প্রভাষ চৌধুরী, ঢাকা ব্যুরো এডিটর:
ঢাকায় অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পাওয়া যাচ্ছে শুক্লা পঞ্চমীর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু অযুত প্রাণের নাম’ বইটি। মেলায় আগামী প্রকাশনীর স্টল থেকে সংগ্রহ করা যাবে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা এ বই। বইটির দাম ধরা হয়েছে ৫৫০ টাকা।
পাঠকদের উদ্দেশে শুক্লা পঞ্চমী বলেন, দীর্ঘ চুয়াল্লিশ বছরের লালিত যন্ত্রণা ‘বঙ্গবন্ধু অযুত প্রাণের নাম’ বইটির মাধ্যমে কিছুটা আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
১৯৭৫ সাল, আমার কাছে আরেক যুদ্ধ। মা বলতেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি নাকি মিলিটারি দেখার জন্য কান্নাকাটি করতাম। মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা আমার কাছে তখন বোধগম্য ছিল না। বাঁচার টানে পরিবারের সাথে চলে গিয়েছিলাম ওপাড়ে। বোঝাপড়ার কিছুটা যখন আয়ত্তে আসলো ঠিক তখনি আবার ভিটের টানে ফিরে আসলাম। অনুপ্রেরণা ‘বঙ্গবন্ধু’। বাংলাদেশ গড়ার নতুন স্বপ্নের ডাক দিয়েছেন তিনি। বাবা ওখানে থেকে যাবার সব পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়ে, পূর্বপুরুষের হাওড় বাড়ির পরিত্যক্ত উঠোনে ফিরে এলেন। ভাবতেও পারিনি এমন ভাঙা জীবনও মানুষের হয়। সাপখোপ আর ঝাড় জঙ্গল দুহাতে সরিয়ে আমার পরিবার পুনর্গঠিত হবার নতুন স্বপ্ন দেখল।
সৌখিন বাবা প্রতিদিন রেডিওতে খবর শুনে শুনে আন্দোলিত হতেন। নিশ্চিত ভবিষ্যতকে হাতছাড়া করে মা কিছুটা অনুতপ্ত। বাবার প্রতি আমার বেশ রাগ হতো। এমন বিজলীবাতি থেকে সরিয়ে এনে একটা ভৌতিক পরিবেশে উঠিয়েছেন। সত্যিকার অর্থে দেশের টান বলতে কিছু বুঝিনি তখনো।
১৫ আগস্ট শুক্রবার। টানা দশদিন পর স্কুলে গেলাম। দ্বীপের মতো বাড়ি গুলি। এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে নৌকার পথ। হরিকাকা (আমাদের বাড়িতে কাজ করত)আমাকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে একটু পরেই আবার নৌকা নিয়ে ফিরে এলো। মনে পড়ে সেদিনের তার তারস্বরে চিৎকারের কথা। ধারনা হয়েছিল কেউ মারা গেছে। কিন্তু না। বাড়িতে গিয়ে দেখি অদ্ভুত পরিস্থিতি। ঘরের দরজা প্রায় বন্ধ, অল্প ফাঁকা রেখে সবাই ঘরে ফিসফিস করে কথা বলছে। মায়ের কাছে জিজ্ঞেস করতেই মা হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলেন ‘বঙ্গবন্ধু আর নাই’।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শত কবিতা লিখেছি তারই কীর্তির উপর ভিত্তি করে। তার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং সহায়ক আরো বেশ কিছু বই আমার তত্ত্ব উপাত্তের সহায়ক। লিখতে লিখতে মনে হয়েছে, তাঁকে নিয়ে একশত কেন, হাজার কবিতা লিখলেও ফুরবে না।
আরশিকথা প্রচার-বিনোদন বিভাগ
২রা ফেব্রুয়ারি ২০২০
আরশিকথা প্রচার-বিনোদন বিভাগ
২রা ফেব্রুয়ারি ২০২০