Type Here to Get Search Results !

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে চায় নেপাল

আবু আলী, ঢাকা॥
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ বাড়াতে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে নেপাল।
১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গাওয়ালির সঙ্গে  বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা বলেছি যে আপনারা এটি ব্যবহার করতে পারেন। সেখানে কী ধরনের বিমান নামতে পারবে, একটি প্রযুক্তিগত দল এখন সে বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখবে। তিনি আরও বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং এ সংক্রান্ত কাজে যাবতীয় বাধা দূর করতে উভয় পক্ষই সম্মতি জানিয়েছে। এছাড়াও, নেপাল যাতে মোংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারে সে বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছেছে দুদেশ।
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ কুমার গাওয়ালি বলেছেন, শিগগিরই ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু করতে যাওয়ায় আগামী ৫-৬ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে পারে।
এরআগে ১৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মনুশির সাথে বৈঠক করেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদ্বীপ কুমার গায়ওয়ালি। বৈঠক শেষে টিপু মুনশি বলেন, নেপাল বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। নেপালের সাথে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট(এফটিএ) স্বাক্ষরের জন্য দ্রুত কাজ চলছে। আমরা উভয় দেশ এফটিএ স্বাক্ষরের জন্য একমত হয়েছি। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করেছে। উভয় দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য সড়ক, নৌ এবং আকাশ পথ চালু করার বিষয়ে কাজ চলছে। নেপাল সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে। বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে  নেপালের।
টিপু মুনশি আরও বলেন, নেপালের সাথে বাণিজ্যে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ব্যবহার করা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে উভয় দেশের বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। আগামী ৩ ও ৪ মার্চ ঢাকায় বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এফটিএ স্বাক্ষর ও উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা লাভ হবে।তিনি আরও বলেন, গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ নেপালে ৩৮.০৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ১৮.১৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশ এখন পাটজাত পণ্য, ব্যাটারি, তৈরী পোশাক, টয়লেটরিজ পণ্য, ঔষধসহ বেশ কিছু পণ্য নেপালে রপ্তানি করছে। উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। এফটিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ বাণিজ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব।
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নেপাল বাংলাদেশকে খুবই গুরুত্ব দেয়। উভয় দেশের মানুষ ও জীবনযাত্রার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, নেপাল তারপরই অবস্থান করছে। বাংলাদেশের সাথে নেপালের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং পর্যটক বিনিময়ের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা উভয় দেশ এ সুযোগ ও সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগাতে চাই। নেপাল ভারতের সহযোগিতায় হাইড্রো পাওয়ার উৎপাদন করছে, যা বাংলাদেশে রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ নেপালকে ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করেছে, এজন্য নেপাল বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্ডিয়া, নেপাল(বিবিআইএন) প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে সংশ্লিষ্ট সকল দেশ এবং দেশের মানুষ উপকৃত হবেন।  বাংলাদেশের সাথে নেপালের বাণিজ্য বৃদ্ধির টেকনিকেল বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব দিয়ে নেপাল কাজ করছে। এফটিএ স্বাক্ষরিত হলে উভয় দেশের মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক যুগের সূচনা হবে। আসন্ন সচিব পর্যায়ের বৈঠকে উভয় দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২০


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.