আরশি কথা

আরশি কথা

No results found
    Breaking News

    হৃদয়ের আঙ্গিনায় সেইসব দিনগুলো..." বাংলাদেশ থেকে ফারহানা তারিক এর অনুভব

    আরশি কথা
    ১৯৯৮ সাল​ ❤ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়#❤ খালেদা জিয়া হল#💙রুমঃ৩০৮#💙 অনেকটা বছর পেরিয়ে এসেছি। তারপর ও স্মৃতি গুলো এখনো সদ্য,জীবন্ত মনে হয়। 
    গতকাল আমার রুমমেট রিনা আপুর সাথে কথা হল সেও বহু বছর পর। গত রাতে বার বার সেই খালেদা জিয়া হল, ৩০৮ নম্বর রুম আর আমার রুমমেট বড় আপুদের খুব মনে পড়ছিল।
    আমাদের সময় একটাই হল ছিল তাই ভর্তির সময় ও ওই হলেই এ্যাটাসড হতে হোত। আমি ছিলাম রাজিয়া আপুর গেস্ট। রাজিয়া আপু অর্থনিতির ছাত্রী, রিনা আপু আইন, কলি আপু আর সোহেলী আপু আমার সাবজেক্ট এর ছিল। এই চারজনের সাথে আমার জীবনের প্রায় দুবছর এক সাথে থাকা। রাজিয়া আপু গুরুগম্ভীর মানুষ, রিনা আপু কথা বলতো বেশ যখন তার ভালো লাগতো, কলি আপু আর সোহেলী আপু কমই রুমে থাকতো। আর আমি ছিলাম ভীষন রকমের দুষ্ট। পড়াশোনা তো করতাম ই না, সারাদিন ফাজলামো। আমার জ্বালায় আপুরা দুপুরে একটু ঘুমাতে ও পারতো না। কারন দুপুর হলে নীচ থেকে ডাক "৩০৮ সুইটি খালা আপনার ফোন, নইলে ৩০৮ সুইটি খালা আপনার গেস্ট "। তারপর বান্ধবী রা তো ছিলোই।
    যাই হোক রিনা আপুর চরিত্রের বিশেষ দিক ছিল উনি ঘরের কোন কাজ ই আস্তে করতে পারতো না। যেমন হয়তো ঘুমাচ্ছে সবাই উনি পড়তে বসবে এমন জোরে চেয়ারে টা টান দিবে বা বিস্কুট খাবে টিনটা ঠাস করে বন্ধ করবে। উনাকে কিছু বলা ও যাবে না। তাহলে ঐ কাজটাই পরবরতীতে আবার আর একটু বেশি করে করবে। আর যদি কোন দিন বলতাম আপু কাল আমার পরীক্ষা আছে একটু ভোর বেলা ডেকে দিবেন! উনি সেদিন রাত তিনটার সময় পড়তে বসবে আর ডাকবে এই সুইটি তুই যেন সকালে কখন ডাকতে বলেছিলি? মনের দুঃখে বলতাম আপু তাই বলে এত রাতে ডেকে জিজ্ঞেস করতে হবে? "খুব অবলীলায় বলে দিত কেন তোর ঘুম ভেঙে গেছে নাকি তাহলে পড়তে বয়।"আর রাজিয়া আপু তো চুপচাপ মানুষ। আমি আর আমার বান্ধবী খুব কথা বলতাম,গল্প করতাম।
    তো একদিন কনকনে শীতের রাতে আমি আর মিলকি গল্প করছি রাজিয়া আপু পানির গ্লাস নিয়ে পানি খাচ্ছে তার ফাঁকে ফাঁকে আমাদের বোঝাচ্ছে, শোন তোমরা এতকথা বলো কেন? কথা কম বলবে তাহলে দীর্ঘ দিন বাঁচবে। মিলকি আপুর কথা না শেষ হতেই বলল আপু তাহলে তো বোবারা কোনদিন মরবে না। আপু তো একথা শুনে হাসতে গিয়ে পানি টানি ফেলে একাকার।
    এসব স্মৃতি গুলো মনে পড়লে এখনো নিজের অজান্তেই হেসে ফেলি। ফেসবুকের কারনে অনেক হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষদের খুঁজে পেয়েছি। রাজিয়া আপু আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। আমি চির ঋনী আপুর কাছে। একই শহরে থাকি তারপর ও আপুর সাথে কথা হয়না, দেখা হয়না। সময় করে যেতে ও পারিনা।

    সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে নীড়ে ফেরা,গন্তব্যে একটাই অপেক্ষায় থাকা আমার সেই প্রিয় মানুষ গুলোর কাছে। রাজিয়া আপু সরি বলা ছাড়া আজ আর কিছু ই বলার নেই। ভাল থাকবেন।
    ​ 💙

    স্মৃতির দর্পণ থেকে -
    ফারহানা তারিক
    ঢাকা, বাংলাদেশ

    কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ কে,এ বিপ্লব

    ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৯
    3/related/default