তন্ময় বনিক,আগরতলাঃ
রাজ্য সরকার বদলের পাঁচমাসের মধ্যেই জেলভরো আন্দোলন করলো সিপিএম। রাস্তায় নেমে আন্দোলনে সামিল হলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছাড়তে বাধ্য হয় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার(৯আগস্ট) আগরতলায় এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার।
মেলারমাঠ থেকে প্যারাডাইস চৌমুহনীতে আসতেই পুলিশ আন্দোলনকারীদের গতিরোধ করে। সেখানেই পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে আন্দোলনকারীরা সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি মার্গের সাইনবোর্ডটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। পুলিশের অনুরোধের পর আন্দোলনকারীরা পথ না ছাড়লে শেষপর্যন্ত জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়।
পরে বিরোধী দলনেতা বলেন, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার তাদের দেওয়া কোনও প্রতিশ্রুতি পালন করছে না । শ্রমিক, কৃষক, বেকারদের স্বার্থের কথা না ভেবে পুঁজিপতিদের স্বার্থ দেখছে। তাই গরীব শ্রমজীবী মানুষ অনাহার অর্ধাহারে থাকছে। মোদি সরকার হয় পদত্যাগ করুক নয়তো সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করুক। তারপর তারপর বিরোধী দলনেতা নিজেই বলেন, আমাদের এই আন্দোলনে কেন্দ্রের সরকার যে ক্ষমতা ছেড়ে দেবে - এমনটা নয়। সমাজের সব অংশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মোদি সরকার এখন একঘরে হয়ে পড়েছে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। রাজ্যের বিজেপি সরকারকেও এক হাত নেন। বলেন, আমরা গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে যাবো। কিন্তু শাসকদল বিরোধীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। সরকার স্বীকৃত দলীয় অফিস, শ্রমিকদের অফিস ভেঙ্গে দিচ্ছে। কোথাও জবরদখল করছে। স্বাধীন ভারতের কোথাও এমন নজির নেই। পঞ্চায়েত, নগরপঞ্চায়েত স্তরে জনপ্রতিনিধিদের মৃত্যুভয় দেখিয়ে দলবদল করাচ্ছে। বামফ্রন্টের সমর্থক যানবাহনের চালকরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারছেন না। বামফ্রন্টের বহু কর্মীসমর্থক এখনও এলাকা ছাড়া। বিরোধী দলনেতা শ্রী সরকার আগামী লোকসভা নির্বাচনে মানুষকে এর সমুচিত জবাব দেওয়ার আহ্বান জানান। এদিকে সিপিএমের পশ্চিম জেলা সম্পাদক পবিত্র কর বলেন, গান্ধীজী যেমন ইংরেজকে ভারত ছাড়োর ডাক দিয়েছিলেন তেমনি সিপিএমও বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার ডাক দিয়েছে এই জেলভরো আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। সারা দেশে গরীব শ্রমজীবী মানুষ এখন বিপর্যস্ত। বেকারদের কর্মসংস্থান নেই। কৃষকরা আত্মহত্যা করছে। তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে সমাজের সব অংশের মানুষকে তাদের নিজেদের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ লড়াই আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এদিনের এই জেলভরো আন্দোলনে বিশিষ্টদের মধ্যে ছিলেন সিটুর রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাস, রমা দাস, প্রাক্তন বিধায়ক রতন দাস, কৃষ্ণা রক্ষিত সহ অন্যান্যরা।
পশ্চিম জেলার বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দলীয় কর্মী সমর্থকরা এদিনের এই আন্দোলনে যোগ দেন।
ছবিঃ সুমিত কুমার সিংহ
৯ই আগস্ট ২০১৮ইং