স্বর্ণগ্রাম হলো শ্যাম
সুন্দর কোম্পানির দায়বদ্ধতার আর একটি নাম।স্বর্ণগ্রাম সোনা দিয়ে মোড়া কোন গ্রাম
নয়।শিক্ষায়,স্বাস্থ্যে এবং স্বরোজগারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করায় ব্রতী হওয়া একটি গ্রাম
যেখানে আমাদের রিয়াং ভাই ও বোনেরা থাকেন।এই মুহূর্তে তারা সংখ্যায় ৩০৩ জন। লক ডাউন
এবং করোনা ভাইরাসের করালগ্রাসে সারা দেশ যেখানে আক্রান্ত তার মধ্যে স্বর্ণগ্রামও
কোন ব্যতিক্রম নয়।স্বর্ণগ্রামের উপরেও অন্ধকার নেমে এসেছে কারণ এখানকার অধিবাসীদের জঙ্গল থেকে কাঠ এনে রাস্তায় বিক্রি করা থেকে শুরু করে অন্যান্য দৈনন্দিন জীবিকায় থাকা যেসব কাজ ছিলো তা সবই বর্তমানে বন্ধ হয়ে গেছে।তার ফলে তাদের রেশনে বা প্রাত্যহিক
জীবনযাত্রা নানা অসুবিধের সম্মুখীন হচ্ছে।কিন্তু সঠিক পরিকল্পনায় স্বর্ণগ্রাম এই
করোনা ভাইরাসের করালগ্রাস বা লক ডাউনকে সামলেছে।প্রসঙ্গত, স্বর্ণগ্রামের
কচিকাঁচাদের জন্য রয়েছে স্বর্ণগ্রাম শিক্ষালয় যেখানে তিন থেকে বারো বছর বয়েসের ১০৭
জন আবাসিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। যখন দেশের মধ্যে করোনার
প্রভাব ধীরে ধীরে বিস্তার লাভ করছে তখন বিপদ আন্দাজ করতে পেরে লক ডাউন হওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ আগেই সমস্ত শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।যাতে তারা
তাদের পরিবারের সঙ্গে সুস্থভাবে থাকতে পারে।ঠিক তেমনি গ্রামের সবাইকে এই করোনা
ভাইরাস বা লক ডাউন চলাকালীন কিভাবে সচেতনতার সাথে থাকতে হবে সেটাও বোঝানো হয় এবং যার ফলস্বরূপ একজনও কোভিড-১৯ নামক ভয়াবহ রোগটিতে আক্রান্ত হয়নি। এখনও অবধি স্বর্ণগ্রামে আর্থিক অসুবিধা ছাড়া
কোভিড-১৯ এর কোন প্রভাবই পড়েনি।এখানকার বাসিন্দারা প্রত্যেকে বাড়িতে থেকেই নিজেদের কাজকর্ম চালিয়ে গেছেন। যারা কোমর তাত কিংবা যারা জলাশয়ে মাছ চাষ করতেন তারা তাই করে গেছেন।যারা জঙ্গলে গিয়ে কাঠ বা অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করতেন তারাও তাই করেছেন। সবটাই করা হয়েছে সুন্দরভাবে সোশ্যাল ডিস্টান্স মেনে।অন্যান্য সময় হয়তো বা
তারা একসাথে সব কাজ করতে পছন্দ করতো। একসাথে জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলো।
কিন্তু করোনা
ভাইরাস বা লক ডাউনের ফলে তারাও অভ্যস্ত হয়ে যায় সোশ্যাল
ডিস্টেন্সিং বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দিনজাপন করা।কিন্তু আর্থিক
রোজগার কমে যাওয়ার ফলে তাদের রেশনে টান পড়ে।সরকার থেকে পাঁচ কেজি করে যেসব
রেশন পাওয়ার কথা তা সবাই পেয়েছে ঠিকই কিন্তু হয়তো বা আর একটু রেশনের দরকার
ছিলো।
সেইজন্য শ্যাম সুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্স বুধবারের(১৪ মে)এক ব্যতিক্রমী প্রয়াসে সেই রেশন এবং
বেসিক হাইজিনের জিনিষপত্রগুলি স্বর্ণগ্রামে বাস করা ৭০টি পরিবারের হাতে তুলে দেয়।সামগ্রীগুলির মধ্যে ছিলো ১০ কেজি চাল, ৩
কিলো ডাল, তিন কিলো আলু,২ কিলো পেঁয়াজ,নুন,সরিষার তেল,১ কিলো
সয়াবিন,ডিম,স্যানিটাইজার, সাবান এবং মাস্ক।
এতোটা পরিমানেই দেওয়া হয়েছে যাতে আগামী
১০/১৫ দিন চলা যায়।পাশাপাশি এই প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয় যে এরমধ্যে যদি লক ডাউন না উঠে
তখন সংস্থা আবারও সবার পাশে দাঁড়াবে।স্বর্ণগ্রাম শুধু একটি
স্বপ্ন নয়,এমন একটি স্বপ্ন যা প্রতিদিন বাস্তবায়িত হওয়ার পথে থাকছে। স্বর্ণগ্রামের প্রত্যেকটি পরিবারের তরফ থেকে যারা তাদের সুখেদুঃখে সবসময় পাশে ছিলেন তাদের সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।তারা বিশ্বাস করে যে সবাই পাশে থাকলে সমস্ত অসুবিধে একদিন দূর হয়ে নতুন সূর্য উঠবে।আবার সুন্দর দিন
আসবে।আবারও সবাই একসাথে মিলে স্বর্ণগ্রামে উৎসবের আনন্দে মেতে উঠবে।পরিশেষে শ্যাম সুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্স এর পক্ষ থেকে এই করোনাকাল কাটিয়ে ওঠার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতন থেকে সরকার প্রদত্ত বিধিনিষেধ গুলি মেনে চলার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
আরশিকথা প্রচার-বিনোদন বিভাগ থেকে প্রচারিত
১৫ই মে ২০২০