সৈয়দ ইফতেখার, বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা: দীর্ঘ এক বছর পর সোমবার (১২ই আগস্ট) বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করা হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশই নয়, ভারত ও পাকিস্তানেও এ দিন ঈদ। বাঙালি সমাজে এ ঈদকে কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত।
রোববার পবিত্র হজ সম্পন্ন হয়, এরপর মাথা মুণ্ডন ও পশু কুরবানি করেন সৌদি আরবে যাওয়া হাজিরা। তার একদিন পর বাংলাদেশে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সকালে ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টলাভের আশায় পশু কোরবানি দেন। এ দিনটি ইসলামি বর্ষপুঞ্জি অনুযায়ী ১০ জিলহজ। আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের প্রত্যাশায় এদিন পশু কোরবানি করা হয়। তবে ১১ এবং ১২ জিলহজও পশু কোরবানি করার বিধান রয়েছে।
রাজধানী ঢাকা বা দেশের অন্য এলাকায় যারা জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে থাকেন, তারা অনেকেই বরাবরের মতো গ্রামের বাড়ি গেছেন। কষ্ট ভোগ করে লাখো মানুষ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে স্বজনদের কাছে ছুটে গেছেন। তবে ডেঙ্গু আতঙ্কের কারণে এবার গ্রামে মানুষ যাওয়ার ঢল অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের মধ্যেই ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঈদুল আজহার ইতিহাস
ঈদুল আজহা ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইলের (আ.) সঙ্গে সম্পর্কিত। ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে ভেবে যখন জবাই সম্পন্ন করেন, তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই ইব্রাহিমের (আ.) ওয়াজিব হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।
ঈদের শুভেচ্ছা
দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের প্রমুখ। এসব বাণীতে তারা দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশ, জাতিসহ গোটা মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও বিশ্বশান্তি কামনা করেছেন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোয় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। জাতীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করছে। ঈদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশুসদনে উন্নত বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়।
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
১১ই আগস্ট ২০১৯