভারতের সংসদে এমন কথা ওঠার পরেও তার প্রতিবাদ করা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য।
১৫ ডিসেম্বর রবিবার বিদেশ মন্ত্রণালয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. মোমেন বলেন, আমরা ভারতকে বলেছি, আমাদের কোনো অবৈধ লোক তোমাদের দেশে থাকলে স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিউরের (যথার্থ প্রক্রিয়ায়) মাধ্যমে তাদের ফেরত পাঠাও।
সম্প্রতি কথিত অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে ভারতের আসামে নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশ এবং কেন্দ্রীয় সংসদে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাসের পর দেশটি থেকে সীমান্ত দিয়ে অনেকে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে বলে খবর বেরিয়েছে সংবাদমাধ্যমে।
এনআরসি প্রকাশের বিষয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, ভারতের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন নই। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাছাড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দেশটির কোনো কোনো নেতা বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন। আমরা সেসব বক্তব্য আমলে নিচ্ছি না। কারণ, সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বর গৌরবের মাস। এ মাসে আমার ভারত সফরে যাওয়ার সময় প্রতিমন্ত্রী-সচিব বিদেশে অবস্থান করছেন। সে কারণে সফর বাতিল করা হয়েছে। তবে এজন্য দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না।
এদিকে, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সভায় ক্ষমতাসীন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এনআরসির বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ভারত আমাদের প্রতিবেশী। ভারতের পার্লামেন্টে যে আইন পাস হয়, সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, সে ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভারতের হাইকমিশনারের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখছে। যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজে নেবো। ভারতের সঙ্গে আমাদের বাইলেটারাল রিলেশন (দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক) খুব ভালো। ইতিবাচক সম্পর্ক আছে। এ সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন সৃষ্টি হোক আমরা তা চাই না।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পবিরহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভারতের এনআরসি বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। এই আইন পাস তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সরকার তাদের সঙ্গে সম্পর্কের কোনো টানাপোড়েন চায় না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে একটা ইতিবাচক ভালো সম্পর্ক আমাদের আছে। এ সম্পর্কের কোনো টানাপোড়েন সৃষ্টি হোক-এটা আমরা চাই না। যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে আমরা পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তার সমাধান খুঁজে নিব।’ এছাড়া ভারতের লোকসভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হওয়ার আলোচনাকে ‘অযাচিত’ বলেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ। ভারতের সংসদে এমন কথা ওঠার পরেও তার প্রতিবাদ করা হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য।
১৫ই ডিসেম্বর ২০১৯