এ এক অন্য বৈশাখ। ঋতুর আবর্তনে বৃষ্টি হচ্ছে, ঝড় হচ্ছে , মানুষ খেয়ে বেঁচে আছে ---তবু এ অন্য বৈশাখ।বৃক্ষে ফল ধরেছে,পাখি গান গাইছে -- তবু এটা অন্য বৈশাখ। হা মশাই বুঝতে পারছেন না,কেন অন্য বৈশাখ?তাহলে বলি শুনুন,প্রাকৃতির নিয়ম মেনে প্রাকৃতিক কাজকর্ম হচ্ছে ঠিকই কিন্তু পৃথিবীর সমস্ত জীবদের জীবন ও জীবিকার এখন ভীষন সংকটজনক অবস্থা।দুজনের খাবার পাঁচ জন ভাগ করে খাওয়ার আয়োজন করতে হয়। মানুষ পোশাক পরছে তার লজ্জা নিবারনের জন্য,কিন্তু পোশাকে নেই কোন চাকচিক্য।কে অফিসার আর কে সাধারণ কর্মচারি তা আলাদা করে বোঝার উপায় নেই।সমবেত ভাবে সাংস্কৃতিক,সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ।শিল্পী মানুষের প্রতিভার স্ফুরণ ঘটছে ওয়েব সাইট,অনলাইন - এর মাধ্যমে ।চারদিকে মানুষ আধপেটা খাবার খেয়ে নিদ্রামগ্ন হতে বাধ্য হচ্ছে।বাঙালিদের একবছরের যে আশা,পহেলা বৈশাখ কে ঘিরে বাঙালির যে উৎসবের আয়োজন -- সব এবার ব্যর্থ। মিষ্টির দোকানে দোকানে যে ক্রেতাদের বিশাল লাইন দেখতে পাওয়া যায় ,এই বৈশাখে তা চোখে পড়েনা । বড়দের প্রনাম করার যে রীতি , তা এই বৈশাখে বাইরে গিয়ে করা সম্ভব হয়নি।অন্য জীবকুলও খাদ্য সমস্যা নিয়ে কোনরকমে বেঁচে আছে।ইচ্ছা থাকলে ও উপায় নেই যে দুই বন্ধু একসাথে গিয়ে অবলা জীবদের মুখে কিছু খাবার তুলে দিই।এই রকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে থেকেও কিছু মানুষ তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠ ভাবে পালন করে চলেছেন।তারা হলেন পুলিশ প্রশাসন,ডাক্তার,নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী,সাংবাদিক আর বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবক,বেশ কিছু সরকারী আধিকারিক।এদের সবাইকে অভিনন্দন দেবার সাথে মনে করিয়ে দিতে চাই ,কেন এবার অন্য বৈশাখ।এক করোনা নামক মহামারী ভাইরাসে দুশতাধিক দেশ আক্রান্ত,লক্ষ লক্ষ মানুষ ইহলোক ছেড়ে পরলোক গমন করেছেন।সারা বিশ্বের অর্থনীতি টালমাটাল।সামাজিক অবস্থা সুবিধাজনক নয় ।চারিদিকে ধর্ম,শিক্ষা,জাত,বর্ণ ভুলে মানুষ শুধুমাত্র মানবতার খাতিরে একত্রিত হয়ে একতার সুরে সুর মিলিয়েছে।আর আমরা বাঙালি মনে মনে এই আশা পোষণ করি -- মানবমুক্তির পথ হোক সুন্দর,করোনামুক্ত হোক গোটা বিশ্ব।
" তাপস নিঃশ্বাস বায়ে
মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে
বৎসরের আবর্জনা
দুর হয়ে যায় যাক যাক..."
দেবাশীষ মজুমদার
আশ্রাফাবাদ,অশোকনগর,
দেবাশীষ মজুমদার
আশ্রাফাবাদ,অশোকনগর,
উওর ২৪ পরগণা
ছবিঃ সৌজন্যে ইন্টারনেট
১৫ই মে ২০২০