আবু আলী, ঢাকা ॥
৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনসহ বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা প্রত্যাহারের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
২১ আগস্ট বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্সটার্নাল পাবলিসিটি উইংস থেকে বাংলাদেশের অবস্থান পরিষ্কার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালরে তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ মনে করে যে, ভারত সরকার সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের যে কাজটি করেছে তা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সব দেশেরই উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা উচিত। বাংলাদেশ সবসময়ই এ বিষয়টিকে নৈতিক সমর্থন দিয়ে এসেছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবলুপ্তির বিষয়ে ঘোষণা দেয় ভারত সরকার। এ পদক্ষেপের আগের দিন থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তখন থেকেই অঞ্চলটিতে ১৪৪ ধারা বা কারফিউসহ ইন্টারনেট ও টেলিযোগযোগাযোগের ওপর নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
অক্টোবরে ভারত যাচ্ছেন হাসিনা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী অক্টোবরে ভারতে দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর গণভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণ পত্র হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান এবং তাঁর শুভেচ্ছাও মোদীর নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য বলেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বিগত পাঁচ বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় আসীন হয়েছে। তিনি বলেন, এই সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা এবং সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে জয়শংকর বলেন, দুই দেশের জনগণের মধ্যে পরস্পরের দেশ ভ্রমনের ক্ষেত্রটিকে সহজ করার বিষয়ে বিশ্বাসী ভারত।
জয়শংকর এ সময় বাংলাদেশের জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে তাঁর দেশের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে জলবিদ্যুৎ খাতে কার্যকর সহযোগিতার সম্ভবনা রয়েছে, যেহেতু, এর খরচও কম।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত তাঁদের ব্যবসা এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মোংলা এবং পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারে।’ দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রসমূহ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রেল, সড়ক এবং আকাশ পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক রুট ইতোমধ্যে উন্মুক্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে চমৎকার সহযাগিতা বিদ্যমান রয়েছে। দু’টি দেশ নিজেদের অনেক সমস্যাই দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বিশেষ করে দু’দেশের মধ্যকার স্থল ও সীমানা সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘স্থল ও সীমানা চুক্তি অনুযায়ী এর সমাধান বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। ভারতের সকল রাজনৈতিক দল তাদের সংসদে স্থল ও সীমানা চুক্তি সংক্রান্ত বিলের প্রতি সর্বসম্মতভাবে সমর্থন জানায়।
২১শে আগস্ট ২০১৯